শুক্রবার, ৪ মার্চ, ২০১৬ ০০:০০ টা

গণপরিবহন নৈরাজ্য

এ অকাম্য অবস্থার অবসান হোক

রাজধানীর গণপরিবহনের নৈরাজ্য কিছুতেই নিয়ন্ত্রণে আনা যাচ্ছে না। জোর যার মুল্লুক তার নীতিকে অনুকরণীয় বলে বেছে নিয়েছেন বাস ও সিএনজির চালকরা। যাত্রীদের কাছ থেকে জোর করে বেশি ভাড়া আদায় করা হলেও দেখার কেউ নেই। যেখানে সেখানে যাত্রী উঠানো-নামানো, যেখানে সেখানে গাড়ি দাঁড় করে দীর্ঘ যানজট সৃষ্টি করা হলেও তাতে বাদ সাধার কেউ আছে বলে মনে হয় না। রাজধানীতে মেয়াদোত্তীর্ণ কিংবা ফিটনেসহীন বাস ও হিউম্যান হলারের সংখ্যাই যেন বেশি। যেখানে সেখানে গাড়ি অচল হয়ে পড়া গণপরিবহনের বৈশিষ্ট্য হয়ে দাঁড়িয়েছে। রাজপথে বাসসহ বিভিন্ন গণপরিবহনের একে অপরকে পাশ কাটানোর প্রতিযোগিতা প্রায়ই দুর্ঘটনার সৃষ্টি করছে। প্রাণহানির ঘটনাও ঘটছে কখনো কখনো। তারপরও বেপরোয়া বাস বা হিউম্যান হলার চালকদের অভ্যাসে লাগাম পরানো যাচ্ছে না। গণপরিবহনের কাছে শুধু যাত্রীই নয়, রাজধানীর দেড় কোটি মানুষও জিম্মি হয়ে পড়েছে। বলা যায়, রাজধানীর যানজটের পেছনে গণপরিবহনের বিশৃঙ্খল চলাচল অনেকাংশে দায়ী। রাজধানীতে চলাচলকারী বেশির ভাগ গণপরিবহনের অবস্থা এতটাই নাজুক যে তা জাতীয় লজ্জার কারণ হয়ে দাঁড়াচ্ছে। ১৭টি সিটের হিউম্যান হলারে ৩০ থেকে ৪০ জন যাত্রী বহন করা হয় অনায়াসে। মুড়ির টিন হিসেবেই যে কারণে এগুলোকে অভিহিত করা হয়। বেশির ভাগ বাস ও হিউম্যান হলারের জানালার গ্লাস নেই। বর্ষার সময় কখনো কখনো রাস্তার পাশের ছোট ফেস্টুন তুলে জানালায় লাগিয়ে বৃষ্টি ঠেকানোর কসরত চালানো হয়। সিএনজি অটোরিকশাগুলোর যাত্রী ভাড়া দ্বিগুণ করার পরও সন্তুষ্ট নয় এ গণপরিবহনের চালকরা। মিটার রিডিংয়ের চেয়ে ২০-২৫ টাকা বেশি না দিলে যাত্রী পরিবহনে তারা রাজিই হয় না। একটি মহানগরীর গণপরিবহন ব্যবস্থা কতটা ভালো তার ওপর সে নগরী কতটা বসবাসযোগ্য সে বিষয়টি অনেকাংশে নির্ধারিত হয়। গণপরিবহনের হতশ্রী অবস্থা ইতিমধ্যে ঢাকাকে দুনিয়ার অন্যতম খারাপ নগরীর তালিকাভুক্ত করেছে। এ অবস্থা থেকে উত্তোরণের একটাই উপায় গণপরিবহন মালিক ও চালকদের দৌরাত্ম্য শক্ত হাতে থামানো।  তাদের জোর যার মুল্লুক তার মনোভাবে লাগাম পরানো। যাত্রীদের প্রতি সরকারের দায়বোধই তা নিশ্চিত করতে পারে।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর