মঙ্গলবার, ২৯ মার্চ, ২০১৬ ০০:০০ টা

বিএনপির ঘুরে দাঁড়ানো, নাকি পারিবারিক মালিকানা সংহতকরণ?

বিভুরঞ্জন সরকার

বিএনপির ঘুরে দাঁড়ানো, নাকি পারিবারিক মালিকানা সংহতকরণ?

বিএনপির ষষ্ঠ জাতীয় সম্মেলন শেষ পর্যন্ত নির্ধারিত তারিখ ১৯ মার্চেই সম্পন্ন হয়েছে। এ সম্মেলন সরকার করতে দেবে কিনা, সম্মেলনের ভেন্যু পাওয়া যাবে কিনা— এসব নিয়ে বিএনপির মধ্যে উদ্বেগ ছিল, শঙ্কা ছিল। বিএনপি নেতারা গণমাধ্যমের কাছে টানা অভিযোগ করে এসেছেন যে, সরকার তাদের সম্মেলন বানচালের ষড়যন্ত্র করছে। কিন্তু দেখা গেছে, সরকারের অনুমতি নিয়েই বেশ উৎসাহ-উদ্দীপনার সঙ্গে সম্মেলন শেষ করেছে বিএনপি। রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন ও সংলগ্ন সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের একাংশ সম্মেলনস্থল হিসেবে ব্যবহৃত হয়েছে। সম্মেলনে কয়েক হাজার ডেলিগেট, কাউন্সিলর এবং শুভানুধ্যায়ী-সমর্থক ছাড়াও বেশ কিছু দেশি-বিদেশি অতিথি উপস্থিত ছিলেন। সরকারের পক্ষ থেকে কেউ তাদের কোনো ধরনের বাধা দিয়েছে বলে শোনা যায়নি। তবে সম্মেলনের স্থান বা ভেন্যু হিসেবে বিএনপির নাকি বেশি পছন্দ ছিল বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্র। সেটার অনুমতি পাওয়া যায়নি। কেন সেটা দেওয়া হয়নি, তার কারণ আমরা জানি না। দিলে ভালো হতো। তাতে সরকারের কোনো ক্ষতি ছিল না, বরং অহেতুক সমালোচনা এড়ানো সম্ভব হতো। আগেরবার বিএনপি সেখানেই সম্মেলন করেছিল। ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন ও সোহরাওয়ার্দী উদ্যান ব্যবহারের অনুমতি দেওয়া নিয়ে গড়িমসি করাও ঠিক হয়নি। আবেদন করার সঙ্গে সঙ্গে অনুমতি দেওয়া হলে বিএনপির পক্ষ থেকে কোনো অভিযোগ উত্থাপনের সুযোগ থাকত না। সেই অনুমতি বিএনপি পেয়েছে, সম্মেলনও শান্তিপূর্ণ উপায়ে শেষ করেছে। কিন্তু তার আগে কয়েক দিন ধরে প্রচার চালিয়েছে যে সরকার বিএনপির সম্মেলন করতে দিতে চায় না। বিএনপির সম্মেলনে বাধা দিয়ে সরকারের কী লাভ? বিএনপি যে ‘সফল’  সম্মেলন করছে তাতেই বা সরকারের কী ক্ষতি হয়েছে!

দুই. বিএনপি দেশের একটি বড় রাজনৈতিক দল। তাদের প্রচুর সমর্থক আছে। সামরিক শাসক জিয়াউর রহমান যে প্রক্রিয়ায়ই বিএনপির জন্ম দিয়ে থাকুন না কেন, পরবর্তী পর্যায়ে জনগণের ভোটেই বিএনপি সরকার গঠন ও দেশ শাসনের সুযোগ পেয়েছে। বিএনপির রাজনীতি এবং রাজনৈতিক কর্মসূচি দেশ ও জনগণের জন্য যদি ক্ষতিকরও হয়, তাহলেও তাদের সভা-সমাবেশ করা কিংবা সাংগঠনিক কার্যক্রম পরিচালনায় বাধা দেওয়া সমীচীন নয় এ কারণে যে, বিএনপি দেশের একটি নিবন্ধিত রাজনৈতিক দল। দেশের জন্য, গণতন্ত্রের জন্য বিএনপির রাজনীতি যদি হুমকি বলে মনে হয় তাহলে প্রচলিত আইন ও রীতিনীতি অনুযায়ী তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া যেতে পারে। আন্দোলনের নামে সন্ত্রাস-সহিংসতা-নাশকতার পথে হেঁটে বিএনপি ভুল করেছে। এ ভুল তারা ঘোষণা দিয়ে প্রকাশ্যে স্বীকার না করলেও, গত কিছুদিন থেকে তারা সে ধরনের হঠকারী কোনো কর্মসূচি না দেওয়ায় এটা বোঝা যায় যে, তারা আর ওই পথে হাঁটতে চায় না। এমনকি এখন সরকার পতনের হুঙ্কারও তারা দিচ্ছে না। বিভিন্ন পর্যায়ে স্থানীয় সরকার নির্বাচনে অংশ নিয়ে পরাজিত হওয়া সত্ত্বেও হরতালের কর্মসূচি না দিয়ে বিএনপি এটা বুঝিয়ে দিচ্ছে যে, দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে-পরে রাজনৈতিক কর্মসূচির নামে তারা যা করেছে নতুন করে তার আর পুনরাবৃত্তি করতে চায় না।

এই প্রেক্ষাপটে বিএনপিকে শোধরানোর একটা সুযোগ দেওয়া দরকার। সন্ত্রাস-নাশকতার জন্য দোষী বিএনপি নেতাদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নিলে তার বিরোধিতা কেউ করবে না। কিন্তু যদি ওগুলোকে অজুহাত হিসেবে নিয়ে বিএনপিকে অযৌক্তিক দমন-পীড়নের মধ্যেই রাখা হয় তাহলে মানুষ তা বেশি দিন ভালোভাবে মেনে নেবে না। এতে উল্টা তাদের প্রতি এক ধরনের সহানুভূতিই তৈরি হবে। এরই মধ্যে যা হতেও শুরু করেছে বলে মনে  হয়। সে জন্যই বিএনপিকে নিয়মিত দলীয় কার্যক্রম পরিচালনা করতে দেওয়া উচিত। সেদিক থেকে বিএনপির জাতীয় সম্মেলন অনুষ্ঠানে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি না করে সরকার ভালো করেছে। বিএনপি শান্তির পথে চললে, গণতন্ত্রের পথে চললে সরকার যে সে ক্ষেত্রে বাধা হয়ে দাঁড়াবে না— এই বার্তাটি সম্ভবত বিএনপিকে দেওয়া দরকার ছিল এবং সরকার সেটা দিতে সক্ষম হয়েছে। এখন দেখার পালা বিএনপি কী করে, কোন পথে হাঁটে। সত্যি নিজেদের শোধরানো বা রাজনীতি বদলানোর চেষ্টা করে কিনা।

