সোমবার, ৯ মে, ২০১৬ ০০:০০ টা

চতুর্থ ধাপের ইউপি নির্বাচন

এ ধারাবাহিকতা কাম্য ছিল না

শনিবার অনুষ্ঠিত চতুর্থ ধাপের ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন আগের তিন ধাপের ধারাবাহিকতা বজায় রাখার কৃতিত্ব দেখিয়েছে। গুলি, হামলা, পাল্টা হামলা, অস্ত্রের মহড়া ও রাতেই সিল উৎসবের অবতারণা ঘটিয়ে নির্বাচন সংশ্লিষ্টরা প্রমাণ করেছেন চোরা নাহি শোনে ধর্মের কাহিনী। চতুর্থ ধাপের নির্বাচনে হানাহানির শিকার হয়ে অন্তত সাতজনের প্রাণহানি ঘটেছে। আহতের সংখ্যাও বিপুল। আগের তিন ধাপের মতো চতুর্থ ধাপের নির্বাচনেও বিশাল জয় পেয়েছে নৌকার প্রার্থীরা। তাদের প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে আবির্ভূত হয়েছে দলের বিদ্রোহী প্রার্থী ও স্বতন্ত্ররা। তৃতীয় স্থানে থেকেছে বিএনপি। আগের তিন ধাপের নির্বাচনে সীমাহীন সন্ত্রাস, জালভোট, রক্তপাতের ঘটনা জনমনে ক্ষোভের সৃষ্টি করে। সংবাদ মাধ্যমে নির্বাচনের যে নাজুক চিত্র তুলে ধরা হয় তা নির্বাচন কমিশন, সরকার, আইনশৃৃঙ্খলা বাহিনী এবং সরকারি দল কারোর জন্যই সুখকর ছিল না। আশা করা হয়েছিল ধিক্কারের স্রোত থামাতে তারা চতুর্থ ধাপের নির্বাচন সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করার ক্ষেত্রে দায়িত্বশীলতার পরিচয় দেবেন। কিন্তু সে আশা দুরাশায় পরিণত হয়েছে, চতুর্থ ধাপের নির্বাচনেও আগের তিন ধাপের মতো লাগামহীন সহিংসতা, ভোট কারচুপি ও হানাহানির ধারাবাহিকতা অক্ষুণ্ন থাকায়। নির্বাচন হলো জনগণের উৎসব। নির্বাচনে ভোটারদের মতামত প্রকাশের সুযোগ তখনই ঘটে যখন তারা সুষ্ঠুভাবে তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগের সুযোগ পায়। কিন্তু আগের তিন ধাপের মতো চতুর্থ ধাপের ইউপি নির্বাচনও যে কোনো মূল্যায়নে সুষ্ঠুতার ধারে কাছেও অবস্থান নিতে পারেনি। সরকারি দলের অফিশিয়াল কিংবা বিদ্রোহী প্রার্থীদের কাছে নির্বাচন প্রক্রিয়ার সব কিছু অসহায় হয়ে পড়ে। দেশের নির্বাচন ব্যবস্থার জন্য চলমান ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন যে বিসংবাদ সৃষ্টি করেছে তা দুর্ভাগ্যজনক। আইনের শাসনের ব্যত্যয় ঘটিয়ে সর্বক্ষেত্রে যথেচ্ছতা যে বাজে নজির সৃষ্টি করেছে তা অকাম্য এবং অনাকাঙ্ক্ষিত। এ ক্ষেত্রে নির্বাচন কমিশন এবং সরকার তাদের ব্যর্থতার দায় এড়াতে পারেন না।

সর্বশেষ খবর