শিরোনাম
রবিবার, ২২ মে, ২০১৬ ০০:০০ টা

কুষ্টিয়ায় হত্যাকাণ্ড

আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ব্যর্থতার ফল

বান্দরবানে সন্দেহভাজন জঙ্গিদের হাতে এক বৌদ্ধ ভিক্ষু নিহত হওয়ার এক সপ্তাহর মাথায় কুষ্টিয়ায় একই কায়দায় নিহত হলেন এক হোমিও চিকিৎসক এবং আহত হয়েছেন ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন সহকারী অধ্যাপক। নিহত হোমিও চিকিৎসক মীর সানাউর ছিলেন লালনভক্ত। তার সঙ্গে বিভিন্ন মাজারে বাউলগান শুনতে যেতেন শিক্ষক সাইফুজ্জামান। মীর সানাউর রহমান শহরের পূর্ব মজমপুর এলাকার মৃত মীর বজলার রহমানের ছেলে। আহত সাইফুজ্জামান হরিপুর ইউনিয়নের কান্তিনগর বোয়ালদহ এলাকার নূরুজ্জামান বিশ্বাসের ছেলে। দুই বছর ধরে দেশের বিভিন্ন এলাকায় পীর, ফকির, সুফিবাদীসহ মুক্তমনা ব্যক্তিদের যেসব খুনের ঘটনা ঘটেছে, সে সবের সঙ্গে কুষ্টিয়ার ঘটনার মিল রয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে এ হত্যাকাণ্ডের পেছনে জঙ্গিবাদের হাত থাকতে পারে। গত বছর ১০ ডিসেম্বর চুয়াডাঙ্গায় একই কায়দায় খুন হন স্থানীয় বাউল উৎসবের আয়োজক জাকারিয়া সরদার। এ ছাড়া ২০১৪ সালের নভেম্বরে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় সংলগ্ন চৌদ্দপাই এলাকায় কুপিয়ে হত্যা করা হয় সমাজবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক লালন ভক্ত এ কে এম শফিউল ইসলাম লিলনকে। কুষ্টিয়া সদরের বটতৈলের শিশিরমাঠ এলাকায় হোমিও চিকিৎসক মীর সানাউর রহমানের একটি বাগানবাড়ি রয়েছে। সেখানে দীর্ঘদিন ধরেই তিনি প্রতি শুক্রবার সকাল ৯টা থেকে বিকাল ৫টা পর্যন্ত এলাকার মানুষকে বিনা মূল্যে চিকিৎসা দিয়ে আসছিলেন। অন্য দিনগুলোর মতো গত শুক্রবার সকালে মোটরসাইকেলে করে বন্ধু সাইফুজ্জামানকে নিয়ে চিকিৎসার জন্য বাগানবাড়িতে যাওয়ার সময় আধা কিলোমিটার আগে অপর একটি মোটরসাইকেলে থাকা তিন অজ্ঞাত যুবক সানাউরের মোটরসাইকেলের গতিরোধ করে। কোনো কিছু বুঝে ওঠার আগেই তারা সানাউরকে কোপাতে শুরু করে। শিক্ষক সাইফুজ্জামানকেও তারা রেহাই দেয়নি। বাধা দিতে গিয়ে তিনি তার হাতের আঙ্গুল হারান। ঘাড়ে ও মাথায়ও দেওয়া হয় কোপ। তারপর পালিয়ে যায় ঘাতকেরা। কুষ্টিয়ায় লালনভক্ত এক হোমিও চিকিৎসককে হত্যা এবং তার বন্ধু বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষককে গুরুতর আহত করার ঘটনা দেশের জননিরাপত্তার জন্য হুমকি সৃষ্টি করেছে। অতীতে বিভিন্ন হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত সন্দেহভাজন জঙ্গিদের চিহ্নিত ও আইনের আওতায় আনার ব্যর্থতাই অপরাধীদের একের পর এক অঘটন ঘটাতে উৎসাহ জোগাচ্ছে। জননিরাপত্তা তথা স্বাধীনতা সার্বভৌমত্বের স্বার্থেই এ ব্যর্থতার অবসান ঘটানো আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর লক্ষ্য বলে বিবেচিত হওয়া উচিত।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর