রবিবার, ১৪ আগস্ট, ২০১৬ ০০:০০ টা

অকল্যাণ থেকে দূরে থাকতে বলে ইসলাম

মাওলানা মুহম্মাদ শাহাবুদ্দিন

ইসলাম কল্যাণময় জীবন ব্যবস্থা। অকল্যাণের পথ থেকে দূরে থাকতে বলে এই ঐশী জীবনবিধান। হজরত আবু হোরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত। রসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন, তোমরা সাতটি ধ্বংসাত্মক বস্তু হতে দূরে থাকবে। সাহাবিগণ জিজ্ঞেস করলেন, সেগুলো কী? তিনি বললেন, আল্লাহর সঙ্গে কাউকে শরিক করা, জাদু করা, অন্যায়ভাবে কাউকে হত্যা করা, সুদ খাওয়া, এতিমের সম্পদ আত্মসাৎ করা, জিহাদের ময়দান থেকে পলায়ন করা এবং ইমানদার সতী-সাধ্বী নারীর ওপর অপবাদ আরোপ করা। —বোখারি ও মুসলিম। মুমিনদের মধ্যে উপরোক্ত খারাপ অভ্যাসগুলো থাকলে তা তাকে ধ্বংস করে দিতে পারে। যে কারণে তা থেকে দূরে থাকার নির্দেশ দিয়েছেন। সাহাবি হজরত মুয়াজ (রা.) বলেন, রসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাকে ১০টি বিষয়ে অসিয়ত করেছেন। সেগুলো হলো— ১. যদি তোমাকে হত্যা করা হয় কিংবা জ্বালিয়ে দেওয়া হয় তবুও আল্লাহর সঙ্গে কাউকে শরিক কর না। ২. কখনো পিতামাতার অবাধ্য হয়ো না, যদিও তারা তোমাকে পরিবার-পরিজন ও ধন-সম্পদ ত্যাগ করে চলে যেতে আদেশ করেন। ৩. স্বেচ্ছায় ফরজ নামাজ ত্যাগ কর না। কেননা, যে ব্যক্তি ইচ্ছা করে নামাজ ত্যাগ করবে, তার ব্যাপারে আল্লাহর কোনো জিম্মাদারি থাকবে না। ৪. কখনো মদ পান কর না। কেননা, তা সমস্ত অশ্লীলতার উৎস। ৫. সাবধান সর্বদা গোনাহ থেকে দূরে থেক। কেননা, পাপের দরুন আল্লাহর ক্রোধ আপতিত হয়ে থাকে। ৬. সাবধান! কখনো জিহাদের ময়দান থেকে পালিয়ে যেও না; যদিও বা সমস্ত মানুষ ধ্বংস হয়ে যায়। ৭. আর তোমার উপস্থিতিতে যখন মানুষের মাঝে মহামারী দেখা দেবে তখন সেখানেই অবস্থান করবে। ৮. তোমার সামর্থ্য অনুযায়ী পরিবার-পরিজনের জন্য ব্যয় করবে। ৯. তাদের শিক্ষা দেওয়ার জন্য লাঠি ফেলে দিও না। অর্থাৎ সন্তানদের আদরের পাশাপাশি প্রয়োজনে শাসনও করতে হবে। ১০. আল্লাহতায়ালার ব্যাপারে তাদের সর্বদা ভীতি প্রদর্শন কর। মুসনাদে আহমদ। মুমিনদের সব ধরনের মুনাফেকি অভ্যাস থেকেও দূরে থাকতে হবে। হজরত আবদুল্লাহ ইবনে আমর (রা.) বলেন, রসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন, চারটি বস্তু যার মধ্যে থাকবে সে নিরেট মুনাফেক। আর যার মধ্যে সেসবের একটি থাকবে, তা ত্যাগ না করা পর্যন্ত তার মধ্যে মুনাফেকির একটি স্বভাব থেকে যাবে- ১. যখন তার কাছে কোনো কিছু আমানত রাখা হয়, সে তা খেয়ানত করে। ২. যখন সে কথা বলে, মিথ্যা বলে। ৩. ওয়াদা করলে তা খেলাফ করে। ৪. এবং যখন সে কারও সঙ্গে ঝগড়া করে, তখন অশ্লীল বাক্য ব্যবহার করে।—বোখারি ও মুসলিম। আল্লাহ আমাদের সবাইকে সব ধরনের অন্যায় ও ক্ষতিকর তত্পরতা থেকে দূরে থাকার তাওফিক দান করুন।

লেখক : ইসলামী গবেষক।

সর্বশেষ খবর