বুধবার, ২৭ এপ্রিল, ২০১৬ ০০:০০ টা

গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরণ

দুর্ঘটনা রোধে সতর্কতা কাম্য

যানবাহন ও গৃহস্থালি কাজে ব্যবহৃত গ্যাস সিলিন্ডারগুলো নাগরিকদের জীবনের জন্য হুমকি হয়ে উঠেছে। নিম্নমানের সিলিন্ডার ও কিটস ব্যবহার এবং পাঁচ বছর পর পর রিটেস্ট করার নিয়ম না মেনে গাড়িচালকরা জীবন্ত বোমা নিয়ে যানবাহন চালাচ্ছেন। চালকদের পাশাপাশি গাড়ির গ্যাস সিলিন্ডার যাত্রী এমনকি পথচারীদের জীবনের জন্যও হুমকি সৃষ্টি করছে। প্রায়ই ঘটছে সিলিন্ডার বিস্ফোরণের ঘটনা। এসব দুর্ঘটনায় হতাহতের ঘটনাও ঘটছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, সিএনজি সিলিন্ডারে প্রতি বর্গইঞ্চিতে ৩২শ’ পাউন্ড চাপে গ্যাস ভরা হয়, ওই সময় গাড়ি ভয়াবহ বোমা হয়ে বিস্ফোরণের বিপদ সৃষ্টি করতে পারে, এ আশঙ্কা রোধে গ্যাস সিলিন্ডারের সঠিক মান রক্ষা করা জরুরি। এদিকে গৃহস্থালি কাজে ব্যবহৃত বেশ কিছু এলপিজি সিলিন্ডারও বিস্ফোরিত হয়েছে। মানহীন সিলিন্ডার ব্যবহার করায় নিরাপদ রান্নাঘর হয়ে উঠেছে বিস্ফোরণের বিপজ্জনক স্থান। বাধ্যবাধকতা থাকলেও সিএনজিচালিত গাড়ির পাঁচ বছরের বেশি পুরনো সিলিন্ডার পুনঃপরীক্ষায় কেউ উদ্যোগী হচ্ছে না। রিটেস্টের মেয়াদোত্তীর্ণ প্রায় দুই লাখ গাড়ি বিপজ্জনক সিলিন্ডার নিয়ে রাস্তায় চলছে। গত সোয়া দুই বছরে সিএনজি সিলিন্ডার বিস্ফোরণের ১১৩টি ঘটনায় অর্ধশত মানুষের মৃত্যু হয়েছে। আহতের সংখ্যাও বিপুল। ঘন ঘন দুর্ঘটনার কারণে সিএনজি সিলিন্ডারের নিরাপত্তায় উদ্বিগ্ন নিয়ন্ত্রক সংস্থা রূপান্তরিত প্রাকৃতিক গ্যাস কোম্পানি লি. মানহীন ও ঝুঁকিপূর্ণ সিলিন্ডার অনুসন্ধানে বিশেষ জোর দিচ্ছে। বিস্ফোরক পরিদফতরও  অননুমোদিত কনভার্সন ওয়ার্কশপ নিয়ে বরাবরই উদ্বিগ্ন। বাংলা নববর্ষের প্রথম দিনে সাভারের আশুলিয়ায় একটি সিএনজি ফিলিং স্টেশনে গ্যাস নেওয়ার সময় প্রাইভেট কারের সিলিন্ডার বিস্ফোরণে দুজন নিহত হয়েছেন। এমন ঘটনা প্রায়ই ঘটছে। স্মর্তব্য, গত জানুয়ারি পর্যন্ত সারা দেশে ২ লাখ ৮৮ হাজার ৩৮৯টি গাড়ি সিএনজিতে চলছে। এর মধ্যে ১ লাখ ৪৮ হাজার ৬টি গাড়ি দেশে সিএনজিতে রূপান্তরিত হয়েছে। বাকি ৪০ হাজার ৩৮৯টি গাড়ি সিএনজি অবস্থায় আমদানি হয়ে এসেছে। দূরপাল্লার বাণিজ্যিক যানবাহন বিশেষ করে বাস-ট্রাকের কোনো কোনোটিতে দুই থেকে ছয়টি সিলিন্ডার সংযোজন করা হয়। এসব যানবাহনের ২ লাখ সিলিন্ডারের পুনঃপরীক্ষার মেয়াদ শেষ হয়ে যাওয়ায় এর অনেকগুলো ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় চলাচল করছে।  জননিরাপত্তার স্বার্থে দুর্ঘটনা রোধে এ ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট নিয়ন্ত্রক সংস্থাগুলো এবং সরকার সক্রিয় হবে আমরা এমনটিই দেখতে চাই।

সর্বশেষ খবর