শনিবার, ১২ মার্চ, ২০১৬ ০০:০০ টা

খাদ্য উৎপাদনে সাফল্য

সেচে ভূউপরিস্থ পানির ব্যবহার নিশ্চিত করুন

নদী-নালা, খাল-বিল বা ভূউপরিস্থ পানির ব্যবহার বাড়াতে সরকারের নেওয়া সেচ সম্প্রসারণ প্রকল্পের সুফল হিসেবে চলতি বছর ১ লাখ ৭১ হাজার টন খাদ্য উৎপাদন বৃদ্ধি পেয়েছে। চলতি বছর সেচ সম্প্রসারণ প্রকল্পের আওতায় ৫৬ হাজার ৯৪৫ হেক্টর জমিতে সেচ সুবিধা দিয়ে এই সাফল্য অর্জিত হয়েছে। কৃষি মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটিকে দেওয়া এ তথ্যটি নিঃসন্দেহে আশাজাগানিয়া। সেচ কাজে ভূগর্ভস্থ পানির ব্যাপক ব্যবহার দেশের প্রাকৃতিক ভারসাম্যে বিরূপ প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করছে। নিচে নেমে যাচ্ছে ভূগর্ভস্থ পানির স্তর। বাংলাদেশ এমনিতেই নদীনালার দেশ। বৃষ্টিপাতের পরিমাণও সন্তোষজনক। নদ-নদী-জলাশয়ের ধারণ ক্ষমতা বাড়ালে সারা বছরই সেচ সুবিধার জন্য প্রয়োজনীয় পানি পাওয়া সম্ভব। ভূগর্ভস্থ পানি সেচযন্ত্রের সাহায্যে উঠানোর চেয়ে সেচকাজে জলাশয়ের পানি খরচ করা অপেক্ষাকৃত সাশ্রয়ীও বটে। কৃষি মন্ত্রণালয় ভূউপরিস্থ পানির ব্যবহার বাড়াতে যে উদ্যোগ নিয়েছে তা প্রশংসার দাবিদার। তবে বিষয়টি শুধু উপরিভাগের পানি ব্যবহারে সীমাবদ্ধ থাকলে চলবে না। নদ-নদী, খাল-বিল, জলাশয়ের পানি সংরক্ষণেও নজর দিতে হবে। দেশের প্রাকৃতিক জলাশয়গুলোর পানি ধারণক্ষমতা বাড়াতে পারলে একদিকে সেচের ক্ষেত্রে ভূগর্ভস্থ পানির ব্যবহার যেমন কমিয়ে আনা সম্ভব হবে, অন্যদিকে জলাশয়গুলোতে মাছ চাষের মাধ্যমে আমিষ চাহিদা পূরণ করা সম্ভব হবে। বর্ষাকালে দেশের এক বিরাট অংশে বন্যা ছোবল হানে নদ-নদীর পানি ধারণ ক্ষমতা না থাকার কারণে। নদ-নদী খননের মাধ্যমে পানি ধারণক্ষমতা বাড়াতে পারলে এ বিপদ থেকে অনেকাংশে রেহাই পাওয়া সম্ভব হবে। বাংলাদেশে চাষযোগ্য জমির পরিমাণ সীমিত। ঘনবসতির এই দেশে প্রতিদিনই চাষযোগ্য জমি কমছে। এ অবস্থায় খাদ্য চাহিদা পূরণে সীমিত জমির সর্বোচ্চ সদ্ব্যবহারের দিকে নজর দিতে হবে। দেশের সব কৃষি জমি সেচ সুবিধার আওতায় আনা গেলে খাদ্য উৎপাদন অন্তত ৫০ ভাগ বাড়ানো সম্ভব হবে।  এ বিষয়টি মনে রেখে প্রাকৃতিক জলাশয়ের পানির সদ্ব্যবহারকে প্রাধান্য দিতে হবে। পাশাপাশি কৃষক যাতে তাদের উৎপাদিত ফসলের ন্যায্যমূল্য পায় সেদিকেও নজর দেওয়া দরকার। খাদ্য উৎপাদন  বাড়ানোর জন্য যার কোনো বিকল্প নেই।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর