বাংলাদেশ বিমান ও অব্যবস্থাপনা যেন সমার্থক শব্দে পরিণত হয়েছে। অব্যবস্থাপনার কারণেই ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠেছে বিমানের সব ধরনের ফ্লাইট। প্রধানমন্ত্রীকে বহনকারী ভিআইপি ফ্লাইটও ঝুঁকিমুক্ত রাখা যাচ্ছে না। বাংলাদেশ প্রতিদিনের শীর্ষ প্রতিবেদনে বিমান ফ্লাইটের যে বেহাল অবস্থা তুলে ধরা হয়েছে তা উদ্বেগজনক। গত ১০ বছর দেশে-বিদেশে ছোটখাটো সাতটি দুর্ঘটনায় পড়েছে বাংলাদেশ এয়ারলাইনস। বার বার অলৌকিকভাবে রক্ষা পেয়েছেন ভিভিআইপি ও সাধারণ যাত্রীরা। গত জুন মাসে সৌদি আরব থেকে দেশে ফেরার মুহূর্তে প্রধানমন্ত্রীকে বহনকারী বিমানের পাইলট রানওয়েতে ধাতব বস্তুর মতো কিছু একটা দেখতে পান। পাইলট বিমান অবতরণ না করে ট্রাফিক কন্ট্রোলে যোগাযোগ করেন। ধাতব বস্তুটি সরানোর পর বিমানটি রানওয়েতে অবতরণ করে। এ জন্য প্রধানমন্ত্রীকে বহনকারী বিমানটি ২০ মিনিট আকাশে থাকে। গত রবিবার হাঙ্গেরি যাওয়ার পথে বিমানে ত্রুটি দেখা দেওয়ায় তুর্কমেনিস্তানের রাজধানীতে তা জরুরি অবতরণে বাধ্য হয়। এ ঘটনার জের না কাটতেই গত সোমবার ঢাকা-কলকাতা ফ্লাইটও দুই দফা যান্ত্রিক ত্রুটির শিকার হয়। চলতি বছরের ৩ মার্চ শাহজালালের রানওয়ের শেষ প্রান্তের ব্যারিয়ার ভেঙে উড্ডয়ন করে জেদ্দাগামী বাংলাদেশ বিমানের ব্র্যান্ড নিউ এয়ারক্রাফট। অলৌকিকভাবে ভয়াবহ দুর্ঘটনার হাত থেকে রক্ষা পাওয়ায় প্রাণে বাঁচেন ৩৭৪ যাত্রী। বিমানের ওজনের সঙ্গে ইঞ্জিনের গতির সমন্বয় না করেই টেকঅফ করায় পাইলট উড়োজাহাজটির নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলেছিলেন। অব্যবস্থাপনার কারণেই বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের ভিভিআইপি ফ্লাইট থেকে শুরু করে যাত্রীবাহী উড়োজাহাজের চলাচল ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠছে। বার বার অলৌকিকভাবেই দুর্ঘটনার হাত থেকে রক্ষা পাচ্ছেন ভিভিআইপি এবং সাধারণ যাত্রীরা। জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যান এইচ এম এরশাদও তার সফরসঙ্গী নিয়ে দুর্ঘটনার মধ্যে পড়েছিলেন। পাইলটদের অদক্ষতা, অজ্ঞতা এবং প্রকৌশল বিভাগের কর্মকর্তাদের খামখেয়ালিপনায় বিমানযাত্রা ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠছে। প্রতিটি ঘটনার পর ঘটা করে তদন্ত কমিটি হলেও তদন্ত প্রতিবেদন কখনো আলোর মুখ দেখে না। বিমানের কর্তাব্যক্তিরা যাত্রী নিরাপত্তার ব্যাপারে সচেতন না থাকায় এসব ব্যাপারে যথাযথ নজরদারির ব্যত্যয় ঘটছে। বড় ধরনের বিপর্যয় না চাইলে বিমান কর্তৃপক্ষকে এ বিষয়ে সতর্ক হতে হবে।