তিন. বিএনপির জাতীয় সম্মেলন হলো প্রায় সাত বছর পরে। অথচ দলীয় গঠনতন্ত্র অনুযায়ী সম্মেলন হওয়ার কথা প্রতি তিন বছর অন্তর। ১৯৭৮ সালের ১ সেপ্টেম্বর বিএনপির জন্ম। সে হিসেবে দলটির বয়স দাঁড়িয়েছে ৩৮ বছর। এই সময়ের মধ্যে কমপক্ষে ১২টি সম্মেলন হওয়ার কথা। অথচ এবার হলো ষষ্ঠ সম্মেলন। দেখা যাচ্ছে, দলের গঠনতন্ত্র মেনে চলায় বিএনপির অনীহা আছে। এবার সাত বছর পর সম্মেলন হওয়ার কৈফিয়ত হিসেবে বিএনপি বলে থাকে, সরকার তাদের প্রতি মারমুখী হওয়ায় অর্থাৎ সরকারের মামলা-হামলায় ব্যতিব্যস্ত থাকায় তারা যথাসময়ে সম্মেলন করতে পারেনি। সত্যি কি তাই? বিএনপি একাধিকবার ক্ষমতায় ছিল। তারা ক্ষমতায় থাকার সময়ও কি নিয়ম মেনে তিন বছরের মাথায় সম্মেলন করেছে? তখন কি সমস্যা ছিল? তখনো কি আওয়ামী লীগের বাধার কারণেই তারা সম্মেলন থেকে বিরত থেকেছে? সব কিছুর জন্য রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ আওয়ামী লীগ কিংবা সরকারের ওপর দায় চাপানো বিএনপির একটি বিশেষ স্টাইল। এ স্টাইল তাদের বদলাতে হবে। নিজেদের ভুলত্রুটির কথা স্বীকার করতে হবে। ভুলত্রুটি সবারই হয়, হতে পারে। সেটা কোনো দোষের নয়। ভুল স্বীকার না করা এবং ভুল থেকে শিক্ষা না নেওয়াই হলো বড় দোষের।

চার. ষষ্ঠ জাতীয় সম্মেলন নিয়ে বিএনপির পক্ষ থেকে অনেক আশাবাদ ছড়ানো হয়েছিল। বলা হয়েছিল, এ সম্মেলনের পর দলটি ঘুরে দাঁড়াবে। দেশের রাজনীতিতে বিএনপির এখন যে ‘ছন্নছাড়া’ অবস্থা তা কাটিয়ে ওঠার চেষ্টা করা হবে। দল এবং রাজনীতিতে এমন সব পরিবর্তন আনা হবে যাতে শুধু দলের নেতা-কর্মী, সমর্থক-শুভাকাঙ্ক্ষীরা নয়, সাধারণ মানুষের মধ্যেও বিএনপি সম্পর্কে একটি ইতিবাচক আগ্রহ তৈরি হবে। কিন্তু জাতীয় সম্মেলনে তেমন কিছু হয়েছে বলে মনে হয় না। বরং যারা অনেক আশা নিয়ে সম্মেলনস্থলে জমায়েত হয়েছিলেন, দিন শেষে তারা একরাশ প্রশ্ন নিয়েই ঘরে ফিরেছেন। সম্মেলন থেকে নতুন কিছু পাওয়া যায়নি, এমনকি একটি নতুন কমিটিও নয়। দলের ‘ভারপ্রাপ্ত’ মহাসচিবের ‘ভারমুক্ত’ হওয়ার ঘোষণাটিও দেওয়া হলো না সম্মেলন থেকে।

