বুধবার, ২ মার্চ, ২০১৬ ০০:০০ টা

দয়ালু ও পরমত সহিষ্ণু হতে বলে ইসলাম

মাওলানা আবদুর রশিদ

ইসলাম শব্দের অর্থ শান্তি। আল্লাহ প্রদত্ত এ জীবন ব্যবস্থায় অনুসারীদের অপরের প্রতি দয়ালু ও পরমত সহিষ্ণু হওয়ার তাগিদ দেওয়া হয়েছে। পরমত অসহিষ্ণু অবস্থা পরিবার সমাজ ও রাষ্ট্রীয় জীবনে অশান্তি সৃষ্টি করে। সংঘাত সৃষ্টিতে ভূমিকা রাখে। পারিবারিক, সামাজিক ও জাতীয় ঐক্যে বিরূপ প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করে। যে কারণে অপরের মতের প্রতি সহিষ্ণু হওয়াকে ইসলাম গুরুত্ব দিয়েছে। এমনকি ধর্মীয় ক্ষেত্রেও ইসলামের অনুসারীরা কেউ যাতে অসহিষ্ণু না হয় সে বিষয়ে পবিত্র কোরআনে এবং রসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের হাদিসে শিক্ষা দেওয়া হয়েছে। এ বিষয়ে পবিত্র কোরআনে মহান আল্লাহ ইরশাদ করেন, ‘আল্লাহকে ছেড়ে যাদের তারা ডাকে তাদের তোমরা গালি দিও না, কেননা তারা সীমা লঙ্ঘন করে অজ্ঞতাবশত আল্লাহকেও গালি দেবে’। (সূরা আনআম-১০৮)।

উপরোক্ত সূরায় অন্য ধর্মের উপাস্যদের গালি বা তাদের সম্পর্কে অসহিষ্ণু মনোভাব প্রকাশ করার ক্ষেত্রে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে। আল্লাহ সর্ব শক্তিমান। তিনি ইচ্ছা করলেই দুনিয়ার সব মানুষ তার ওপর ইমান আনতে বাধ্য হতো। কিন্তু তিনি তা করেননি। ফলে কাউকে মুমিন বানানোর জন্য জোরজবরদস্তি ইমানদারদের দায়িত্ব হতে পারে না। পবিত্র কোরআনে ইরশাদ করা হয়েছে, ‘আপনার রব ইচ্ছা করলে পৃথিবীতে যারা আছে সবাই ইমান আনত তবে কী আপনি মুমিন হওয়ার জন্য মানুষের ওপর জোরজবরদস্তি করবেন।’ (সূরা  ইউনুস-৯৯)। ইসলামে এক মানুষের প্রতি অপর মানুষকে দয়ালু বা সহানুভূতিশীল হওয়ার তাগিদ দেওয়া হয়েছে। রসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ‘দয়ালুদের ওপর রাহমানুর রাহীম আল্লাহতায়ালা দয়া করেন। পৃথিবীবাসীর ওপর তোমরা দয়াপরবশ হও, আকাশে যিনি আছেন তিনি তোমাদের ওপর দয়া প্রদর্শন করবেন।’ (আবু দাউদ)।

রসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নিজে ইসলামবিরোধীদের দ্বারা অত্যাচারিত হয়েছেন নিপীড়নের শিকার হয়েছেন কিন্তু কখনই নিপীড়ক হিসেবে আবির্ভূত হননি। মক্কা জয়ের পর তিনি চিরশত্রুর ভূমিকায় অবতীর্ণ প্রতিপক্ষের প্রতি যে ক্ষমাসুন্দর আচরণ করেছেন ইতিহাসে তার দৃষ্টান্ত নেই। মদিনায় তিনি যে রাষ্ট্রব্যবস্থা গড়ে তোলেন তাতে জাতি-ধর্ম-গোত্র-নির্বিশেষে সবার মানবাধিকার স্বীকার করা হয়েছিল। এটি ছিল ইসলামের সহিষ্ণু মনোভাবেরই দৃষ্টান্ত।

     লেখক : ইসলামী গবেষক।

সর্বশেষ খবর