রাজধানীর মিরপুরে জঙ্গি আস্তানায় অভিযান চালানোর ৪৮ ঘণ্টার ব্যবধানে গাজীপুর ও চট্টগ্রামের দুটি আস্তানা থেকে উদ্ধার করা হয়েছে অত্যাধুনিক রাইফেলসহ বিপুল বিস্ফোরকদ্রব্য। গাজীপুরের অভিযানে দুই জঙ্গি নিহত ও বেশ কয়েকজনকে আটকও করা হয়েছে। চট্টগ্রামের হাটহাজারীর তালাবদ্ধ জঙ্গি স্থাপনা থেকে উদ্ধার করা হয়েছে সর্বাধুনিক রাইফেল এমকে-১১ স্নাইপার, যা সাধারণত মার্কিন নৌবাহিনীই ব্যবহার করে। এটি এমনই এক মারণাস্ত্র যা স্বয়ংক্রিয়ভাবে দেড় হাজার গজ দূরের টার্গেটেও আঘাত হানতে পারে। এ অস্ত্র উদ্ধার গুরুত্বপূর্ণ সাফল্য হলেও তাক লাগিয়ে দিয়েছে জঙ্গি আস্তানা থেকে উদ্ধারকৃত কিছু দলিলপত্র; যার মধ্যে পুলিশ সদর দফতর থেকে দায়িত্বশীল কর্মকর্তাদের কাছে পাঠানো নিরাপত্তাসংক্রান্ত নির্দেশনাও রয়েছে। মার্কিন নৌবাহিনীর অস্ত্র এবং সরকারি গোপন নথি কীভাবে জঙ্গিদের কাছে পৌঁছায় তা যথাযথ তদন্তের এবং উদ্ঘাটনের দাবি রাখে। জঙ্গি আস্তানা থেকে সেনা সদস্যদের বেশ কয়েক সেট পোশাকও উদ্ধার করা হয়েছে। জঙ্গিরা সেনাবাহিনীর পোশাক পরে অভিযান চালানোরও যে প্রস্তুতি নিচ্ছে, এটি তারই প্রমাণ। এ ধরনের সম্ভাব্য অভিযান যে বিপর্যয়কর ক্ষয়ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়াতে পারে তা সহজেই অনুমেয়। জঙ্গি মোকাবিলায় সরকারের জিরো টলারেন্স নীতি থাকা সত্ত্বেও কেন কাঙ্ক্ষিত সাফল্য অর্জিত হচ্ছে না, সে সম্পর্কে স্পষ্ট ধারণা দিয়েছে হাটহাজারীর জঙ্গি স্থাপনা থেকে পাওয়া তথ্য-প্রমাণগুলো। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর মধ্যেও যে জঙ্গিবাদীরা থাবা বিস্তার করতে সক্ষম হচ্ছে স্পর্শকতার নথি তারই প্রমাণ। আমরা আশা করব এ রহস্য উদ্ঘাটনে সব কিছুই করা হবে। জঙ্গিরা সেনাবাহিনী, বিজিবি কিংবা পুলিশের পোশাক পরেও যেহেতু নাশকতায় লিপ্ত হওয়ার ষড়যন্ত্র করতে পারে সেহেতু এসব ক্ষেত্রে সর্বাধিক সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে। গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনাগুলোর নিরাপত্তা রক্ষায় ও কার্যকর সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে। জঙ্গিবাদের হুমকি মোকাবিলায় গোয়েন্দা তত্পরতাকে যেমন শক্তিশালী করতে হবে তেমন জঙ্গি অর্থায়নেও হানতে হবে আঘাত। গ্রাম শহর বন্দর সব ক্ষেত্রেই তীক্ষ নজরদারি বজায় রাখতে হবে। নিরাপত্তার ক্ষেত্রে কোনো ধরনের শৈথিল্য যাতে বাসা না বাঁধে তা-ও নিশ্চিত করতে হবে।