শনিবার, ৫ নভেম্বর, ২০১৬ ০০:০০ টা

ভাবতে হবে নতুন করে

মো. সাহাবুদ্দিন চুপ্‌পু

ভাবতে হবে নতুন করে

আমাদের বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ সংঘটিত হয়েছিল একটি অসাম্প্রদায়িক চেতনার ওপর ভিত্তি করে। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ছিলেন তার মহান কারিগর ও স্বপ্নদ্রষ্টা। সাম্প্রদায়িকতার ভিত্তিতে ভারত বিভক্ত হয়ে সৃষ্টি হয় ভারত ও পাকিস্তান। বঙ্গবন্ধু যে স্বপ্ন দেখেছিলেন তা না হওয়ায় আশা ভঙ্গ হয়। দেশ ভাগের আগে ও পরে ভারত ও পাকিস্তানে যে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা হয় তাতে বঙ্গবন্ধু ব্যথিত হন।  তিনি নতুন দেশের স্বপ্ন দেখেন। যেখানে থাকবে না মানুষে মানুষে ভেদাভেদ, থাকবে না শোষণ-বঞ্চনা, যার যার ধর্ম সে সে পালন করবে। এমন দেশের জন্য বঙ্গবন্ধুর আহ্বানে প্রায় ৩০ লাখ মানুষ জীবন দিয়েছে, লাখ লাখ মা-বোন সম্ভ্রম হারিয়েছেন, বাড়িঘর জ্বালিয়ে দিয়ে লাখো জনতাকে সহায়-সম্পদহীন করেছে হানাদাররা। অকাতরে জীবন দিয়েছে বীর যোদ্ধারা।

ব্রিটিশ বেনিয়ারা সাম্প্রদায়িক বিভেদ লাগিয়ে ভারতে শোষণ চালায় ১৯০ বছর। যখনই ভারতের স্বাধীনতা চাওয়া হয়েছে তখনই তারা সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্ট করে হিন্দু, মুসলিম, শিখদের মধ্যে দ্বন্দ্ব বাধিয়ে দিয়েছে। ভারতীয়দের একতা বিনষ্ট করে শাসন-শোষণ করেছে। সদ্য স্বাধীন পাকিস্তানের রাষ্ট্রভাষা উর্দু হবে এমন ঘোষণায় বাঙালি ফুঁসে ওঠে। রাষ্ট্রভাষার দাবিতে বাঙালি জীবন দেয়। ভাষার জন্য যখন এদেশের মানুষ আন্দোলন করছিল তখনো পাকিস্তানিরা ধর্মের দোহাই দিয়েছিল। গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে ১৯৭০ সালে জনগণ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবের দল আওয়ামী লীগকে ভোট দেয়। নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠ আসন পাওয়ার পরও পাকিস্তানিরা ক্ষমতা হস্তান্তর না করে গণহত্যা চালায় তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানে। তখনো দেওয়া হয় ধর্মের দোহাই। ১৯৭১-এ পাকিস্তানিরা এদেশে লুটপাট, ধর্ষণ, অগ্নিসংযোগ করে সাধারণ নিরীহ-নিরস্ত্র মানুষকে হত্যা করে। পাকিস্তানি হানাদার সৈন্যরা বাঙালি মুসলমান ও হিন্দুদের ওপর মারাত্মক আঘাত হানে। ধর্ম নিশ্চয়ই এমন বর্বরতা সমর্থন করে না। ইসলাম তো নয়ই।

বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর একবার কবি জসীমউদ্দীনকে প্রশ্ন করেছিলেন, ‘কেন যে মানুষ একের অপরাধের জন্য অপরকে মারে! ও দেশের মুসলমানরা হিন্দুদের মারল, তাই এ দেশের হিন্দুরা মুসলিমদের মেরে তার প্রতিবাদ করবে, এই বর্বর মনোবৃত্তির হাত থেকে দেশ কীভাবে উদ্ধার পাবে বলতে পার?’ আমাদের জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম লিখেছেন— হিন্দু, মুসলিম, বৌদ্ধ, খ্রিস্টান সকলে এক মায়ের সন্তান। বঙ্গবন্ধু বলেছেন— ‘এদেশে সকল ধর্মের মানুষ মিলেমিশে বসবাস করবে’। সমাজ ও সম্প্রদায়ের গণ্ডি পেরিয়ে মহান ব্যক্তিরা সেখানেই যেতে চান যার প্রতিষ্ঠাভূমি হচ্ছে শুধু উদার মনুষ্যত্ব।