সম্মেলনের উদ্বোধনী অধিবেশনে বেগম জিয়ার দীর্ঘ লিখিত ভাষণ নিয়ে কারও কারও মধ্যে কিছুটা আগ্রহ তৈরি হলেও সামগ্রিকভাবে এর ফলে বিএনপিতে কোনো পরিবর্তন হওয়ার তেমন কোনো লক্ষণ কেউ দেখতে পাচ্ছেন বলে মনে হয় না। বরং এ সম্মেলনের মধ্য দিয়ে বিএনপির রাজনীতির বেশ কিছু স্ববিরোধী চিত্রই মানুষের কাছে স্পষ্ট হয়েছে। বলা হচ্ছে, দলের চেয়ারপারসন এবং সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান পদে যথাক্রমে খালেদা জিয়া ও তারেক জিয়া সম্পূর্ণ গণতান্ত্রিক উপায়ে নির্বাচিত হওয়ায় দলের মধ্যে গণতন্ত্রচর্চার দৃষ্টান্ত স্থাপিত হয়েছে। কিন্তু বিষয়টি একেবারেই সে রকম নয়। এটা সবারই জানা, দল পরিচালনায় বিএনপিতে কখনই গণতান্ত্রিক রীতিনীতির বালাই ছিল না, এখনো নেই। যত দিন যাচ্ছে বিএনপি যেন ততই একটি ফ্যামিলি প্রোপার্টিতে পরিণত হচ্ছে। যারা বিএনপি করেন তারা এটা ভালো করেই জানেন যে, খালেদা জিয়া জীবিত থাকতে এই দলের সর্বময় কর্তৃত্ব তার হাতছাড়া হবে না। তার অবর্তমানে দলের নেতা হবেন তার পুত্র তারেক রহমান। সে ব্যবস্থাও তিনি এর মধ্যেই পাকাপোক্ত করেছেন। এ অবস্থায় দলের দুই শীর্ষ পদে মা-ছেলের বিরুদ্ধে কেউ প্রার্থী হওয়ার সাহস দেখাবেন না— এটাই স্বাভাবিক। সেজন্য সম্মেলনের আগেই ওই দুই পদে নির্বাচনের আয়োজন করা হয়। যথারীতি চেয়ারপারসন পদে খালেদা জিয়া এবং সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান পদে তারেক রহমান ছাড়া আর কোনো প্রার্থী নেই। তাই তারা বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়ে গেলেন। এটা একেবারেই একটি সাজানো নাটক। এভাবেই বিএনপির অভ্যন্তরে গণতন্ত্রচর্চার মাহাত্ম্য তৈরি করা হচ্ছে।

পাঁচ. প্রশ্ন হলো, বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হওয়াটা দলের জন্য যদি গণতন্ত্রসম্মত হয়, তাহলে অন্য ক্ষেত্রে হবে না কেন? সংসদ নির্বাচনে কিংবা পৌরসভা বা ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হওয়া যদি অগ্রহণযোগ্য হয়, তাহলে একই যুক্তিতে বিএনপির অভ্যন্তরীণ নির্বাচন বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় হলে তাও গ্রহণযোগ্য হতে পারে না। খালেদা জিয়া কিংবা তারেক রহমানের সঙ্গে কেউ প্রতিদ্বন্দ্বিতা না করার জন্যই তারা বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছেন। এমপি বা অন্য পদে নির্বাচনের ক্ষেত্রেও তো যদি কেউ প্রতিদ্বন্দ্বিতা না করেন তাহলে কারও বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হওয়ার সুযোগ তৈরি হয়। বিএনপি চেয়ারপারসন, ভাইস চেয়ারম্যান পদে নির্বাচনের নামে ‘তামাশা’ না করে দলের নতুন কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব নির্বাচনে গণতান্ত্রিক রীতি অনুসরণ করলেই ভালো হতো।

বিএনপির মতো একটি বড় দল বছরের পর বছর চলছে ‘ভারপ্রাপ্ত’ মহাসচিব দিয়ে। ২০১১ সালে দলের মহাসচিব খোন্দকার দেলোয়ার হোসেনের মৃত্যুর পর মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ভারপ্রাপ্ত মহাসচিবের দায়িত্ব পান। তার পর থেকে তিনি অত্যন্ত নিষ্ঠা ও বিশ্বস্ততার সঙ্গে দলের জন্য ‘সার্ভিস’ দিয়ে যাচ্ছেন। তিনি ডজন ডজন মামলার জালে জড়িয়ে কয়েক দফা কারা নির্যাতনও ভোগ করেছেন। কিন্তু মহাসচিবের আগে বসানো ‘ভারপ্রাপ্ত’ শব্দটি দূর করতে পারছেন না। এবার শোনা গিয়েছিল, জাতীয় সম্মেলনের মাধ্যমে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ভারমুক্ত হয়ে বিএনপির পূর্ণাঙ্গ মহাসচিবের দায়িত্ব পাবেন। দলের সকল পর্যায়ের নেতা-কর্মীরও তেমনই প্রত্যাশা ছিল। কিন্তু দেখা গেল, সম্মেলনে চেয়ারপারসন ও সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান পদে খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানের পুনর্নির্বাচন অনুমোদন দেওয়া ছাড়া নতুন নেতৃত্ব নির্বাচনের আর কিছুই কাউন্সিল করল না। সব কিছুর দায়িত্ব দেওয়া হলো খালেদা জিয়ার ওপর। তিনি একক ক্ষমতাবলে, তার পছন্দের ব্যক্তিদের দিয়ে দলের মহাসচিব থেকে শুরু করে স্থায়ী কমিটি ও নির্বাহী কমিটি গঠন করবেন।

