বৃহস্পতিবার, ২৮ জুলাই, ২০১৬ ০০:০০ টা

ইসলামে আত্মীয়তার সম্পর্ক অলঙ্ঘনীয়

মাওলানা মুহাম্মদ আশরাফ আলী

ইসলামে রক্ত বা আত্মীয়তার সম্পর্ককে অলঙ্ঘনীয় হিসেবে দেখা হয়। আত্মীয়তা বা রক্তের সম্পর্ক আল্লাহ প্রদত্ত সম্পর্ক। আল্লাহ চান না বান্দা এ সম্পর্কের অমর্যাদা করুক। এ সম্পর্ককে ছিন্ন অথবা অস্বীকার করুক। পবিত্র কোরআনে আত্মীয়তার সম্পর্ককে বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে এবং এ সম্পর্ককে মর্যাদা দেওয়ার তাগিদ দেওয়া হয়েছে। রসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম পরকালে আত্মীয়তার সম্পর্ক ছিন্নকারীদের পরিণাম সম্পর্কে সতর্ক করে দিয়েছেন একাধিক হাদিসে।

হজরত আয়েশা সিদ্দিকা (রা.) বর্ণিত। তিনি বলেন, রসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, রাহিম বা আত্মীয়তা আরশের সঙ্গে ঝুলানো, সে বলে, যে আমাকে (আত্মীয়) মিলিয়ে রাখবে, আল্লাহ তাকে মিলিয়ে রাখুন। আর যে আমাকে ছিন্ন করবে, আল্লাহও তাকে ছিন্ন করুন। (মুসলিম শরিফ)। হজরত জুবাইর ইবনে মুতয়ীম (রা.) বর্ণিত, তিনি রসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে বলতে শুনেছেন, আত্মীয়তার সম্পর্ক ছিন্নকারী জান্নাতে প্রবেশ করবে না। (বুখারি শরিফ)।

হজরত আবু হুরায়রা (রা.) বর্ণিত— আরেক হাদিসে বলা হয়েছে, জনৈক ব্যক্তি রসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে জিজ্ঞাসা করল, হে আল্লাহর রসুল, আমার এমন কিছু আত্মীয় আছে যাদের সঙ্গে আমি আত্মীয়তার সম্পর্ক রক্ষা করে চলি, আর তারা আমার সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করে। আমি তাদের সঙ্গে ভালো ব্যবহার করি, কিন্তু তারা আমার সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করে। আমি সহিষ্ণুতার পরিচয় দিয়ে তাদের অপরাধ ক্ষমা করে দেই, কিন্তু তারা আমার সঙ্গে মূর্খের মতো ব্যবহার করে (এখন আমি কী করব)। রসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, যা তুমি বলেছ, যদি ঘটনা এমনই হয়ে থাকে তাহলে তুমি তাদের ওপর যেন উত্তপ্ত ছাই নিক্ষেপ করছ। অর্থাৎ তোমার ধৈর্যের আগুন তাদের শেষ করে দেবে এবং আল্লাহর পক্ষ থেকে সর্বদা তোমার সঙ্গে তাদের বিরুদ্ধে একজন সাহায্যকারী (ফেরেশতা) মজুদ থাকবে। (মুসলিম শরিফ)। হজরত আবদুর রহমান ইবনে আবি আওফা (রা.) বর্ণিত— তিনি বলেন, আমি রসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে বলতে শুনেছি যে সম্প্রদায়ের মধ্যে আত্মীয়তার বন্ধন ছিন্নকারী লোক আছে, সেই সম্প্রদায়ের ওপর আল্লাহর রহমত নাজিল হয় না। (বায়হাকি)। মহান আল্লাহতায়ালা আমাদের আত্মীয়-স্বজনদের হক আদায়ের তৌফিক দান করুন।

লেখক : ইসলামী গবেষক।

সর্বশেষ খবর