বৃহস্পতিবার, ২৮ জানুয়ারি, ২০১৬ ০০:০০ টা

বন্ধ হোক সোনা চোরাচালান

জাতীয় নিরাপত্তার স্বার্থেই নজর দিন

সোনা চোরাচালানের ট্রানজিট রুট হিসেবে ব্যবহূত হচ্ছে বাংলাদেশ। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর একের পর এক অভিযান এবং কঠোর নজরদারি সত্ত্বেও চলছে সোনা চোরাচালান। নিত্যনতুন কৌশল বদল করে তারা আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলোকে ফাঁকি দিতে সক্ষম হচ্ছে। বাংলাদেশ প্রতিদিনের শীর্ষ প্রতিবেদনে সোনা চোরাচালানের নিত্যনতুন কলাকৌশল সম্পর্কে যে তথ্য প্রকাশ পেয়েছে তা অবাক করার মতো। বিমানবন্দরে টু-ডি ডাইমেনশন পদ্ধতিতে যাত্রীদের লাগেজ ও দেহ তল্লাশি করা হয়। কিন্তু এ পদ্ধতিতে সবসময় সুফল পাওয়া যায় না। উন্নত বিশ্বে বডি এক্স-রে এবং থ্রি-ডি মেশিনের সাহায্যে যাত্রীর দেহ ও লাগেজ তল্লাশি করা হয়। কাস্টমস কর্তৃপক্ষ বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়কে উল্লিখিত মেশিন সংগ্রহের প্রস্তাব দিলেও ব্যয়বহুল হওয়ায় সেই প্রস্তাব গ্রহণ করা হয়নি। বোদ্ধাজনদের মতে, আপাতত দুটি থ্রি-ডি মেশিন কনভেয়ার বেল্টে লাগানো গেলেই সোনা পাচার অনেকাংশেই কমে আসবে। মধ্যপ্রাচ্য এবং সিঙ্গাপুরসহ কিছু দেশ থেকে বাংলাদেশে সোনা আসছে নানা কৌশলে। চায়ের ফ্লাস্ক, বিস্কুট বা জুসের প্যাকেট, জুতা বা প্যান্টের বেল্টের ভিতর রেখে বা নারীর চুলের খোঁপায় ও গোপনীয় জায়গায় সোনা রেখে পাচার করার কাহিনী বহু পুরনো। ল্যাপটপ ও ওয়াটার পাম্পের মধ্যে সোনা পাচারও সেকেলে পদ্ধতি বলে বিবেচিত হচ্ছে। বাংলাদেশ থেকে ভিন্ন দেশে আবার সোনা পাচারও হচ্ছে নানা কৌশলে। সম্প্রতি বাংলাদেশ থেকে ভারতে সোনা পাচার হয়েছে গরুর পেটে অপারেশন করে সোনা রাখার মাধ্যমে। শিলিগুড়িতে সম্প্রতি আটক একটি গরুর পেটে সেলাইয়ের দাগ দেখে ভারতীয় গোয়েন্দা সংস্থার সদস্যদের সন্দেহ হয়। পেটে বোমা থাকতে পারে ভেবে মেটাল ডিটেক্টরে পরীক্ষা করলে সোনার অস্তিত্ব ধরা পড়ে। সোনা চোরাচালান বন্ধে দেশের বিমানবন্দরগুলোতে সর্বাধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহার নিশ্চিত করতে হবে। শুধু সোনা চোরাচালান বন্ধই নয়, মাদক এবং অস্ত্র চোরাচালান বন্ধেও সর্বাধুনিক তল্লাশির বিকল্প নেই। দেশের বিমানবন্দরগুলোর নিরাপত্তার স্বার্থেই এ ব্যাপারে নজর দিতে হবে। সর্বাধুনিক পদ্ধতিগুলো ব্যয়বহুল এ যুক্তিতে তা এড়িয়ে চলা চোরাচালানিদের ছাড় দেওয়ার নামান্তর। বিমানবন্দরের নিরাপত্তার জন্যও এ ধরনের মনোভাব যে ক্ষতিকর সে বিষয়টিও উপলব্ধিতে আনতে হবে।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর