বাংলাদেশ ও ভারতের ছয় দিনব্যাপী সীমান্ত সম্মেলনে সীমান্ত হত্যা শূন্যের কোটায় নামিয়ে আনার ব্যাপারে যৌথ চেষ্টা চালানোর অঙ্গীকার করা হয়েছে। যে কোনো সীমান্ত হত্যাকাণ্ড যৌথভাবে তদন্ত করারও সিদ্ধান্ত নিয়েছে দুই পক্ষ। রাজধানীর পিলখানা বিজিবি সদর দফতরের সম্মেলন কক্ষে গত ১১ থেকে ১৬ মে সীমান্ত সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। দুই দেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনীর মহাপরিচালক সম্মেলনে স্ব স্ব দেশের প্রতিনিধিত্ব করেন। সম্মেলন শেষে যৌথ আলোচনার দলিলে দুই পক্ষ স্বাক্ষরদান করেন। এ দলিলে সীমান্ত হত্যাকাণ্ড এড়ানোর ক্ষেত্রে উভয় পক্ষের সদিচ্ছার বিষয়টি স্পষ্ট করা হয়েছে। বৈঠকে চুয়াডাঙ্গায় বিএসএফের গুলিতে এক বাংলাদেশি কিশোর নিহতের ঘটনায় দুঃখ প্রকাশ করে বিএসএফ মহাপরিচালক বলেছেন, এ ধরনের ঘটনা কোনোভাবেই কাম্য নয় এবং আশা করছি এমন ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঘটবে না। ওই ঘটনায় বিএসএফের একজন অফিসারসহ সাতজনকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। এ ঘটনার যৌথ তদন্ত করে আইন অনুযায়ী তাদের বিষয়ে পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে। সীমান্ত সম্মেলনে সীমান্তে গুলির ঘটনার জন্য গরু চোরাচালানকে দায়ী করা হয়। বাংলাদেশের পক্ষ থেকে বলা হয়, গরু চোরাচালানের জন্য ভারতীয় চোরাচালানিরা দায়ী। বিভিন্ন জায়গা থেকে গরু এনে সীমান্ত এলাকায় জড়ো করা হয়। এরপর সুযোগ বুঝে সেই গরু চোরাচালান করা হয়। আর তখনই গুলির ঘটনা ঘটে। এক্ষেত্রে ভারতীয় চোরাকারবারিদের ঠেকাতে পারলে সীমান্ত হত্যা অনেকটা শূন্যের কোটায় নামিয়ে আনা সম্ভব হবে। সম্মেলনে সীমান্ত হত্যা শূন্যের পর্যায়ে নামিয়ে আনা এবং যে কোনো হত্যাকাণ্ড যৌথভাবে তদন্তের যে সমঝোতা প্রতিষ্ঠিত হয়েছে তা একটি ইতিবাচক ঘটনা। এর ফলে কথায় কথায় গুলি চালানোর প্রবণতা কিছুটা হলেও রোধ করা সম্ভব হবে। সীমান্ত হত্যার ঘটনা যৌথভাবে তদন্তের সিদ্ধান্ত দুই দেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনীর সম্পর্কে ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে বলে আশা করা যায়। সীমান্ত থাকলেই সীমান্ত সমস্যা থাকে। সীমান্ত হত্যা সে সমস্যারই একটি। বন্ধুত্বের স্বার্থে স্পর্শকাতর এ সমস্যা রোধে দুই পক্ষকেই যত্নবান হতে হবে। শান্তির সীমান্ত প্রতিষ্ঠায় আন্তরিক হতে হবে।