বুধবার, ৩০ ডিসেম্বর, ২০১৫ ০০:০০ টা

মায়ের দোয়া কবুল হওয়ার বিস্ময়কর ঘটনা

মাওলানা আবদুর রশিদ

আল্লামা আবদুর রহমান আসসুফুরীর লিখিত নজুহাতুল মাজালিস কিতাবের ২৪২ পৃষ্ঠায় এবং তাফসিরে নুরুল কোরআন ১৫তম খণ্ড ১২২ পৃষ্ঠায় এবং আল্লামা ইবনুল যাওজি (রহ), তার রচিত কিতাবুল মুনতাজির ফি তায়ারিখিল ওমাম গ্রন্থে হজরত মূসা (আ.) এর একটি ঘটনা উল্লেখ করেছেন। হজরত মূসা (আ.) আল্লাহর দরবারে তার জান্নাতের সাথীকে দেখার জন্য আরজি পেশ করেন। তখন আল্লাহপাক তাকে নির্দেশ দেন যে, অমুক শহরেও যাও একজন কসাই ব্যক্তি পাবে সে জান্নাতে তোমার সাথী হবে।

হজরত মূসা (আ.) আল্লাহপাকের প্রদত্ত নির্দেশনা মোতাবেক গমন করে একজন যুবককে দেখতে পেলেন, সে যুবক হজরত মূসা (আ.) কে বললেন আপনি কি আজ মেহমান হবেন? হজরত মূসা (আ.) বললেন হ্যাঁ। সে ব্যক্তির কাছে একটি বড় আকারের থলে ছিল যা কাঁধে নিয়ে তিনি রওনা হলেন। তারা উভয়ে বাড়িতে গিয়ে পৌঁছলেন এবং খাবার সামনে রাখা হলো। হজরত মূসা (আ.) লক্ষ করলেন, সে যুবক এক লোকমা মুখে দেওয়ার আগে দু’লোকমা থলেতে রেখে দেন। ঠিক এমন সময় কে দরজায় কড়াঘাত করল। যুবক দরজার দিকে এগিয়ে গেলেন। সে সময় হজরত মূসা (আ.) সে থলের অভ্যন্তরে দৃষ্টিপাত করে আশ্চর্যান্বিত হলেন। তিনি দেখলেন সে থলের ভিতর রয়েছে একজন বৃদ্ধ, আর একজন বৃদ্ধা।

তারা উভয়ে তার দিকে দেখে মুচকি হাসলেন এবং কালিমায়ে শাহাদাত পাঠ করে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়লেন। এরপর সে যুবক প্রত্যাবর্তন করে দেখলেন থলেটি হজরত মূসা (আ.) এর সামনে পড়ে আছে। তখন তিনি বললেন, আপনি আল্লাহর রসুল মূসা (আ.)। তিনি জিজ্ঞাসা করলেন তোমাকে এ সম্পর্কে কে খবর দিল? তিনি বললেন, এ থলেতে যে দুজন ছিলেন তারা হলেন আমার পিতা-মাতা। আমি এভাবে তাদেরকে থলেতে নিয়ে বহন করতাম এবং তাদের পানাহার করানোর আগে আমি পানাহার করতাম না। আর তারা আল্লাহপাকের দরবারে একটি দোয়া করতেন, ‘হে আল্লাহ! তোমার নবী মূসা (আ.)-এর জিয়ারতের আগে আমাদের মৃত্যুমুখে পতিত করো না।’ এখন যেহেতু আমি দেখলাম তাদের উভয়ের মৃত্যু হয়ে গেছে, তখন আমি উপলব্ধি করলাম যে আপনি আল্লাহর রসুল মূসা (আ.)। তখন মূসা (আ.) বললেন, ‘সুসংবাদ গ্রহণ কর, তুমি হবে জান্নাতে আমার সাথী’।  বস্তুত পিতা-মাতার সেবা-যত্নের শুভ পরিণতি স্বরূপই সে যুবক জান্নাতে হজরত মূসা (আ.) এর সাথী হওয়ার গৌরব অর্জন করেছেন।

     লেখক : ইসলামী গবেষক।

সর্বশেষ খবর