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে দীর্ঘ স্বাধীনতা সংগ্রাম ও মহান মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে স্বাধীন বাংলাদেশের জন্ম হয়। এরপরে ১৯৭২ সালের সংবিধানে বাঙালি জাতীয়তাবাদ, গণতন্ত্র, সমাজতন্ত্র ও ধর্মনিরপেক্ষতাকে মূলনীতি করে অসাম্প্রদায়িক ধর্মনিরপেক্ষ রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্ব নেন বঙ্গবন্ধু।

ধর্মের বিধিবিধান অনুশাসন না মানলেও মতলববাজরা সর্বদাই ধর্মকে ব্যবহার করেছে কায়েমি ও গোষ্ঠীস্বার্থের জন্য। যা বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পরও অব্যাহত আছে। বঙ্গবন্ধু যখন এদেশে অসাম্প্রদায়িক আদর্শ অনুসরণ করে দেশ পরিচালনা করছিলেন তখনই মতলববাজরা তাকে সপরিবারে হত্যা করে। বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করার পরপরই বাংলাদেশ বেতারের নাম পরিবর্তন করে রাখা হয় রেডিও বাংলাদেশ (রেডিও পাকিস্তানের অনুকরণে)। এরপর সামরিক জান্তা এদেশের সংখ্যাগরিষ্ঠ মুসলিমদের ধোঁকা দিতে সংবিধানে ‘বিসমিল্লাহ’ সংযোজন করে। তারপর আরেক সামরিক জান্তা সংবিধানে ‘রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম’ যোগ করে। যারা অতি উৎসাহী হয়ে এসব করে তারা কেউই ইসলামী অনুশাসন বা আইনকানুনের ধার ধারতেন না। অথচ ধর্মের ব্যবহার!

 

 

বঙ্গবন্ধু এবং জাতীয় চার নেতাকে জেলখানায় হত্যার পর পরাজিত স্বাধীনতাবিরোধীদের নিয়ে এদেশটি পাকিস্তানি ভাবধারায় পরিচালনা করে সামরিক জান্তা। মুক্তি দেওয়া হয় স্বাধীনতা যুদ্ধে বিরোধী রাজাকার-আলবদরদের। এ সময় সাম্প্রদায়িক অপশক্তি শক্তিশালী হতে থাকে। জিয়ার পর এরশাদ, তারপর জিয়ার পত্নী খালেদা জিয়া জামায়াতে ইসলামীর সমর্থনে ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত হন। মুক্তিযুদ্ধের বিরোধিতাকারীরা রাজনীতির মূল স্রোতে পুনর্বাসিত হয়। ক্ষমতা এবং কর্তৃত্বে ক্রমশ তারা সুসংহত হয়। এতে মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনা পদদলিত হয়। 

এভাবেই স্বাধীন বাংলাদেশে ধর্মীয় মৌলবাদী উন্মাদনার বিস্তার ঘটতে থাকে। ইসলাম ধর্মের মূল চেতনায় নয় বিকৃতির মাধ্যমে সাম্প্রদায়িক রাষ্ট্র গড়ার অপচেষ্টায় লিপ্ত হয়। নানাভাবে হয়রানি-নির্যাতন চলতে থাকে মুক্তমনা প্রগতিশীল চিন্তার কবি, সাহিত্যিক, বুদ্ধিজীবী, লেখক-সাংবাদিক, আইনজীবীদের ওপর। এরপর আবার গণভোটে আওয়ামী লীগ ক্ষমতাসীন হয়ে বাংলাদেশকে মূল ধারার রাজনীতিতে ফিরিয়ে আনার আপ্রাণ চেষ্টা করে। মূল ধারার মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় সংবিধানে পরিবর্তন আনতে যে সংখ্যাগরিষ্ঠতার প্রয়োজন হয় তা ছিল না আওয়ামী লীগের। এই সময় কিছু গুরুত্বপূর্ণ কাজ হয়। তার মধ্যে অন্যতম ছিল পার্বত্য শান্তি চুক্তি। এই সময়কালে (১৯৯৬-২০০১) বাংলাদেশে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি পুরোপুরি অক্ষুণ্ন ছিল। ২০০১-এর জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপি অর্থাৎ জিয়াউর রহমানের স্ত্রী খালেদা জিয়া ক্ষমতাসীন হন। আবারও যুদ্ধাপরাধী দল জামায়াতে ইসলামীর সংসদ সদস্যদের সমর্থনে সরকার গঠন করে। নির্বাচনে জয়ী হয়েই আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের ওপর নির্যাতন চালায়। এ ছাড়াও আওয়ামী লীগের ভোটব্যাংক হিসেবে খ্যাত হিন্দু জনগোষ্ঠীকে নির্যাতন, হত্যা, লুণ্ঠন ও ধর্ষণে লিপ্ত হয় এবং বাড়িঘর লুটপাট করে, দেশ ছাড়তে বাধ্য করে। ১৯৭১ সালে পাকিস্তানি সামরিক সরকারের মতোই ছিল বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের কর্মকাণ্ড।

এরপর ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত হয় তত্ত্বাবধায়ক সরকার। তারা ছয় মাসের স্থলে প্রায় দুই বছর ক্ষমতায় থাকে। এরপর সাধারণ জনগণের ভোটে (২০০৮ সাল) আওয়ামী লীগ জোট নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা লাভ করে। সরকার ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত হয়ে সংখ্যালঘু নির্যাতন তদন্তে ‘একটি কমিশন’ গঠন করে। এটি আমার নেতৃত্বে সাহাবুদ্দিন কমিশন। ২০০১ সালে বিএনপি-জামায়াত জোট ক্ষমতাসীন হওয়ার পর সংখ্যালঘু সম্প্রদায় এবং আওয়ামী লীগসহ প্রগতিশীল রাজনীতিতে বিশ্বাসীদের বিশেষ করে হিন্দুদের ওপর যে নির্যাতন চালায় তার তদন্ত করে একটি রিপোর্ট দাখিল করে। এটি ছিল একটি যুগান্তকারী ঘটনা। বিভিন্ন সময় সরকার দেশে অতীতে বহু কমিশন বা তদন্ত কমিটি গঠন করেছে তার প্রায় কোনোটিরই রিপোর্ট জনসমক্ষে পেশ করা হয়নি বা আলোর মুখ দেখেনি।

বিচার বিভাগীয় কমিশনের মাঠপর্যায়ের তদন্তে সাম্প্রদায়িক সন্ত্রাস ও রাজনৈতিক প্রতিহিংসার যে চিত্র পেয়েছে তা বিশ্লেষণ করলে ১৯৭১-এর হিন্দু নিধনের সঙ্গে মিলে যায়। শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন, সম্পত্তি দখল, চাঁদাবাজি, ধর্ষণ ও হত্যার মতো ঘটনা ঘটে। কমিশনের পর্যবেক্ষণে এটা প্রতীয়মান হয় যে, আওয়ামী লীগের ভোটব্যাংক হিন্দুদের দেশ থেকে তাড়াতে পারলে স্বাধীনতাবিরোধী গোষ্ঠীর একাত্তরের পরাজয়ের যন্ত্রণাটা কিছুটা হলেও যেন কমে।

বঙ্গবন্ধুকে হত্যাকাণ্ড ছিল সুপরিকল্পিত, সুদূরপ্রসারী ও উদ্দেশ্যমূলক। পরাজিত স্বাধীনতাবিরোধী অশুভ শক্তি ইসলামের মূল চেতনায় নয়, বরং ধর্মের নামে ভণ্ডামী করে তাদের ঘৃণ্য স্বার্থ চরিতার্থ করার প্রয়াস পায়। বিকাশ ঘটে ধর্মান্ধ মৌলবাদী ও সাম্প্রদায়িক অপশক্তির এবং পুনরুত্থান ঘটে জঙ্গিবাদের। বিভিন্ন দেশের সংবাদপত্রে বাংলাদেশে ভয়াবহ জঙ্গিবাদের উত্থানের ইঙ্গিতপূর্ণ খবর আগেই প্রকাশিত হয়েছিল এবং শঙ্কা প্রকাশ করা হয়েছিল তা পরবর্তীতে ক্রমান্বয়ে বাস্তবায়িত হতে থাকে। যা দেশবাসী এখন প্রত্যক্ষ করছে। আমার কমিশন প্রতিবেদনে এসব বিষয়ও উল্লেখ করা হয়।

ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলন যখন জোরদার হয় তখনো ভারতের বিভিন্ন স্থানে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা সংঘটিত হয় যা বঙ্গবন্ধু খুবই সুন্দরভাবে উপস্থাপন করেছেন তার ডায়েরিতে। তার অসমাপ্ত আত্মজীবনী পড়লেই তা জানা যায়। ভারত উপমহাদেশে যখনই প্রগতিশীল, মুক্তবুদ্ধির ও অসাম্প্রদায়িক চেতনার প্রতি মানুষ আকৃষ্ট হয়েছে তখনই ধর্মের নামে বজ্জাতী করার অপচেষ্টা করেছে ধর্মান্ধ মৌলবাদী চক্র। বাংলাদেশের মানুষ ধর্মভীরু, ধর্মান্ধ নয়। বঙ্গবন্ধু বলেছেন, আমি বাঙালি আমি মানুষ, আমি মুসলমান’। আমাদের বাঙালি পরিচয়ের গর্বের স্থানটিতে আঘাত আসে বঙ্গভঙ্গ এবং ভারত বিভক্তির পর। তারপর আবার আঘাত হানা হয় ১৯৪৮, ১৯৫২, একাত্তরে মুক্তিযুদ্ধের সময়, তারপর ১৯৭৫ এবং ২০০১ সালে। বাঙালি জাতীয়তাবাদকে রূপান্তর করা হয় বাংলাদেশি জাতীয়তাবাদে। সাহসী বাঙালি জাতিকে বাংলাদেশিতে রূপান্তর করায় বাঙালির অহংকার চূর্ণ হয় সেই সঙ্গে বাঙালির সাহসেও ঘাটতি দেখা দেয়। আমাদের সমুদ্র, ভূমি বেদখল করে ভিন্ন দেশ। বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা সমুদ্র উদ্ধার করে এবং ছিটমহল সমস্যাসহ সীমান্ত ভূমি জটিলতার নিরসন করেন।

২০০১ সালে ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত হয়ে বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের সময় বঙ্গবন্ধু এভিনিউতে আওয়ামী লীগের জনসভায় ইতিহাসের ভয়াবহ এবং জঘন্যতম গ্রেনেড হামলা চালানো হয়। তখনকার সময়ের বিরোধী দলের নেত্রী শেখ হাসিনা প্রাণে বেঁচে গেলেও প্রাণ হারান আইভি রহমানসহ ২৪ জন। আহত হন বহু নেতা-কর্মী। ২০০৫ সালে সারা বাংলাদেশে ৬৪টি জেলায় একযোগে প্রায় পাঁচশ বোমা মারা হয়। এ সময়ই উত্থান ঘটে বাংলা ভাই ও শায়খ আবদুর রহমানের নেতৃত্বে জেএমবি নামের একটি জঙ্গি মৌলবাদী সংগঠন। সাম্প্রদায়িক জঙ্গি গোষ্ঠী এদেশের বিচার বিভাগ, সংসদ ও নির্বাহী বিভাগকে ধ্বংস করার লক্ষ্যেই বারংবার এভাবে ঘৃণ্য আক্রমণ চালায়। অবৈধ অস্ত্র আমদানি করে জঙ্গিদের হাতে তুলে দেওয়া হয়। সবই হয় প্রশাসনের নাকের ডগায়। এর একটি চালান চট্টগ্রামে এবং একটি বগুড়ায় ধরা পড়ে।

২০০১ এ অনুষ্ঠিত অষ্টম জাতীয় সংসদ নির্বাচনোত্তর সহিংসতা যে একটি গভীর ষড়যন্ত্র ছিল তা আমার নেতৃত্বে কমিশনের রিপোর্টে সুস্পষ্ট হয়েছে। প্রায় ১৮ হাজার সহিংসতার ঘটনা ঘটে সারা বাংলাদেশে। বিচার বিভাগীয় কমিশন স্বল্প সময়ে ৫ হাজার ৫৭১টি অভিযোগের মধ্যে ৩ হাজার ৬২৫টি তদন্ত করে। তদন্ত কমিটি তদন্ত শেষে বেশ কয়েকটি সুপারিশ পেশ করেছে।

বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করার পর থেকে এদেশে মৌলবাদীরা তত্পর। বিশ্ব রাজনীতি বিশেষ করে মধ্যপ্রাচ্যের জঙ্গি মৌলবাদী গোষ্ঠীর উত্থান হওয়ায় এখন আবার নতুন করে তারা এদেশে হত্যাযজ্ঞ শুরু করেছে। বিভিন্ন মন্দিরের সেবায়েত, পুজারী, পাদ্রিদের হত্যা করা হয়। খ্রিস্টান গির্জা এবং বৌদ্ধদের প্যাগোডায় হামলা চালানো হয়। গুলশানে একটি হোটেলে আক্রমণ চালিয়ে হত্যা করে আমাদের বিদেশি অতিথিদের, শোলাকিয়া ঈদগাহে হামলা চালানো হয়। দুটি ঘটনাতেই বেশ কয়েকজন দেশপ্রেমিক পুলিশ শহীদ হন। সারা বিশ্বের মুসলিমদের এখন ঝুঁকির মধ্যে ফেলে দিয়েছে এসব উগ্র মৌলবাদী গোষ্ঠী। মুসলিমরা এখন আতঙ্কিত।  আমরা যখন বিশ্বে মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে কয়েক ধাপ এগিয়েছি তখনই এ জঘন্য জঙ্গি অপতত্পরতা।

আমাদের দেশের শান্তিপ্রিয় জনতা কোনো প্রকার জঙ্গি তত্পরতা কখনই পছন্দ করেনি। এবারও তারা জঙ্গিদের ঘৃণাভরে প্রত্যাখ্যান করেছে। জঙ্গিরা এদেশে সুবিধা করতে পারবে না। সর্বস্তরের জনতা তাদের বিরুদ্ধে ফুঁসে উঠেছে। জনতা ঐক্যবদ্ধ। বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলায় মৌলবাদীরা তেমন সুবিধা করতে পারবে না। এ দেশের মানুষ তাদের রুখে দেবে একাত্তরের মুক্তি সংগ্রামের মতোই।  জননেত্রী দেশরত্ন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এ বিষয়ে আপসহীন ও বলিষ্ঠ নেতৃত্ব দিচ্ছেন।

রবীন্দ্রনাথ, নজরুল, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব, শহীদ তিতুুমীর, সূর্য সেন, প্রীতি লতার বাঙালি জাতীয়তাবাদ ও অসাম্প্রদায়িক চেতনায় সমৃদ্ধ এ বাংলাদেশে মৌলবাদীদের ঘাঁটি কখনই শক্তিশালী হতে পারবে না এটি বহুবার প্রমাণিত হয়েছে  এবারও তারা নির্মূল হবে এ আশা সব মহলের।

     লেখক : সাবেক কমিশনার, দুর্নীতি দমন কমিশন।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর