শিরোনাম
বৃহস্পতিবার, ১৮ আগস্ট, ২০১৬ ০০:০০ টা

মসজিদ তিন কাজের স্থান

মুহিউস সুন্নাহ আল্লামা মাহমূদুল হাসান

মুসলিম শরিফের হাদিস, হজরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, আমি তোমাদের মসজিদে তিন কাজ করার অনুমতি দিলাম। এই তিন কাজের বাইরে কোনো কাজ করার অধিকার নেই। কাজগুলো হলো— মসজিদে বসে তোমরা কোরআন শরিফ তেলাওয়াত করবে, জিকির করবে, নামাজ আদায় করবে। সারা দুনিয়াতেই এই তিন কাজ ঘরে বাইরে চলবে, তবে বিশেষ জায়গা হলো মসজিদ। এই তিন কাজ কীভাবে করবে? জানতে হবে, শিখে নেবে এবং আমল করতে হবে।

এক. মসজিদে কোরআন শরিফ তেলাওয়াত করা, সহিহ-শুদ্ধ করে তেলাওয়াত করা। কিন্তু মসজিদে তেলাওয়াত নেই, কোরআন শরিফগুলো এতিমের মতো পড়ে আছে। যদি আমি মসজিদে নামাজের এক, দুই মিনিট আগে আসি আর পড়ি একটা শব্দ আলিফ লাম মিম; তাহলে কোরআন শরিফ পড়াও হলো আর দশ দশ করে ত্রিশটি নেকিও লাভ হলো, যা আমার দুনিয়া ও আখেরাতের কাজে আসবে। কিন্তু তা না করে গল্প করছি। সব সময় তো গল্প করই মসজিদে এসেও কেন? ইমাম সাহেব, মুয়াজ্জিন সাহেবের দায়িত্ব মসজিদের ভিতর কোরআন তেলাওয়াতের ব্যবস্থা রাখা এবং সহিহ-শুদ্ধ তেলাওয়াতের শিক্ষা দেওয়া। বিশেষ করে অন্তত মসজিদের নিয়মিত মুসল্লিদের দশটি সূরা শুদ্ধ করে দেওয়া।

দুই. মসজিদে জিকির করা। জিকির করার নিয়ম আছে, তাই জিকির করার আগে জিকিরের তরিকা শিখতে হবে। জিকিরের তরিকা কোনো আলেম অথবা নিজের মুরব্বির কাছ থেকে জেনে নিতে হবে। আবেগে সারা দিন-রাত জিকির করে লাভ নেই, পাগল হতে হবে। সব কিছু উছুল মতো করতে হয়। কিছু জিকির আছে যা আমাদের সবার সর্বদা করা উচিত। যেমন, প্রত্যেক নামজের পর তাছবীহে ফাতেমী, এস্তেগফার, আবার ফজর ও মাগরিবের নামাজের পরে কিছু আমল আছে। যেমন, ‘আল্লাহুম্মা আজিরনী মিনারনার’, সূরা হাশরের শেষ তিন আয়াত, সূরা ইয়াসিন ইত্যাদি আদায় করা।

তিন. নামাজ পড়া। নামাজের উপযুক্ত স্থান হচ্ছে মসজিদ। আল্লাহর রসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নিজে মৃত্যুর আগ পর্যন্ত মসজিদে গিয়ে জামাতের সঙ্গে নামাজ পড়েছেন। প্রত্যেক মুসলমানের উচিত পাবন্দীর সঙ্গে পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ জামাতে আদায় করা। আর নামাজের মধ্যে ফরজ, ওয়াজিব, সুন্নত, মুস্তাহাব জেনে সেই মোতাবেক আদায় করা। কিন্তু এখন মুসল্লিরা আসে, নামাজ পড়ে চলে যায়। নামাজ কীভাবে পড়তে হয় তা জানে না এবং তাদের মধ্যে শেখার আগ্রহও দেখা যায় না। যার যেমন মনে হয় সে সেভাবে দাঁড়ায়, সিজদা করে। এ জন্য প্রত্যেক মসজিদের ইমাম সাহেবের উচিত, তার মুসল্লিদের একটা একটা করে নামাজের মাসয়ালা বলে দেওয়া এবং সপ্তাহে কী মাসে একদিন মুসল্লিদের প্র্যাকটিক্যাল শিক্ষা দেওয়া।

মসজিদে যখন তেলাওয়াত বা জিকির করবে তখন খেয়াল করতে হবে আমার তেলাওয়াতের দ্বারা, আমার জিকিরের দ্বারা অন্য মুসল্লিদের যেন কষ্ট না হয়। যে নামাজরত তার নামাজে বা যে ধ্যানে আছে তার ধ্যানে যাতে ব্যাঘাত না ঘটে সে জন্য মসজিদে আস্তে আস্তে তেলাওয়াত করা বা জিকির করা উত্তম। তবে মসজিদে কেউ নেই অথবা মুসল্লিদের মধ্যে কেউ নামাজ পড়ছে না তাহলে আপনি জোরে আওয়াজ করে তেলাওয়াত করেন বা জিকির করেন নিষেধ নেই।

মসজিদে নামাজ, তেলাওয়াত ও জিকির-আজকার তিন কাজ করার স্থান। এই তিনটি কাজই মসজিদের মৌলিক কাজ আর কিছু কাজ আছে যেগুলো প্রাসঙ্গিক। যেমন দীনি কথাবার্তা ও ওয়াজ-নসিহত করা, ইতিকাফ করা।

লেখক : গুলশান সেন্ট্রাল

জামে মসজিদ

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর