রবিবার, ১০ এপ্রিল, ২০১৬ ০০:০০ টা
স্মরণ

মহাত্মা হ্যানিম্যান

মহাত্মা হ্যানিম্যান

পৃথিবীতে যতদিন হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসা থাকবে ততদিন হোমিওপ্যাথির জনক মহাত্মা হ্যানিম্যানের নাম মানুষের হৃদয়ে অমর হয়ে থাকবে। মহাত্মা হ্যানিম্যান চিকিৎসা বিজ্ঞানের সর্বোচ্চ ডিগ্রিধারী চিকিৎসা বিজ্ঞানী, বহু ভাষাবিদ, অনুবাদক ও গবেষক। তিনি জার্মানির স্যাক্সনি প্রদেশে মেসেন শহরে ১৭৫৫ সালের ১০ এপ্রিল জন্ম নেন। তার পিতা গভফ্রেড হ্যানিম্যান আর্থিকভাবে সচ্ছল ছিলেন না। তিনি পুত্র হ্যানিম্যানের শিক্ষার ব্যয় জোগাড়ে সমর্থ ছিলেন না। তাকে ব্যবসায়ে নিযুক্ত করার মনস্থ করেছিলেন। কিন্তু স্যামুয়েল হ্যানিম্যানের ধীশক্তি ও অধ্যবসায় লক্ষ্য করে শিক্ষকগণ তার পিতাকে লেখাপড়া বন্ধ না করার জন্য রাজি করান। অতঃপর তিনি বৃত্তির অর্থে অধ্যয়ন চালিয়ে যান এবং শেষ পর্যন্ত চিকিৎসা পদ্ধতির (অ্যালোপ্যাথিক) সর্বোচ্চ ডিগ্রি লাভ করেন; জার্মানের স্টেট ফিজিশিয়ানরূপে নিযুক্ত হন।

অ্যালোপ্যাথিক চিকিৎসা পদ্ধতির পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া, রোগের পুনরাক্রমণ, আন্দাজ-অনুমাননির্ভর চিকিৎসা পদ্ধতি প্রভৃতি কারণে প্রচলিত চিকিৎসা ব্যবস্থায় হ্যানিম্যানের সংশয় ও অনাস্থা বদ্ধমূল হতে থাকে। তিনি লক্ষ্য করলেন হয়তো কাউকে তিনি জ্বরের চিকিৎসা করলেন জ্বর তার সারল ঠিকই কিন্তু তিনি উপহার পেলেন দুর্বলতা, মাথার মধ্যে ভোঁ ভোঁ করা, অরুচি প্রভৃতি নতুন উপসর্গ। অর্থাৎ এক রোগ চিকিৎসা করতে গিয়ে রোগী উপহার পায় বেশ কয়েকটি রোগ।

স্যামুয়েল হ্যানিম্যান ১৭৯০ খ্রিস্টাব্দে হোমিওপ্যাথিক প্রথম ওষুধ চায়না আবিষ্কার করেন। ডা. কালেনের মেটিরিয়া মেডিকা অনুবাদ করার সময় তিনি লক্ষ্য করেন যে সিনকোনার রস একটু বেশি মাত্রায় খেলে কম্প দিয়ে জ্বর হয়। তখন তিনি নিজে উক্ত রস খেয়ে দেখেন ও পরিবারের অন্য সদস্যদের ও বন্ধুবান্ধবকে খাওয়ান। দেখেন সবারই কম্প দিয়ে জ্বর আসছে ও অন্যান্য কিছু লক্ষণ দেখা দিচ্ছে।  তিনি ওই লক্ষণসমূহ লিপিবদ্ধ করে রাখেন এবং পরে ওই রকম লক্ষণযুক্ত কোনো রোগী এলে তাকে স্বল্প মাত্রার উক্ত সিনকোনার রস খাইয়ে দেখলেন তার ওই কম্প দিয়ে আসা জ্বর সেরে গেছে ও অন্যান্য লক্ষণগুলোও চলে গেছে। এই সূত্র ধরে তিনি তার জীবিতকাল অবধি ৯৯টা ওষুধ পরীক্ষা করেন। এই মহান চিকিৎসা বিজ্ঞানী ১৮৪৩ সালে মৃত্যুবরণ করেন।

ডা. আলমগীর মতি

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর