বৃহস্পতিবার, ১৮ আগস্ট, ২০১৬ ০০:০০ টা

বঙ্গ বাহাদুরের অপমৃত্যু

হাতি রক্ষায় উদ্যোগ নিতে হবে

বানের জলে ভেসে আসা ভারতীয় হাতিটি শেষ পর্যন্ত মারা গেল। সোমবার এ হতভাগ্য প্রাণীটি অসুস্থ হয়ে পড়ে। বঙ্গ বাহাদুর নামের এ হাতিটিকে সুস্থ করতে চলে সব ধরনের চিকিত্সা। ইনজেকশনের মাধ্যমে ১২টি স্যালাইন দেওয়া হয়। কিন্তু মঙ্গলবার সকালে প্রাণশক্তির সবটুকুই হারিয়ে ফেলে হাতিটি। দেড় মাসেরও বেশি সময় আগে গত ২৮ জুন ভারতের আসাম রাজ্য থেকে বানের পানিতে ভেসে আসে চার টনেরও বেশি ওজনের হাতিটি। পরে ব্রহ্মপুত্র নদ বেয়ে কুড়িগ্রামের রৌমারী দিয়ে প্রবেশ করে বাংলাদেশে। এরপর বগুড়ার সারিয়াকান্দি হয়ে যমুনা নদীর পানিতে ভেসে সিরাজগঞ্জের কাজীপুর উপজেলার মনসুরনগর ইউনিয়নের দুর্গম ছিন্নারচরে ১১ দিন অবস্থান করে। ২৭ জুলাই হাতিটি চলে আসে জামালপুরের সরিষাবাড়ী উপজেলায়। বন্য হাতিটি আয়ত্তে আনতে সব ধরনের চেষ্টা চালায় প্রশিক্ষিত প্রাণীবিদ তথা সংশ্লিষ্ট বিষয়ের অভিজ্ঞজনরা। কিন্তু সব চেষ্টা ব্যর্থ হয়। শেষ পর্যন্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় চেতনানাশক ওষুধ ব্যবহার করে তার পায়ে শিকল পরানো হবে। গত বৃহস্পতিবার বঙ্গ বাহাদুরকে প্রথমবার চেতনানাশক ওষুধ দেওয়া হয়। এরপর চার পায়ে শিকল ও রশি দিয়ে কয়ড়া গ্রামের একটি আমগাছে বেঁধে রাখা হয়। গত শনিবার শিকল ভেঙে বঙ্গ বাহাদুর পালানোর চেষ্টা করে। রবিবার দ্বিতীয় দফায় চেতনানাশক দিয়ে চার পায়ে শিকল পরানো হয় এবং কয়ড়া গ্রামের খোলা মাঠে কাদা পানিতে বেঁধে রাখা হয়। সোমবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে বঙ্গ বাহাদুর অসুস্থ হয়ে শিকল পরা অবস্থায় কাদা পানিতে হঠাৎ পড়ে যায়। ১৮ ঘণ্টা পর নিথর হয়ে যায় তার দেহ। দল ছুট হাতিটি কার্যত অপমৃত্যুর শিকার হয়। ভারতের আসাম রাজ্যে হাতির চারণভূমি কমে আসায় মাঝে মাঝে দলছুট হয়ে হাতিরা চলে আসে বাংলাদেশেও। গ্রাম ও ফসলের মাঠ লণ্ডভণ্ডও করে দেয় তারা। বাংলাদেশ ও ভারতে হাতির সংখ্যা এখন মাত্র কয়েকশ। বিচরণভূমি কমে আসা ও অপঘাতে মৃত্যুর কারণে হাতির সংখ্যা কমে আসছে। এভাবে চলতে থাকলে শুধু বঙ্গ বাহাদুর নয় তার স্বগোত্রীয়দেরও একই পরিণত বরণ করতে হবে। হারিয়ে যাবে জীববৈচিত্র্য। যা এড়াতে হাতি রক্ষায় কার্যকর উদ্যোগ নিতে হবে।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর