রবিবার, ৭ ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ ০০:০০ টা

পায়রা সমুদ্রবন্দর

অর্থনীতির জন্য আশীর্বাদ বয়ে আনুক

পটুয়াখালীর কলাপাড়ার উপকূলীয় অঞ্চলে আন্ধারমানিক নদীর তীরে নির্মিত হচ্ছে দেশের একমাত্র গভীর সমুদ্রবন্দর। পায়রা সমুদ্রবন্দর চালু হলে দেশের আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্যে গতি সৃষ্টি হবে। চট্টগ্রাম ও মংলা সমুদ্রবন্দরে মাদার ভ্যাসেল ভেড়ার কোনো সুযোগ না থাকলেও পায়রা বন্দরে তা অনায়াসে ভিড়তে পারবে। এর ফলে আমদানি-রপ্তানির ক্ষেত্রে সময় যেমন বাঁচবে তেমন বাঁচবে খরচ। পাশাপাশি পায়রা বন্দর উন্নয়ন ক্ষেত্রে পিছিয়ে পড়া দেশের দক্ষিণাঞ্চলের অগ্রগতিও নিশ্চিত করবে। একদিকে পদ্মা সেতু অন্যদিকে পায়রা বন্দর নির্মাণ দেশের দক্ষিণাঞ্চলকে জাতীয় অর্থনীতির পাদপ্রদীপের নিচে নিয়ে আসতে সাহায্য করবে। ইতিমধ্যে পায়রা বন্দর ও পদ্মা সেতুর কথা মনে রেখে শিল্পোদ্যোক্তারা দক্ষিণাঞ্চলের বিভিন্ন জেলায় শিল্প স্থাপনের প্রস্তুতি নিচ্ছেন। বন্দরের নিকটবর্তী এলাকায় অনেকেই জমি কিনেছেন। বন্দরকেন্দ্রিক কলকারখানা তৈরিতেও শুরু হয়েছে ব্যাপক কর্মকাণ্ড। বাংলাদেশের অর্থনীতির অবয়ব প্রতিদিনই বাড়ছে। গভীর সমুদ্র বন্দর না থাকায় সিঙ্গাপুর ও কলম্বোসহ অন্যান্য গভীর সমুদ্রবন্দরে বড় জাহাজ বা মাদার ভ্যাসেল ভিড়িয়ে ছোট জাহাজে করে বিদেশ থেকে আনা পণ্য বাংলাদেশে আসত। অন্যদিকে রপ্তানি পণ্য ছোট জাহাজে করে ওইসব বন্দরে নিয়ে মাদার ভ্যাসেলে ভরা হতো। এর ফলে পণ্য আনা-নেওয়ার জন্য সময় যেমন বেশি লাগত তেমন বাড়তি খরচও বহন করতে হতো। আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্যে প্রতিদ্বন্দ্বিতার ক্ষেত্রে এ সীমাবদ্ধতা প্রতিবন্ধক হিসেবে বিবেচিত হতো। পায়রা বন্দর চালু হলে সে প্রতিকূলতার যেমন অবসান ঘটবে তেমন ধারেকাছের দেশগুলো এ বন্দর ব্যবহারের সুবাদে বাংলাদেশ আর্থিকভাবে লাভবান হবে। বিদেশি বিনিয়োগ উৎসাহিত করার ক্ষেত্রেও নির্মীয়মাণ এই সামুদ্রিক বন্দর গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে সক্ষম হবে। আমাদের মতে, বন্দর নির্মাণের পাশাপাশি বন্দর সংলগ্ন এলাকায় শিল্পায়নের সুযোগ সৃষ্টিতেও সরকারকে উদ্যোগ নিতে হবে।  বিশেষ অর্থনৈতিক এলাকা গঠন এবং জ্বালানি প্রাপ্তির সহজ সুযোগ সৃষ্টিতেও নিতে হবে সুষ্ঠু পরিকল্পনা। তা হলেই এ বন্দর দেশের অর্থনীতির জন্য আশীর্বাদ বয়ে আনবে।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর