সোমবার, ১১ এপ্রিল, ২০১৬ ০০:০০ টা

মিথ্যাচার থেকে দূরে থাকতে হবে

মাওলানা মুহম্মাদ আবদুল খালেক

ইসলামী শরিয়তে মিথ্যাচার কবিরা গুনাহ হিসেবে বিবেচিত। এটি একটি জঘন্য অন্যায়। যারা এ অপরাধের সঙ্গে যুক্ত তারা পারিবারিক, সামাজিক এবং রাষ্ট্রীয় জীবনে অকল্যাণ বয়ে আনে। রসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, ‘তোমার যে ভাই তোমাকে সত্যবাদী বলে বিশ্বাস করে অথচ তুমি তাকে কোনো মিথ্যা সংবাদ দিলে, এটা চরম বিশ্বাসঘাতকতা।’— (বোখারি)।

রসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সব ধরনের মিথ্যাচারের কঠোর সমালোচনা করেছেন এবং তা থেকে অনুসারীদের দূরে থাকার তাগিদ দিয়েছেন। বোখারি শরিফের হাদিসে বলা হয়েছে, হজরত ইবনে মাসউদ (রা.) বলেন, ‘কোনো বান্দা নিরবচ্ছিন্নভাবে মিথ্যা বলতে বলতে তাতে চির অভ্যস্ত হয়ে পড়লে, তার অন্তরে প্রথমে একটা কালো দাগ পড়ে। অবশেষে পুরো অন্তরই কালো হয়ে যায়। তখন সে আল্লাহর কাছে মিথ্যাবাদী রূপে তালিকাভুক্ত হয়— মুয়াত্তায়ে ইমাম মালেক।

অতএব, যাতে সুনিশ্চিত মঙ্গল ও কল্যাণ রয়েছে এমন কথা ছাড়া মুসলমানের কোনো বাহুল্য কথা বলাই উচিত নয়। কেননা, নীরবতা অবলম্বনেই রয়েছে প্রশান্তি। আর প্রশান্তিই হলো সবচেয়ে কাঙ্ক্ষিত বিষয়। বোখারির এক হাদিসে আবু হোরায়রা (রা.) বর্ণনা করেন। রসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি আল্লাহ ও পরকালে বিশ্বাস রাখে, সে যেন ভালো কথা বলে, না হয় চুপ থাকে।’ এ হাদিসের মাধ্যমে সুস্পষ্টভাবে প্রতীয়মান হয়, সমাজের কাছে কল্যাণকারিতা সুস্পষ্টভাবে প্রকাশিত হয় না— এমন কথা বলা যাবে না। হজরত আবু মুসা (রা.) বলেন, আমি আরজ করলাম, ইয়া রসুলুল্লাহ! ‘মুসলমানদের মধ্যে উত্তম ব্যক্তি কে?’ তিনি বললেন, ‘যে তার জিহ্বা ও হাত থেকে অপর মুসলমানকে প্রশান্তিতে (নিরাপদে) রাখে’— বোখারি, মুসলিম, তিরমিজি ও নাসায়ি।

আরেক হাদিসে আছে, ‘যে এমন স্বপ্নের কথা বর্ণনা করে যা সে দেখেনি, সে যেন দুটি চুলের মধ্যে গিঁট দিতে সচেষ্ট, কিন্তু কোনো মতেই গিঁট লাগাতে সক্ষম হচ্ছে না’— বোখারি। ইবনে ওমর (রা.) বর্ণনা করেন, রসুল (সা.) বলেছেন, ‘আল্লাহর কাছে সবচেয়ে বড় মিথ্যা হচ্ছে, কেউ এ কথা বলা— আমি স্বপ্নে এরূপ দেখেছি।’ অথচ সে কিছুই দেখেনি —বোখারি। আল্লাহ আমাদের সব ধরনের মিথ্যাচার এবং অসততা থেকে দূরে থাকার তওফিক দান করুন।

লেখক : ইসলামী গবেষক।

সর্বশেষ খবর