শিরোনাম
বুধবার, ২৬ অক্টোবর, ২০১৬ ০০:০০ টা

প্রশ্নপত্র ফাঁস

এই নৈরাজ্যের অবসান কাম্য

পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁস কিছুতেই বন্ধ হচ্ছে না। প্রশ্ন ফাঁস বন্ধে নানা পদক্ষেপ নেওয়া সত্ত্বেও তা বজ্র আঁটুনি ফসকা গেরোতে পরিণত হয়েছে। বাংলাদেশ প্রতিদিনে প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ডিজিটাল প্রযুক্তি ব্যবহার করে পরীক্ষা শুরুর সঙ্গে সঙ্গে আবার কখনো ভর্তি পরীক্ষা শুরুর আগেই প্রশ্ন চলে যাচ্ছে জালিয়াত চক্রের হাতে। স্বল্প সময়ে প্রশ্ন সমাধান করে তা পাঠিয়ে দেওয়া হচ্ছে ভর্তিচ্ছুদের মুঠোফোনে। ব্লু-টুথ ডিভাইসের মাধ্যমেও প্রশ্নের সমাধান জানিয়ে দেওয়া হচ্ছে। দেশের সর্বোচ্চ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়েও এমন পরিস্থিতির উদ্ভব ঘটছে। আর জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষার প্রশ্ন মিলেছে পরীক্ষার আগেই। ফেসবুকসহ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও পাওয়া যাচ্ছে ভর্তি পরীক্ষার প্রশ্ন ও উত্তর। দেশের প্রায় সব বিশ্ববিদ্যালয়েই ভর্তি পরীক্ষার প্রশ্ন ফাঁস ওপেন সিক্রেটে পরিণত হয়েছে। পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশ্ন ফাঁসের কারণে অসাধু কিছু শিক্ষার্থী উপকৃত হলেও বিপাকে পড়ছেন মেধাবী ভর্তিচ্ছুরা। অভিযোগ রয়েছে, সংশ্লিষ্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের অসাধু শিক্ষক, কর্মকর্তা অথবা কর্মচারীর সহায়তায় প্রশ্নপত্র ফাঁস হয়ে চলে যাচ্ছে জালিয়াত চক্রের হাতে। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন কখনো কখনো এসব চক্রের সঙ্গে সম্পৃক্ত পরীক্ষার্থীদের ধরে আইনের হাতে সোপর্দ করলেও মূল হোতারা থেকে যায় ধরাছোঁয়ার বাইরে। পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁস দেশের উচ্চশিক্ষার ওপর আঘাত হানছে। এর ভিতকে নড়বড়ে করে দিচ্ছে। সত্যিকারের মেধাবী যারা তাদের বদলে নকলবাজরাও ভর্তির সুযোগ পাচ্ছে। ভর্তি পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁসের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের কোনো কোনো শিক্ষক এবং কর্মচারী-কর্মকর্তা জড়িত বলে মনে করা হয়। সংশ্লিষ্টদের সহযোগিতা ছাড়া প্রশ্ন ফাঁস যে সম্ভব নয় তা সহজেই অনুমেয়। প্রশ্নফাঁস বন্ধে এর সঙ্গে যারাই জড়িত তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া প্রয়োজন। পাশাপাশি এ ধরনের দুর্নীতি রোধে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও কর্মকর্তা-কর্মচারী নিয়োগেও সত্যিকারের যোগ্য এবং সৎ ব্যক্তিদের যাতে নেওয়া হয় তা নিশ্চিত করা দরকার। দলীয় পরিচয়ে কিংবা বাঁকা পথে শিক্ষক কর্মকর্তা-কর্মচারী নিয়োগের ধারা অব্যাহত থাকলে প্রশ্নপত্র ফাঁসসহ এ ধরনের দুর্নীতি চলতেই থাকবে। এই নৈরাজ্যের অবসানে সংশ্লিষ্ট সবার সতর্কতার বিকল্প নেই।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর