সোমবার, ১১ এপ্রিল, ২০১৬ ০০:০০ টা

রডের বদলে বাঁশ

সরকারি ভবন নির্মাণে পুকুর চুরি

সরকারি ভবন নির্মাণের বছর না ঘুরতেই ধসে পড়ার নজির কম নয়। বেসরকারি উদ্যোগে নির্মিত ভবন যেখানে শত বছর পরও মাথা উঁচু করে থাকে সেখানে সরকারি ভবনের এহেন দশার কারণ কী তা নিয়ে গবেষণার কোনো প্রয়োজন আছে বলে মনে হয় না। বলা হয় সরকারি যে কোনো কাজের সঙ্গেই জড়িত থাকে লুটপাটের মহোৎসব। প্রতিটি সরকারি কাজ তদারকির জন্য একাধিক কর্তৃপক্ষ থাকে। নির্মাণকাজের মান নিশ্চিত করার বদলে নিজেদের পকেট পূর্তিকে তারা দায়িত্ব বলে ভাবায় বরাদ্দকৃত অর্থের অন্তত ৫০ ভাগই লুটপাটের শিকার হয়। চুয়াডাঙ্গার দর্শনায় আড়াই কোটি টাকা ব্যয়ে সরকারি ভবন নির্মাণে রডের পরিবর্তে বাঁশের কাবারি দিয়ে ঢালাইয়ের কাজ করার অভিযোগ উঠেছে। ঢালাই কাজে খোয়ার বদলে ব্যবহার করা হয়েছে পরিত্যক্ত সুরকিসহ নিম্নমানের উপকরণ। ইতিমধ্যে কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের তদন্তেও ভবন নির্মাণে সীমাহীন কারচুপির বিষয়টি ধরা পড়েছে। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশে ভবন নির্মাণকাজ বন্ধ রাখার নির্দেশও দেওয়া হয়েছে। কৃষি অধিদফতর সম্প্রসারণ বিভাগের ওই ভবনটি নির্মিত হচ্ছিল শুভঙ্করের ফাঁকি দিয়ে। রডের বদলে বাঁশের কাবারি, খোয়ার বদলে পরিত্যক্ত সুরকি ও নিম্নমানের উপকরণ দিয়ে ভবনটি তৈরি হচ্ছিল সংশ্লিষ্ট বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত ব্যক্তিদের জ্ঞাতসারেই। কিন্তু তাতে বাদ সাধে এলাকার যুবকরা। তারা গত বুধবার বিকালে দেখতে পায় রডের বদলে বাঁশের কাবারি দিয়ে ঢালাই কাজ চলছে। বিষয়টি নিয়ে তারা  হৈচৈ বাধালে কর্তৃপক্ষের টনক নড়ে। শেষ পর্যন্ত নির্মাণকাজ বন্ধ করেও  দেওয়া হয়। প্রশ্ন ওঠে নির্মাণকাজে যে পুকুর চুরির ঘটনা ঘটছিল তা সংশ্লিষ্ট অধিদফতরের কারোর নজরে পড়েনি কেন? অধিদফতরের কোন কোন কর্তাব্যক্তির সঙ্গে সমঝোতা থাকায় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান রডের বদলে বাঁশের কাবারি ব্যবহার করে ঢালাই দেওয়ার সাহস দেখাচ্ছিল এ বিষয়টিও উদঘাটিত হওয়া দরকার। সরকারি কাজে কীভাবে লুটপাট হচ্ছে প্রায় প্রতিটি সরকারি ভবন যেন তারই নজির। বিশেষ করে স্কুলভবন নির্মাণে যে কারচুপির আশ্রয় নেওয়া হচ্ছে তা দুর্ভাগ্যজনক। জনগণের টাকা লুটপাট বন্ধে        টেকসই ব্যবস্থা কীভাবে উদ্ভাবন করা যায় এ বিষয়টি সংশ্লিষ্ট সবাই ভেবে দেখবেন এমনটিই কাম্য।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর