সোমবার, ২২ ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ ০০:০০ টা

তাওয়াক্কুল মুমিনের প্রধান গুণ

মুহাম্মদ আরিফুর রহমান জসিম

তাওয়াক্কুল আরবি শব্দ। শাব্দিক অর্থ ভরসা করা, আস্থা রাখা, নির্ভর করা ইত্যাদি। ইসলামী পরিভাষায় মানবজীবনের যাবতীয় সমস্যা তথা ব্যক্তিগত, পারিবারিক, সামাজিক ও রাষ্ট্রীয় সমস্যা সমাধানের ক্ষেত্রে মহান আল্লাহতায়ালার ওপর পরিপূর্ণরূপে ভরসা করাকেই তাওয়াক্কুল বলে। একজন ইমানদারের জন্য তাওয়াক্কুল একটি আবশ্যকীয় গুণ। তাওয়াক্কুল ব্যতীত ইমান পরিপূর্ণ হয় না। পবিত্র কোরআনে ইরশাদ হয়েছে— আর যে আল্লাহর ওপর তাওয়াক্কুল করে আল্লাহ তার জন্য যথেষ্ট। (সূরা তালাক : ৩)। আল্লাহর ওপর তাওয়াক্কুল বা ভরসা করা ইমানের একটি শর্ত। এ মর্মে পবিত্র কোরআনে ইরশাদ হয়েছে, আর তোমরা তাওয়াক্কুল কর, যদি তোমরা মুমিন হও (সূরা মায়িদা : ২৩)। তাওয়াক্কুল বা আল্লাহর ওপর ভরসা করার বিভিন্ন স্তর রয়েছে। তাওয়াক্কুল প্রধানত দুই প্রকার— প্রথমত, তাওয়াক্কুল বেলাআসবাব (উপকরণ ব্যতীত), দ্বিতীয়ত, তাওয়াক্কুল মা’য়াল আসবাব (উপকরণসহ)। প্রথম প্রকার তাওয়াক্কুল আম নয়, খাস অর্থাত্ এ ধরনের তাওয়াক্কুল আম্বিয়ায়ে কেরামদের গুণ। কোনো প্রকার আসবাবপত্র ছাড়াই তারা তাওয়াক্কুল করতে পারেন, আল্লাহতায়ালাই তাদের সেই ক্ষমতা দিয়েছেন। দ্বিতীয় প্রকার তাওয়াক্কুল আম। এ প্রকার তাওয়াক্কুল সাধারণ মানুষদের জন্য। অর্থাত্ আমাদের চেষ্টা সহকারে আল্লাহর ওপর তাওয়াক্কুল করতে হবে। এভাবে বলা যেতে পারে, গাছ রোপণ করার পর বলতে হবে, তাওয়াক্কালতু আল্লাহ। তাওয়াক্কুলের পরিমাণ যার মধ্যে যত বেশি হবে, জীবন চলার পথ তার জন্য তত সহজ ও মসৃণ হবে। নবী করিম (সা.) তাওয়াক্কুল বা আল্লাহর ওপর ভরসা করে জীবনযাপনের প্রতি বেশ উৎসাহ প্রদান করেছেন এবং এর উপকারিতা বর্ণনা করেছেন। হজরত উমর (রা.) থেকে বর্ণিত এক হাদিসে রসুল (সা.) বলেছেন, তোমরা যদি আল্লাহতায়ালার ওপর তাওয়াক্কুল তথা ভরসা করার মতো ভরসা করতে তাহলে তিনি তোমাদেরও তেমনি রিজিক দিতেন যেমনিভাবে পাখিদের দিয়ে থাকেন। পাখিগুলো সকালবেলা বাসা থেকে খালি পেটে বের হয় এবং বিকালে পেট পূর্ণ করে ফিরে আসে। (তিরমিজি) আল্লাহ আমাদের জীবনের সব ক্ষেত্রে তার ওপর ভরসা রাখার তৌফিক দান করুন।   লেখক : গবেষক, প্রাবন্ধিক।

সর্বশেষ খবর