বুধবার, ৩০ মার্চ, ২০১৬ ০০:০০ টা

হাইকোর্টের বিজ্ঞচিত রায়

সংঘাত সৃষ্টির আশঙ্কা কেটে গেল

ইসলাম রাষ্ট্রধর্ম হিসেবে সংবিধানে অন্তর্ভুক্তিকে চ্যালেঞ্জ করে আনীত রিট আবেদন খারিজ করে দিয়েছেন হাইকোর্ট। একই সঙ্গে রিট আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে জারি করা রুলও খারিজ করা হয়েছে। বিচারপতি নাঈমা হায়দার, বিচারপতি কাজী রেজা-উল হক এবং বিচারপতি মো. আশরাফুল কামালের সমন্বয়ে হাইকোর্ট বেঞ্চের এ রায়ের ফলে রাষ্ট্রধর্ম হিসেবে ইসলাম সংবিধানে বহাল থাকবে। ২৮ বছর আগে স্বৈরাচার ও সাম্প্রদায়িকতা প্রতিরোধ কমিটির পক্ষ থেকে যে রিট দাখিল করা হয়েছিল সোমবার তার নিষ্পত্তি হয়েছে সংক্ষিপ্ত আদেশের মাধ্যমে। আদালত বলেছেন, ওই সংগঠনের রিট করার এখতিয়ার না থাকায় তা বাতিল করা হলো। আদালতের এই বিজ্ঞচিত রায়ের ফলে রাষ্ট্রধর্ম নিয়ে দেশে সংঘাত সৃষ্টির যে আশঙ্কা মাথাচাড়া দিয়ে উঠছিল তাতে বাদ সাধা হলো। স্মর্তব্য, সংবিধানে ইসলামকে রাষ্ট্রধর্ম হিসেবে অন্তর্ভুক্তি করা হয় ১৯৮৮ সালে। এ অন্তর্ভুক্তির বিরুদ্ধে সাবেক প্রধান বিচারপতি কামালউদ্দিন হোসেনসহ ১৫ জন বিশিষ্ট নাগরিক এ রিট আবেদন করেন। তারপর থেকেই আবেদনটি হাইকোর্টে বিচারাধীন ছিল। নবম সংসদে সংবিধান সংশোধনীর জন্য গঠিত বিশেষ কমিটি রাষ্ট্রধর্ম বহাল রাখার পক্ষে সুপারিশ করে। এ পরিপ্রেক্ষিতে অন্যতম রিটকারী সাংবাদিক ফয়েজ আহমদ রিটটি শুনানির জন্য ২০১১ সালের জুনে একটি সম্পূরক আবেদন করেন। এ আবেদনের ভিত্তিতে বিচারপতি এএইচএম শামসুদ্দিন চৌধুরী ও বিচারপতি গোবিন্দ চন্দ্র ঠাকুরের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ ওই বছরের ৮ জুন একটি রুল জারি করেন। রুলে সংবিধানে রাষ্ট্রধর্ম হিসেবে ইসলামকে অন্তর্ভুক্তির বিধান কেন অসাংবিধানিক ও বেআইনি ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চাওয়া হয়। ২০১১ সালে সংবিধানের পঞ্চদশ সংশোধনীতে রাষ্ট্রধর্ম হিসেবে ইসলাম বহাল থাকলে রিট আবেদনকারী পক্ষ পঞ্চদশ সংশোধনীতে থাকা ওই বিধান চ্যালেঞ্জ করে সম্পূরক আবেদন করেন এবং শুনানি শেষে বিচারপতি এএইচএম শামসুদ্দিন চৌধুরীর নেতৃত্বাধীন হাইকোর্ট বেঞ্চ সম্পূরক রুল জারি করেন। সোমবার হাইকোর্টের বৃহত্তর বেঞ্চ রিট আবেদন নাকচ করেছেন মূলত রিট আবেদনকারীদের এ ধরনের রিট করার এখতিয়ার না থাকার কারণে। তাদের এই বিজ্ঞচিত আদেশের মাধ্যমে দেশের মানুষের সংবেদনশীলতার প্রতি সম্মান দেখানো হয়েছে। যারা রাষ্ট্রধর্ম ইস্যুটি নিয়ে পানি ঘোলার পাঁয়তারা করছিলেন, তাদের অশুভ ইচ্ছার বাদ সাধা হয়েছে।  এদিক থেকে রায়টি ভবিষ্যতে দৃষ্টান্তমূলক রায় হিসেবে বিবেচিত হবে বলে আমাদের বিশ্বাস।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর