সোমবার, ৯ মে, ২০১৬ ০০:০০ টা

রমজানের প্রস্তুতি নেওয়ার মাস শাবান

মাওলানা মুহাম্মদ আশরাফ আলী

শাবান মাস মুসলমানদের কাছে একটি ফজিলতপূর্ণ মাস। রসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হিজরি চান্দ্র মাস রজব ও শাবান সম্পর্কে আবেগাপ্লুত হতেন। রজবের চাঁদ উঠলে তিনি সর্বশক্তিমান আল্লাহর দরবারে দোয়া করতেন আল্লাহ যাতে রজব ও শাবান মাসে বরকত দান করেন এবং রমজান পর্যন্ত পৌঁছার তাওফিক দান করেন। সিয়াম সাধনার মাস রমজানের প্রস্তুতি শুরু হয় শাবান থেকে। ১৫ শাবানের রাতে লাইলাতুল বরাত অর্থাৎ ভাগ্যরজনীর আগমন ঘটে। শ্রেষ্ঠ ৫টি রজনীর অন্যতম শ্রেষ্ঠ হিসেবে বিবেচনা করা হয় লাইলাতুল বরাতকে। যে রাতে আল্লাহর রহমত নাজিল হয় বান্দাদের জন্য। আল্লাহ এই পবিত্র রাতে বান্দার মনোবাঞ্ছনা পূরণের জন্য উন্মুখ থাকেন। শাবান মাসকে বলা হয় নফল ইবাদতের মাস। রসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম রমজান বাদে শাবান মাসে সর্বাধিক দিন নফল রোজা রাখতেন। তিরমিজি শরিফে উল্লিখিত হাদিস, হজরত আয়েশা (রা.) বলেন, তিনি রসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে শাবান মাসের মতো এত বেশি নফল রোজা রাখতে দেখেননি।

রসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম শাবান মাসের দিন তারিখ সম্পর্কে হিসাব রাখতেন। হজরত আয়েশা (রা.) বর্ণিত। তিনি বলেছেন রসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম পবিত্র শাবানের প্রতি এত বেশি লক্ষ্য রাখতেন যা অন্য কোনো মাসের ক্ষেত্রে রাখতেন না। (আবু দাউদ)

শাবান মাসজুড়ে রসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নফল রোজায় মগ্ন থাকতেন। লাইলাতুল বরাত অর্থাৎ ১৫ শাবানের রাতে তিনি জান্নাতুল বাকিতে গিয়ে মুমিনদের কবর জিয়ারত করতেন এবং তাদের জন্য দোয়া করতেন। লাইলাতুল কদরের পর লাইলাতুল বরাতকে ফজিলতপূর্ণ রাত বলে অভিহিত করা হয়েছে। এই রাতে আল্লাহতায়ালা বান্দাকে ক্ষমা করার জন্য উন্মুখ থাকেন।

আমাদের দেশে শবেবরাতের রাতে মসজিদে নফল ইবাদতের জন্য মুসল্লিদের ভিড় জমে। অনেকে দূর-দূরান্ত থেকে মসজিদে এসে নফল নামাজ, কোরআন তেলাওয়াত ও ইবাদত বন্দেগি করেন। তারা মনে করেন নিজের ঘরের বদলে মসজিদে এসে নফল ইবাদত করলে সওয়াব বেশি হবে। কিন্তু রসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের বাসগৃহ থেকে কয়েক পা এগোলেই মসজিদে নববীর মতো মসজিদ ছিল। অথচ তিনি নিজ গৃহে নফল ইবাদত করেছেন। হাদিস শরিফেও এটির উল্লেখ আছে। আল্লাহ আমাদের রমজানের প্রস্তুতি নেওয়ার জন্য শাবান মাসকে ব্যবহারের বিশেষ করে বেশি বেশি নফল ইবাদত করার তাওফিক দান করুন।

লেখক : ইসলামী গবেষক।

সর্বশেষ খবর