রবিবার, ২৭ নভেম্বর, ২০১৬ ০০:০০ টা

বিপন্ন সুন্দরবনের বাঘ

লবণাক্ততা দূরীকরণে উদ্যোগ নিন

সুন্দরবন সংলগ্ন নদনদীতে লবণাক্ততা বৃদ্ধি পাওয়ায় বিশ্বের বৃহত্তম বাদাবনের পরিবেশ ব্যবস্থায় চিড় ধরছে। ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে বাদাবনের বিস্তার। জীববৈচিত্র্যেও তার অশুভ প্রভাব পড়ছে। সুন্দরবনের দুনিয়াজুড়ে পরিচিতি রয়েল বেঙ্গল টাইগার নামের ব্যাঘ্রকুলের জন্য। সেই বাঘের অস্তিত্বও লবণাক্ততার কারণে বিপন্ন হয়ে পড়েছে। লবণাক্ততার কারণে বাঘের খাদ্য সংকট দেখা দিয়েছে আশঙ্কাজনকভাবে। বাঘের বিচরণভূমিও সংকুচিত হয়ে পড়ছে। উজানে পানি প্রত্যাহার সুন্দরবন সংশ্লিষ্ট নদনদীতে লবণাক্ততা বৃদ্ধি করছে। বাদাবনের জন্য বিপদ ডেকে আনছে। বিপদ সৃষ্টি হচ্ছে সমুদ্র পৃষ্ঠের পানির স্তর বেড়ে যাওয়ার কারণেও। এর ফলে ভূমিক্ষয় বাড়ছে। গাছপালার অস্তিত্ব বিপন্ন হয়ে পড়ছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, সুন্দরবনের নদনদীতে লবণাক্ততা বেড়ে যাওয়ায় সুন্দরী গাছের বংশবৃদ্ধি ব্যাহত হচ্ছে। সুন্দরবনের সমুদ্রঘেঁষা এলাকায় সুন্দরী গাছের ঘনত্ব হ্রাস পেয়েছে। এসব এলাকার গাছপালায় লবণাক্ততা বৃদ্ধি পাওয়ায় তৃণভোজীরা তা মুখে তুলছে না। ফলে তারা খাদ্যসংকটের শিকার হচ্ছে। সুন্দরবনের বাঘের অস্তিত্বের সঙ্গে তৃণভোজী জন্তুর সম্পর্ক ওতপ্রোতভাবে জড়িত। লবণাক্ততার কারণে তৃণভোজী প্রাণীর অস্তিত্ব বিপন্ন হয়ে পড়ায় বাঘের অস্তিত্বের ওপরও অপছায়া পড়ছে। বাঘের অস্তিত্ব রক্ষায় লবণাক্ততা সমস্যার ইতি ঘটাতে হবে। বিশ্বের বৃহত্তম বাদাবনের অস্তিত্বের জন্য এটি এখন প্রধান হুমকি। দুর্ভাগ্যজনক হলেও সত্যি সুন্দরবন বিপন্ন হওয়ার আশঙ্কায় সংশ্লিষ্ট এলাকায় কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের বিরুদ্ধে ব্যাপক জনমত গড়ে উঠলেও তার চেয়েও বড় সমস্যা লবণাক্ততার বিপদ সম্পর্কে প্রতিবাদী কণ্ঠ শোনা যায় না বললেই চলে। এ ব্যাপারে সরকারকে উদ্যোগী হতে হবে। বিশ্ব ঐতিহ্যের অংশ হিসেবে বিবেচিত এই বাদাবন রক্ষায় মিষ্টি পানির প্রবাহ কীভাবে সচল রাখা যায় সে বিষয়টি ভাবতে হবে।  সুন্দরবনের পূর্বাংশের ৬০ ভাগ বাংলাদেশের হলেও পশ্চিমাংশের ৪০ ভাগ ভারতের পশ্চিম বাংলার অংশ।

এ বনকে রক্ষায় পশ্চিমবঙ্গের মানুষও যাতে সোচ্চার হয়ে ওঠে সে বিষয়টিও নিশ্চিত করতে হবে।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর