সোমবার, ২৮ মার্চ, ২০১৬ ০০:০০ টা

দ্বিতীয় দফার ইউপি নির্বাচন

সব পক্ষকে দায়িত্বশীল হতে হবে

ইউনিয়ন পরিষদের প্রথম ধাপের নির্বাচন বিব্রতকর অবস্থায় ফেলেছে নির্বাচন কমিশনকে। যত দোষ নন্দঘোষ প্রবচনের যথার্থতা প্রমাণ করতে বিরোধী দল নির্বাচন কমিশনকে তুলাধোনা শুরু করেছে। ব্যাপক সহিংসতার জন্য তারা নির্বাচন কমিশনকে কাঠগড়ায় দাঁড় করাতে চাচ্ছে। স্মর্তব্য, ২২ মার্চ প্রথম ধাপে দেশের ৭১২টি ইউনিয়ন পরিষদে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। এ নির্বাচনের আগে ও পরে সারা দেশে নির্বাচনী সহিংসতায় ২৪ জন প্রাণ হারিয়েছে। আহত হয়েছে দুই হাজারের বেশি মানুষ। প্রথম ধাপের ভোটগ্রহণকে কেন্দ্র করে নির্বাচনী সহিংসতা এখনো অব্যাহত আছে। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ প্রার্থীর কর্মী ও সমর্থকদের সঙ্গে চলছে দলের বিদ্রোহী প্রার্থীর কর্মী-সমর্থকদের সহিংসতা। প্রথম দফার নির্বাচনের আগেই নির্বাচন কমিশনের পক্ষ থেকে বলা হয়েছিল কোথাও সহিংসতা হলে তার দায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ওপর বর্তাবে। দায়িত্ব পালনে অবহেলার জন্য বেশ কিছু পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে তারা শাস্তিমূলক ব্যবস্থাও নিয়েছে। তবে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী পড়েছে শ্যাম রাখি না কুল রাখি অবস্থায়। কোথাও সহিংসতায় বাধা না দেওয়ার জন্য তাদের দায়ী করা হচ্ছে। আবার কোথাও কড়া ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য তোপের মুখে পড়তে হচ্ছে। নির্বাচনকে কেন্দ্র করে সহিংসতা শুধু নয় ভোটকেন্দ্র দখল, কারচুপি ও ব্যালট বাক্স ছিনতাইয়ের অভিযোগও ব্যাপক। বিএনপি এ বিষয়ে ঢালাও অভিযোগ করেছে। ক্ষমতাসীন মহাজোটের শরিক জাতীয় পার্টির অভিযোগও অভিন্ন। এমনকি আরেক শরিক ওয়ার্কার্স পার্টির পক্ষ থেকেও জাল ভোটের অভিযোগ করা হয়েছে। ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে নিজেদের নিরঙ্কুশ জয় চাইলেও সংঘটিত সহিংসতায় বিব্রতকর অবস্থায় পড়েছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগও। বিএনপি বা বিরোধীদলীয় নেতা-কর্মী সমর্থকরা বেশিরভাগ ক্ষেত্রে পিছুটান দেওয়ায় একতরফা নির্বাচনের সুবর্ণ সুযোগ পেয়েছে তারা। কিন্তু দলের বিদ্রোহী প্রার্থীদের কাছ থেকে যেভাবে বিব্রতকর চ্যালেঞ্জের মুখে পড়তে হয়েছে তাতে একতরফা নির্বাচনের সুখ উবে যাওয়ার মতো। নির্বাচনী সহিংসতার বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই আওয়ামী লীগ এবং দলের বিদ্রোহী প্রার্থী সমর্থকরা জড়িত। দ্বিতীয় ধাপের নির্বাচনেও একই ধরনের অবস্থা জেঁকে বসতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। এ আশঙ্কার অবসানে সরকারকে আগে থেকেই সতর্ক হতে হবে। সরকারি দলকেও নিজেদের সুনামের স্বার্থে কর্মীদের বাড়াবাড়ি নিয়ন্ত্রণে উদ্যোগী হতে হবে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী যাতে নিরপেক্ষভাবে দায়িত্ব পালন করে সে বিষয়টিও নিশ্চিত হওয়া দরকার।

সর্বশেষ খবর