শুক্রবার, ৪ নভেম্বর, ২০১৬ ০০:০০ টা

দুর্নীতির দায়ে বদির সাজা

আইনের শাসন প্রতিষ্ঠায় ভূমিকা রাখবে

দুর্নীতির দায়ে সরকারদলীয় সংসদ সদস্য আবদুর রহমান বদিকে তিন বছরের কারাদণ্ড ও ১০ লাখ টাকা জরিমানা করেছে ঢাকার তৃতীয় বিশেষ জজ আদালত। আদালতের বিচারক আবু আহমেদ জমাদার গত বুধবার এ চাঞ্চল্য সৃষ্টিকারী রায় ঘোষণা করার পর আসামিকে কারাগারে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। কক্সবাজারের উখিয়া-টেকনাফ আসন থেকে নির্বাচিত এ সংসদ সদস্যকে সাজা দেওয়া হয়েছে সম্পদের হিসাব গোপন করার দায়ে। দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) মামলায় প্রায় ১১ কোটি টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগ আনা হলেও আদালত তাকে সে দায় থেকে রেহাই দিয়েছে। দেশের ইতিহাসে এই প্রথম ক্ষমতাসীন দলের একজন সংসদ সদস্যকে দুর্নীতির মামলায় সাজা দেওয়া হলো। সন্ত্রাস ও মাদক চোরাচালানের অভয়ারণ্য হিসেবে পরিচিত উখিয়া টেকনাফের বহুল আলোচিত এ সংসদ সদস্যের বিরুদ্ধে অভিযোগের অন্ত নেই। ইয়াবা মাদক ব্যবসার গডফাদার হিসেবে ভাবা হয় তাকে। সংসদে এবং সভা-সমাবেশে নিজেকে সজ্জন এবং দেশ ও জাতির জন্য নিবেদিতপ্রাণ হিসেবে উপস্থাপন করলেও তার নামের সঙ্গে যেসব দুর্নাম জড়িত হয়ে পড়েছে তার কোনোটিই সুখকর নয়। সংসদ সদস্য বদির দণ্ডাদেশের বিরুদ্ধে উখিয়া ও টেকনাফে তার অনুসারীরা বিক্ষোভ প্রদর্শন করেছে। তবে স্থানীয় আওয়ামী লীগের দায়িত্বশীল নেতারা বলেছেন, তারা এ বিক্ষোভের সঙ্গে নেই। আইন তার নিজস্ব গতিতে চলবে এমনটিই তারা আশা করেছেন। বহুল আলোচিত সংসদ সদস্য বদির দণ্ডাদেশ প্রমাণ করেছে আইনের হাত অনেক লম্বা। গডফাদার পরিচয়ের তকমাধারী এ জনপ্রতিনিধির বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ এনে দুদক প্রমাণ করেছে তারা এখন দন্ত নখরহীন বাঘ নয়। দুদক চেয়ারম্যানও এক সংবাদ সম্মেলনে বলেছেন, প্রভাবশালীদেরও আইনের আওতায় আনা হবে। দেশে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে এমপি বদির দণ্ডাদেশ পথ দেখাবে আমরা এমনটিই দেখতে চাই। দুর্নীতি ও অসততার প্রতিভূদের পরিচয় যাই হোক তাদের বিরুদ্ধে দুদক আপসহীন লড়াই চালাবে এমনটিই দেখতে চায় দেশের মানুষ।  সাংবিধানিক এ প্রতিষ্ঠানটির নতুন ভাবমূর্তি গড়ে তোলার ক্ষেত্রেও প্রভাবশালী দুর্নীতিবাজদের জবাবদিহিতার আওতায় আনার উদ্যোগ অবদান রাখবে বলে আমাদের বিশ্বাস।

সর্বশেষ খবর