সোমবার, ৭ মার্চ, ২০১৬ ০০:০০ টা

নির্বাচনী অনিয়ম

অপরাধীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিন

ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনের আকর্ষণ ইতিমধ্যে অনেকটাই নিষ্প্রভ হয়ে পড়েছে প্রতিদ্বন্দ্বিতার সুযোগ অনেকাংশে রুদ্ধ হয়ে যাওয়ায়। দেশের বহু ইউনিয়নে সরকারি দলের বাইরে কেউ মনোনয়নপত্র জমা দেয়নি হুমকি-ধমকি আর ঝুট ঝামেলার ভয়ে। যেসব ইউনিয়নে বিরোধী দল কিংবা সরকারি দলের বিদ্রোহী প্রার্থীরা প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছে সেখানকার নির্বাচনী পরিবেশ বিঘ্নিত করারও অপচেষ্টা চলছে নানাভাবে। প্রতিপক্ষের ওপর হামলা, নির্বাচনী প্রচারণায় বাধা দেওয়া নিত্যনৈমিত্তিক ঘটনায় পরিণত হয়েছে। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই ক্ষমতাসীন দলের প্রার্থী এমনকি আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর বিরুদ্ধেই তোলা হচ্ছে অভিযোগের তীর। আমাদের দেশে যখন যারা ক্ষমতায় থাকেন তাদের নেতা-কর্মীরা ধরাকে সরাজ্ঞান করতেই অভ্যস্ত হয়ে পড়েন। ক্ষমতায় থাকলে ক্ষমতার দাপট দেখানো এদেশে ঐতিহ্যের অংশ হয়ে দাঁড়িয়েছে। তার পরও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর মধ্যে দলবাজির মনোভাব প্রশ্রয় পাবে এমনটি আশা করা হয় না। বিরোধী দল ও স্বতন্ত্র প্রার্থীদের হয়রানির ক্ষেত্রে তাদের নির্বিকার ভূমিকা দুর্ভাগ্যজনক। কোনো কোনো ক্ষেত্রে তারা সরকারদলীয় প্রার্থীর হয়ে প্রতিপক্ষকে হয়রানি করছেন বলেও অভিযোগ উঠেছে। এ বিষয়ে নির্বাচন কমিশনের যেন কিছুই করার নেই। তাদের দায়হীন ভূমিকায় বিপুলসংখ্যক ইউনিয়নে সরকারি দলের প্রার্থীদের বাইরে কেউ প্রার্থী হতে পারেনি। যেসব ইউনিয়নে বিরোধী দল ও স্বতন্ত্র প্রার্থীরা প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন, সেখানেও সুষ্ঠু পরিবেশ থাকবে কিনা সে সংশয় দানা বেঁধে উঠছে। আমরা আশা করব দেশের নির্বাচন ব্যবস্থার ওপর মানুষের যেটুকু আস্থা এখনো টিকে আছে তা অব্যাহত রাখার স্বার্থে সব ধরনের অনিয়মের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানো হবে। নির্বাচন বিধি ভঙ্গ, হুমকি ও হামলার ঘটনার বিরুদ্ধে আইনগত পদক্ষেপ নেওয়া হবে। নির্বাচন প্রক্রিয়ার বিশ্বাসযোগ্যতা এবং নিজেদের সুনামের স্বার্থে নির্বাচন কমিশনকে অনিয়ম প্রতিরোধে এগিয়ে আসতে হবে। জোর যার মুল্লুক তার নীতির অনুসরণ মেনে নিলে পৌরসভা নির্বাচনের মতো ইউনিয়ন নির্বাচনও প্রহসনে পরিণত হবে। এ নির্বাচনে ক্ষমতার পট পরিবর্তনের কোনো সম্ভাবনা না থাকলেও জনগণের মতামত প্রকাশের যে ন্যূনতম সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে তা নষ্ট হতে দেওয়া উচিত হবে না।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর