রবিবার, ২৮ ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ ০০:০০ টা

পরীক্ষার প্রশ্নপত্রে ভুল

দায়ী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিন

মাধ্যমিক পরীক্ষায় এবার ভুলের ছড়াছড়ি। স্বজনপ্রীতি আর দায়িত্বহীনতা জাতির জন্য কতটা সর্বনাশের কারণ হয়ে দাঁড়াতে পারে ভুলের মচ্ছব যেন তারই প্রমাণ। চলমান মাধ্যমিক পরীক্ষায় যশোর বোর্ডের গণিতের প্রশ্নেই রয়েছে ১১টি ভুল। ঢাকা বোর্ডের পদার্থবিজ্ঞানেও ভুলের ভূত চেপেছে পাঁচটি, রাজশাহী বোর্ডের বাংলা প্রথমপত্রে তিনটি আর দ্বিতীয় পত্রে চারটি। পিছিয়ে নেই চট্টগ্রাম বোর্ডও। বাংলা ও ইংরেজি প্রশ্নে ১১টি ভুলের কৃতিত্বও দাবি করতে পারে তারা। দেশের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ পাবলিক পরীক্ষার প্রশ্নপত্রে ভুলের পাশাপাশি কোনো কোনো এলাকায় দুই বছর আগের প্রশ্নপত্রে পরীক্ষা নেওয়ার ঘটনাও ঘটেছে। শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা স্বভাবতই উত্কণ্ঠিত হয়ে পড়েছেন ভুলে ভরা প্রশ্নপত্রের কারণে। তাদের আশঙ্কা পরীক্ষার্থীরা  ভুলের অজুহাতে নম্বর কম পেতে পারে। এমনকি ফেল করার আশঙ্কাও কারও কারও মধ্যে দানা বেঁধেছে। সংশ্লিষ্ট বোর্ডগুলোর পরীক্ষা নিয়ন্ত্রকরা অবশ্য আশ্বস্ত করেছেন প্রশ্নপত্রে ভুলের কারণে পরীক্ষার্থীরা ক্ষতিগ্রস্ত হবে না। বোর্ড কর্তৃপক্ষের এ মনোভাব অবশ্যই সাধুবাদ পাওয়ার যোগ্য। তবে প্রশ্ন হলো প্রতিটি প্রশ্ন তৈরি ও পরিমার্জনে যে ক্ষেত্রে চারজন অভিজ্ঞ শিক্ষক জড়িত থাকেন এবং এ জন্য তারা সম্মানীও পান, তা সত্ত্বেও এ ভুলের মচ্ছব কেন? পত্রিকান্তরে অবশ্য এ বিষয়টির ব্যাখ্যা দেওয়া হয়েছে যুত্সইভাবে। বলা হয়েছে শিক্ষক নির্বাচনে স্বজনপ্রীতি ও অনিয়মের অভিযোগ আছে। সন্দেহ নেই স্বজনপ্রীতি ও অনিয়ম আমাদের জাতীয় বৈশিষ্ট্যের অংশ হয়ে দাঁড়িয়েছে। জাতির ভবিষ্যত্ শিক্ষার্থীদের পাবলিক পরীক্ষার প্রশ্নপত্র প্রণয়নের ক্ষেত্রেও আমাদের কর্তাব্যক্তিরা সেই ঘেরাটোপ থেকে বেরিয়ে আসতে পারছেন না। ফলে পরীক্ষার্থীরা অবাক হয়ে দেখছে তারা যাদের পরম শ্রদ্ধেয় বলে ভাবেন, তারাও স্বজনপ্রীতি ও অনিয়মের রোগে আক্রান্ত। আমরা আশা করব কর্তৃপক্ষ ভুলের এই মচ্ছবকে ছাড় না দিয়ে কারা এ জন্য দায়ী তা চিহ্নিত করে শাস্তিমূলক পদক্ষেপ নেবেন। প্রশ্নপত্র প্রণয়নের ক্ষেত্রে স্বজনপ্রীতি ও অনিয়মের গড্ডলিকা প্রবাহ থেকে সরে গিয়ে সত্যিকারের যোগ্য ও দক্ষ শিক্ষকরা যাতে সুযোগ পান সে বিষয়টিও নিশ্চিত করা হবে।

এটি তাদের কর্তব্য বলে বিবেচিত হওয়া উচিত।

সর্বশেষ খবর