রবিবার, ১০ এপ্রিল, ২০১৬ ০০:০০ টা

কারাগার স্থানান্তর

নিশ্চিত হোক মানবিক পরিবেশ

ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগার চলতি মাসেই পুরান ঢাকার নাজিমউদ্দিন রোড থেকে স্থানান্তর হচ্ছে কেরানীগঞ্জে। প্রধানমন্ত্রী কেরানীগঞ্জে ৩১ একর জমির ওপর নির্মিত অত্যাধুনিক কারাগারের উদ্বোধন করবেন আজ। পুরান ঢাকার নাজিমউদ্দিন রোডের বর্তমান কারাগারের জমিতে ঠাঁই পাবে জাদুঘর, পার্ক, ট্রেনিং ইনস্টিটিউট, ব্যায়ামাগার ও কনভেনশন সেন্টার। কেরানীগঞ্জে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগার স্থানান্তর কারাবন্দীদের জন্য কিছুটা হলেও স্বস্তি বয়ে আনবে। নতুন কারাগারের আয়তন পুরান কারাগারের প্রায় দ্বিগুণ। নাজিমউদ্দিন রোডের পুরান কারাগারে বন্দীর সংখ্যা বর্তমানে ৮ হাজার। নতুন কারাগারের বন্দী ধারণক্ষমতা ৪ হাজার ৫৯০ জন। স্বভাবতই নতুন কারাগারেও ধারণ ক্ষমতার চেয়ে বেশি বন্দীকে রাখা হবে। তবে বন্দীদের জন্য স্বস্তি বয়ে আনবে নতুন কারাগারে পুরান কারাগারের মতো শ্বাসরুদ্ধকর অবস্থায় তাদের থাকতে হবে না। সাধারণ কয়েদিদের জন্য নির্মিত ভবনের প্রতিটি কক্ষে পর্যাপ্ত বৈদ্যুতিক পাখা থাকবে। কক্ষের পাশেই থাকবে বাথরুম। ২০ হাত দৈর্ঘ্য ও ১০ হাত প্রস্থের প্রতিটি কক্ষে ১৩ জন বন্দীকে রাখা হবে। পুরান কারাগারে একই পরিসরে অন্তত তিনগুণ বন্দী রাখা হতো। অন্য সবার মতো অপরাধীরাও মানুষ। কারাগারে তাদের রাখা হয় অপরাধের সাজা হিসেবে। অপরাধ থেকে তারা যাতে দূরে থাকে সে মানসিকতা সৃষ্টির জন্য। কিন্তু কারাগারের অমানবিক অবস্থা অনেক ক্ষেত্রে সংশোধিত হওয়ায় মনোভাবে ব্যত্যয় ঘটায়। বন্দীদের মধ্যে ক্ষোভেরও সৃষ্টি করে। যে ক্ষোভ অনেক সময় আরও বেশি অপরাধে জড়িয়ে পড়ার ইন্ধন জোগায়। কেরানীগঞ্জের নতুন কারাগার বন্দীদের জন্য কিছুটা হলেও স্বস্তিকর কারাজীবন নিশ্চিত করবে। দেশের প্রতিটি কারাগারে ধারণ ক্ষমতার চেয়ে দ্বিগুণ বা তার চেয়ে বেশি বন্দী রয়েছে। বন্দীদের জন্য মানবিক জীবন নিশ্চিত করতে প্রতিটি কারাগার সংস্কারের উদ্যোগ নেওয়া দরকার। বহুতল ভবন নির্মাণ করে বর্তমানের শ্বাসরুদ্ধকর অবস্থার অবসান ঘটানো যেতে পারে। নাজিমউদ্দিন রোডের পুরান কারাগারের স্থানে জাদুঘর, পার্ক, ব্যায়ামাগার ও কনভেনশন সেন্টার ইত্যাদি তৈরির যে পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে তা প্রশংসার দাবিদার।  পুরান ঢাকার সংশ্লিষ্ট এলাকার মানুষের চাহিদা পূরণে এসব স্থাপনা কার্যকর ভূমিকা রাখবে বলে আমাদের বিশ্বাস।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর