রবিবার, ১০ এপ্রিল, ২০১৬ ০০:০০ টা
পাঠক কলাম

এগিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশ

এগিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশ। এগিয়ে যাচ্ছে বাঙালি জাতি। স্বাধীনতার ৪৫ বছরে বাঙালি জাতি কতটা এগিয়েছে তা নিয়ে মূল্যায়ন হচ্ছে। এগিয়ে যাওয়ার জন্য পেছনের সাফল্য ও ব্যর্থতার মূল্যায়ন একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের আগে প্রতিটি ক্ষেত্রেই বাংলাদেশের মানুষ ছিল পাকিস্তানিদের চেয়ে পিছিয়ে। মুক্তিযুদ্ধে পাকিস্তানি হানাদারদের নৃশংসতায় বাংলাদেশ ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়। মুক্তিযুদ্ধে জয়ী হলেও বাংলাদেশ তার অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখতে পারবে কিনা তা নিয়ে দেখা দেয় সংশয়। কিন্তু রূপকথার ফিনিক্স পাখির মতো বাঙালিরা ভস্মীভূত ছাই থেকে উড়াল দেওয়ার কৃতিত্ব দেখিয়েছে। ৪৫ বছরের ব্যবধানে পাকিস্তান যখন ব্যর্থ রাষ্ট্র হিসেবে মূল্যায়িত হচ্ছে অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে বাংলাদেশ তখন সম্ভাবনার নাম। ৪৫ বছরের ব্যবধানে বাংলাদেশের খাদ্য উৎপাদন ৯৬ লাখ টন থেকে ৩ কোটি ৬০ লাখ টনে পৌঁছেছে। ক্ষুধা নিরসনে বাংলাদেশের অর্জন সার্ক দেশগুলোর মধ্যে সর্বোচ্চ অর্থাৎ পাকিস্তান ও ভারতের চেয়েও ভালো। ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মানুষের গড় আয়ু ছিল ৩৯ বছর। সে গড় আয়ু ৬৯ বছরে পৌঁছেছে। পাকিস্তানিদের গড় আয়ু এখন ৬৫ বছর। শিশুমৃত্যু রোধেও পাকিস্তানের চেয়ে ভালো অবস্থানে বাংলাদেশ। পাকিস্তানে যেখানে প্রতি হাজারে মৃত্যুবরণ করে ৫৯ জন এক বছরের কম বয়সের শিশু, সেখানে বাংলাদেশে এই হার ৩৭। পাকিস্তানসহ দক্ষিণ এশিয়ার সব দেশে যেখানে চলতি হিসাবে ঘাটতি রয়েছে, সেখানে বাংলাদেশের উদ্বৃত্ত ২ দশমিক ১২ বিলিয়ন ডলারেরও বেশি। ২০১২-১৩ অর্থবছরে বাংলাদেশের রপ্তানি আয় ২৭ বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়ে গেলেও এ সময়ে পাকিস্তানের আয় ছিল ২৪ দশমিক ৫ বিলিয়ন ডলার। একই সময়ে পাকিস্তানের বৈদেশিক বাণিজ্য ঘাটতি ছিল ২০ বিলিয়ন ডলার, বাংলাদেশের মাত্র ৭ বিলিয়ন ডলার। বাংলাদেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভও পাকিস্তানের প্রায় দ্বিগুণ। বাংলাদেশের জিডিপি প্রবৃদ্ধির হারও ছাড়িয়ে গেছে পাকিস্তানের প্রবৃদ্ধিকে। চলতি বছর বাংলাদেশের জিডিপি প্রবৃদ্ধির হার ৭ শতাংশ ছাড়িয়ে যাবে বলে আশা করা হচ্ছে। আর পাকিস্তানের প্রবৃদ্ধি আশা করা হচ্ছে এর অর্ধেক। বাংলাদেশের রেমিট্যান্স আয় পাকিস্তানের দেড়গুণ। মাথাপিছু সঞ্চয় বাংলাদেশে ২৮ শতাংশ, পাকিস্তানে ১৫ শতাংশ। ৪৫ বছরে বাঙালি জাতির এ অর্জন সম্ভব হয়েছে স্বাধীন জাতি হিসেবে আত্মপ্রকাশের কারণে।  এ স্বাধীনতার জন্য কৃতজ্ঞতা ৩০ লাখ শহীদকে।

আলহাজ ইসমাইল হোসেন

মুক্তিযোদ্ধা, মিরপুর, ঢাকা।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর