বুধবার, ৩০ মার্চ, ২০১৬ ০০:০০ টা

সুন্দরবনে অগ্নিকাণ্ড

দায়ী ব্যক্তিদের আইনের আওতায় আনুন

সুন্দরবনের চাঁদপাই রেঞ্জে আবারও আগুন লেগেছে। ১৯ ঘণ্টার ব্যবধানে রবিবার ও সোমবার অগ্নিকাণ্ডে সুন্দরবনের বেশ কিছু গাছপালা লতাগুল্ম পুড়ে গেছে। সুন্দরবনের শরণখোলা ও চাঁদপাই রেঞ্জে প্রায়ই অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। ২০০২ সাল থেকে এই রেঞ্জে এ পর্যন্ত ১৮ বার আগুন লেগেছে এবং পুড়ে গেছে প্রায় ৬০ একর বনভূমি। বনবিভাগের কর্মীদের অভিযোগ, এসব অগ্নিকাণ্ডের সঙ্গে জেলেদের সম্পর্ক রয়েছে। সুন্দরবনের ওই এলাকায় বর্ষা মৌসুমে জাল পেতে মাছ ধরার জন্য জেলেরা পরিকল্পিতভাবে প্রায় প্রতি বছরই আগুন লাগায়। যে কারণেই অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটুক না কেন তা বিশ্বের বৃহত্তম এই বাদাবনের জন্য হুমকি সৃষ্টি করছে। গত ১৪ বছরে অগ্নিকাণ্ডে ৬০ একর বনভূমি পুড়ে যাওয়ার বিষয়টিও উদ্বেগজনক। অভিযোগ রয়েছে, বনবিভাগের কর্মীদের অসততা ও গাফিলতির কারণেই একের পর এক আগুন লাগার ঘটনা ঘটছে। তারা আর্থিক সুবিধার বিনিময়ে বন এলাকায় জেলেদের আনাগোনা এবং আস্তানা গাড়ার সুযোগ দেয়। জেলেরা তাদের নিজেদের সুবিধার জন্য বনবিধ্বংসী তত্পরতায় লিপ্ত হতেও পিছপা হয় না। বনকর্মীদের মধ্যে সততার অভাব না থাকলে সুন্দরবনে জেলেদের অবাধ আনাগোনা যেমন সম্ভব হতো না তেমন অগ্নিকাণ্ডের ঘটনাও হয়তো এড়ানো যেত। সুন্দরবন কর্তৃপক্ষের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, আগুন লাগা এলাকায় বড় ধরনের কোনো গাছপালা ছিল না। আগুনে কিছু গাছপালা পুড়ে গেছে। ক্ষয়ক্ষতি সীমিত হলেও সুন্দরবনের মতো বিশাল বনাঞ্চলে আগুন লাগার ঘটনা যে ভয়াবহ বিপদের কারণ ঘটাতে পারে তা সহজে অনুমেয়। আমরা আশা করব সবশেষ দুটি অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা সম্পর্কে তদন্ত করা হবে এবং এ জন্য কেউ দায়ী হলে তাদের আইনের আওতায় আনা হবে। সুন্দরবন সুরক্ষায় বনবিভাগের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের দায়িত্বশীলতার কোনো বিকল্প নেই। এ ক্ষেত্রে ঘাটতি আছে বলেই বাঘের সংখ্যা কমতে কমতে প্রায় শূন্যের পর্যায়ে নেমে এসেছে।  বন উজাড় হওয়াও এড়ানো যাচ্ছে না। অস্তিত্বের স্বার্থে এ ব্যাপারে সংশ্লিষ্টদের জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে হবে।

সর্বশেষ খবর