শুক্রবার, ১ এপ্রিল, ২০১৬ ০০:০০ টা

ইসলামে জ্ঞানার্জন ইবাদতের সমতুল্য

মাওলানা মুহাম্মদ আশরাফ আলী

ইসলামে জ্ঞানার্জনকে ইবাদতের সমতুল্য হিসেবেও বিবেচনা করা হয়েছে। পবিত্র কোরআনের সূরা ফাতিরের ২৮নং আয়াতে ইরশাদ করা হয়েছে আল্লাহর বান্দাদের মধ্যে শুধু জ্ঞানীরাই আল্লাহকে ভয় করে। এই আয়াতের মাধ্যমে বোঝানো হয়েছে  জ্ঞানী যেহেতু আল্লাহর কুদরত সম্পর্কে অভিহিত সেহেতু সে আল্লাহকে ভয় করা বা তার প্রতি অনুগত থাকাকে করণীয় কর্তব্য বলে ভাবে। ইসলামে যে জ্ঞানার্জনের তাগিদ দেয়া হয়েছে তার লক্ষ্য হলো আল্লাহর সন্তুষ্টি বিধান। ইসলামী বিধান অনুযায়ী জ্ঞানার্জনের লক্ষ্য হওয়া উচিত ইহলৌকিক কল্যাণের পাশাপাশি পরলৌকিক কল্যাণ নিশ্চিত করা। আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য অর্জিত জ্ঞানকে মানুষসহ আল্লাহর সকল সৃষ্টির কল্যাণে ব্যবহারের তাগিদ দেয় ইসলাম। অকল্যাণ ও অশান্তির কাজে যাতে অর্জিত জ্ঞান ব্যবহৃত না হয় সেদিকে সতর্ক থাকারও তাগিদ দেওয়া হয়েছে কোরআন ও হাদিসের নির্দেশনায়। রসুল (সা.) বলেছেন : ‘যে শিক্ষার (্জ্ঞানের) সাহায্যে আল্লাহর সন্তোষ অর্জন করা সম্ভব, যে লোক নিছক দুনিয়া হাসিলের উদ্দেশে এমন শিক্ষা বা জ্ঞান শিখবে, কেয়ামতের দিন সে বেহেশতের ঘ্রাণও পাবে।’— আবু দাউদ, ইবনে মাজা।

তিরমিযী শরিফের হাদিসে রসুল (সা.) বলেন, ‘যে ব্যক্তি এই নিয়তে বিদ্যা অর্জন করল যে, সে তাবত জ্ঞানীজনদের মাঝে মহিমান্বিত হবে, বা মূর্খদের সঙ্গে বিতর্কে লিপ্ত হবে, কিংবা মানুষের মন তার প্রতি বিমুগ্ধ হবে, তাকে দোজখে ফেলে দেওয়া হবে।’ হজরত আবু হুরায়রা (রা.) বর্ণনা করেন, রসুল (সা.) বলেছেন : “কাউকে তার জ্ঞাত কোনো জ্ঞান সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা হলে সে তা গোপন করলে কেয়ামতের দিন তার কাঁধে আগুনের লাগাম পরিয়ে দেওয়া হবে।” যায়েদ ইবনে আরকামা (রা.) বর্ণনা করেন, রসুল (সা.)-এর দোয়াগুলোর মধ্যে একটি দোয়া এমন ছিল, ‘যে শিক্ষা (পরকালীন) কল্যাণে আসে না, তা থেকে পরিত্রাণ কামনা করি’। রসুল (সা.) আরও বলেন : ‘যে ব্যক্তি আল্লাহর জন্য নয় বরং অন্য কিছু লাভের আশায় জ্ঞানার্জন করে, তার চিরস্থায়ী নিবাস হচ্ছে জাহান্নাম।’— তিরমিজী।  হেলাল ইবনে আলা বলেন : ‘জ্ঞান অন্বেষণ করা খুবই কঠিন, তার হেফাজত করা তদপেক্ষ কঠিন, আর ইলম অনুযায়ী আমল, ইলম হেফাজত করা থেকে আরও দুরূহ ব্যাপার, আর আমল সালামত করা হচ্ছে আমল করার চেয়ে অধিক শক্ত ব্যাপার।’

লেখক : ইসলামী গবেষক।

সর্বশেষ খবর