সম্মেলনে বেগম জিয়ার যে ভাষণের প্রশংসা বিএনপি সমর্থক বুদ্ধিজীবীরা করছেন, সেই ভাষণে তিনি বলেছেন, প্রধানমন্ত্রীর একক নির্বাহী ক্ষমতা সংসদীয় সরকারের আবরণে একটি স্বৈরাচারী একনায়কতান্ত্রিক শাসনের জন্ম দিয়েছে। এ অবস্থার অবসানকল্পে প্রজাতন্ত্রের নির্বাহী ক্ষমতার ক্ষেত্রে ভারসাম্য আনা হবে। ব্যক্তির হাতে নিরঙ্কুশ ক্ষমতা পুঞ্জীভূত করাটাই আজকের রাজনৈতিক সংকট গভীর হওয়ার কারণ বলে বেগম জিয়া উল্লেখ করেছেন।

লিখিত ভাষণে ব্যক্তির হাতে নির্বাহী ক্ষমতা নিরঙ্কুশ করার কথা বলে রুদ্ধদ্বার বৈঠকে দলের মহাসচিব, স্থায়ী কমিটি ও নির্বাহী কমিটি গঠনের একক ও সর্বময় ক্ষমতা-কর্তৃত্ব নিজের হাতে তুলে নিলেন বেগম জিয়া। বিষয়টি খুব ভালো হলো কি? প্রধানমন্ত্রীর ক্ষমতায় ভারসাম্য আনবেন অথচ দলের মধ্যে ভোগ করবেন একক ক্ষমতা ও কর্তৃত্ব। বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচনের বিরুদ্ধে কথা বলে মুখে খই ফোটাবেন আর নিজে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় দলনেত্রী হতে কুণ্ঠাবোধ করবেন না— এগুলো কি স্ববিরোধী নয়?

খালেদা জিয়া তার ভাষণে ‘ভিশন-২০৩০’ ঘোষণা দিয়ে কারও কারও বাহ্বা কুড়িয়েছেন। এটাকেই বিএনপির রাজনীতির ইতিবাচক মোড় পরিবর্তনের বড় দৃষ্টান্ত হিসেবে উল্লেখ করা হচ্ছে। কিন্তু দলের ভবিষ্যতের জন্য এত বড় একটি ঘোষণা খালেদা জিয়া এককভাবেই দিয়েছেন বলে শোনা যাচ্ছে। দলের কোনো ফোরামে, কোনো পর্যায়েই ‘ভিশন-২০৩০’ নিয়ে আলোচনা হয়নি, কথা হয়নি। দলের সিনিয়র নেতারা এ সম্পর্কে আগে কিছুই জানতেন না।

সেজন্যই প্রশ্ন উঠেছে, ষষ্ঠ জাতীয় সম্মেলনের মাধ্যমে রাজনৈতিক ও সাংগঠনিকভাবে বিএনপির ঘুরে দাঁড়ানো কিংবা শক্তি বৃদ্ধির সম্ভাবনা তৈরি হলো, নাকি দলের মধ্যে খালেদা জিয়া এবং তারেক রহমানের আধিপত্য, কর্তৃত্ব, ক্ষমতা আরও মজবুত ও প্রশ্নাতীত হলো?

লেখক : সাংবাদিক ও কলামিস্ট

[email protected]

সর্বশেষ খবর