মঙ্গলবার, ২৯ মার্চ, ২০১৬ ০০:০০ টা

মায়ের সঙ্গে দুর্ব্যবহারের পরিণাম ভয়াবহ

মাওলানা আবদুর রশিদ

সন্তানের ওপর মায়ের হক সবচেয়ে বেশি। এ হক লঙ্ঘন করা মারাত্মক অপরাধের শামিল। মায়ের মনে কষ্ট দেওয়া, তাকে শারীরিকভাবে কষ্ট দেওয়াও ঘোরতর অন্যায়। এ ধরনের অন্যায়ের জন্য মৃত্যু-পরবর্তী জীবনে কঠোর শাস্তির সম্মুখীন হতে হবে। মহানবী (সা.) একদিন ‘জান্নাতুল বাকি’ কবরস্থানের পাশ দিয়ে যাচ্ছিলেন। হঠাৎ কবরের দিকে নজর পড়ে গেল। কবরে ভীষণ আজাব চলছিল। কবরবাসী ছিল যুবক। আল্লাহর রসুল (সা.) সাহাবিদের গ্রামের ভিতর পাঠালেন এবং তাঁর কাছে আসতে বললেন। সাহাবিরা কবরস্থানের চারপাশের গ্রামবাসীকে দ্রুত কবরস্থানে আসার জন্য আহ্বান করলেন। এলাকাবাসী একের পর এক আসতে শুরু করল। নবী করিম (সা.) জিজ্ঞাসা করতে শুরু করলেন, এ কবরবাসীকে কি তোমরা চেনো? উত্তরে বললেন, না, আমরা চিনি না। এভাবে জিজ্ঞাসা করতে থাকেন কিন্তু পরিচয় পাওয়া যায় না। হঠাৎ নজর করে দেখেন এক বৃদ্ধা মহিলা লাঠির ওপর ভর করে আসছেন। নবী করিম (সা.)-এর কাছে এসে সালাম দিলেন। নবী করিম (সা.) বুড়িকে বললেন, কবরবাসীকে কি চেনেন। বুড়ি উত্তর দিলেন কবরবাসী আমার ছেলে। নবী করিম (সা.) বললেন, ছেলে কি নামাজ-রোজা করত না? বুড়ি উত্তর দিলেন, হ্যাঁ, নামাজ-রোজা করত। তাহলে বলুন আপনার সঙ্গে কেমন আচরণ করত। বুড়ি উত্তর দিলেন, আমার সঙ্গে ভালো আচরণ করেনি। ছেলে থাকত দেশের বাইরে। বাড়িতে এলে আমি দৌড়ে ছেলের কাছে গেলাম। কিন্তু বউমা ছেলের কানে কী যেন বলল, আমি দরজার কাছে গেলাম। ছেলে আমাকে ধাক্কা দিল। আমি দরজার সিঁড়ির ওপর পড়ে যাই। হুজুর, আমার কোমরে বা মাজায় ব্যথা। আমি হাঁটতে পারি না, লাঠির ওপর ভর করে হাঁটি। নবী (সা.) তাকে বললেন, তুমি তোমার ছেলেকে মাফ করে দাও। বুড়ি বললেন, না, আমি মাফ করব না। নবী (সা.) আল্লাহর কাছে দোয়া করলেন, হে আল্লাহ! বুড়ির অন্তরের চোখ কবরের দিকে ফিরিয়ে দাও। দোয়ার পরে বুড়ির অন্তরের চোখ খুলে গেল। বুড়ি বলল, হুজুর আমার ছেলের কবরে আজাব চলছে। আমি ছেলেকে মাফ করে দিলাম। আমার ছেলেকে আল্লাহ যেন মাফ করে দেন। আল্লাহর পক্ষ থেকে জবাব এলো, তোমার ছেলেকে ক্ষমা করা হয়েছে এবং জান্নাতের ফরাশ বিছানা বিছিয়ে দেওয়া হয়েছে। অতএব, জান্নাত পেতে হলে মায়ের খিদমত অবশ্যই প্রয়োজন। (নুজহাতুল বাসাতিন)।

লেখক : ইসলামী গবেষক

সর্বশেষ খবর