দেশের রেমিট্যান্স আয় কমছে। মধ্যপ্রাচ্যে বাংলাদেশি কর্মজীবীদের সংখ্যা কমে যাওয়া এবং সেখান থেকে পাঠানো রেমিট্যান্স হ্রাস পাওয়ায় এ খাতে দেশের মোট আয়ও হ্রাস পেয়েছে। দেশের মোট প্রবাসী আয়ের শতকরা ৪৫ শতাংশ আসে মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলো থেকে। মধ্যপ্রাচ্যে বাংলাদেশি কর্মী পাঠানোর গতি স্তব্ধ হয়ে আছে দীর্ঘদিন ধরে। প্রবাসী আয়ে তার নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে। বিশ্ব অর্থনৈতিক মন্দা, তেলের দামে ধস ইত্যাদি কারণে দুনিয়াজুড়েই অভিবাসী আয় হ্রাস পেয়েছে। তেলসমৃদ্ধ মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলো বাজেট প্রণয়নে ধারদেনা করতে বাধ্য হচ্ছে। বাংলাদেশ প্রতিদিনের এ সংক্রান্ত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, চলতি অর্থবছরের জুলাই-ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত আট মাসে মধ্যপ্রাচ্যের সৌদি আরব, কুয়েত ও আরব আমিরাত থেকে রেমিট্যান্স কমেছে আগের বছরের তুলনায় ৫ দশমিক ২৪ শতাংশ। ফলে সামগ্রিক প্রবাসী আয়েও পড়েছে নেতিবাচক প্রভাব। বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ২০১৪-১৫ অর্থবছরে মধ্যপ্রাচ্যের সৌদি আরব থেকে দেশে মোট ৩ হাজার ৩৪৫ মিলিয়ন মার্কিন ডলার অর্থাৎ প্রতি মাসে গড়ে প্রায় ২৭৯ মিলিয়ন মার্কিন ডলার আয় এসেছে। মধ্যপ্রাচ্যের আরেক দেশ সংযুক্ত আরব আমিরাত থেকে গত অর্থবছরে মোট ২ হাজার ৮২৪ মিলিয়ন মার্কিন ডলার অর্থাৎ মাসে গড়ে প্রায় ২৩৫ মিলিয়ন মার্কিন ডলার আয় এসেছে দেশে। অথচ চলতি অর্থবছরের জুলাই থেকে মার্চ ৯ মাসে সৌদি আরব থেকে ২ হাজার ২৩৯ মিলিয়ন মার্কিন ডলার অর্থাৎ মাসে গড়ে ২৪৮ মিলিয়ন ডলার রেমিট্যান্স এসেছে। চলতি অর্থবছরের একই সময়ে আরব আমিরাত থেকে এসেছে ১ হাজার ৯৯০ মিলিয়ন ডলার, অর্থাৎ মাসে গড়ে ২২১ মিলিয়ন ডলার। সামষ্টিক অর্থনীতির সব সূচকে ভালো অবস্থান থাকলেও প্রবাসী আয় হ্রাস পাওয়ার বিষয়টি উদ্বেগজনক। বিদেশে কর্মসংস্থানের নতুন নতুন বাজার সৃষ্টি এবং দক্ষ জনশক্তি রপ্তানির মাধ্যমে এ ক্ষেত্রে ইতিবাচক ফল পাওয়া যেতে পারে। মধ্যপ্রাচ্যে জনশক্তির বাজার টিকিয়ে রাখতে সর্বোচ্চ পর্যায়ে প্রভাব বিস্তারের চেষ্টা চালাতে হবে।