বৃহস্পতিবার, ১৫ ডিসেম্বর, ২০১৬ ০০:০০ টা

রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধান

মিয়ানমারের ইতিবাচক মনোভাব কাম্য

রোহিঙ্গা সমস্যা বাংলাদেশের গলায় যন্ত্রণাদায়ক কাঁটা হয়ে বিঁধে আছে। এ কাঁটা উদগিরণের চেষ্টা যেমন ব্যর্থ হচ্ছে তেমন গিলে ফেলাও কষ্টকর হয়ে দাঁড়াচ্ছে। জাতিসংঘের হিসেবে ইতিমধ্যে ২২ হাজার রোহিঙ্গা নতুনভাবে বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে। তবে বাস্তবে এ সংখ্যা ৫০ হাজার বা তার কাছাকাছি বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। দীর্ঘদিন যাবৎ নিশ্চুপ থাকার পর মিয়ানমারের নেত্রী অং সান সু চি রোহিঙ্গা সমস্যা নিয়ে আলোচনার জন্য আশিয়ানের বৈঠক ডেকেছেন। ইন্দোনেশিয়া, মালয়েশিয়া, ব্রুনাই, সিঙ্গাপুর, থাইল্যান্ড, ফিলিপাইন ইত্যাদি দেশগুলোকে নিয়ে গঠিত আসিয়ানের অন্যতম সদস্য মিয়ানমার। সে দেশে রোহিঙ্গাদের ওপর জাতিগত হামলায় আসিয়ানভুক্ত প্রায় সব দেশই উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। এ বিষয়ে মালয়েশিয়া ও ইন্দোনেশিয়ার প্রতিক্রিয়া বেশ কঠোর। মালয়েশিয়া রোহিঙ্গাদের রক্ষায় প্রয়োজনে শক্তি প্রয়োগেরও হুমকি দিয়েছে। এ প্রেক্ষাপটে ইয়াঙ্গুনে আসিয়ানের বৈঠক আহ্বান নিঃসন্দেহে তাত্পর্যপূর্ণ ঘটনা। বৈঠকে রোহিঙ্গা সমস্যার শান্তিপূর্ণ সমাধানের পথ খুঁজে পাওয়ার চেষ্টা করা হবে এমনটিই প্রত্যাশিত। ইয়াঙ্গুনের বৈঠকে মিয়ানমার রোহিঙ্গা সমস্যা সম্পর্কে নিজেদের অবস্থান তুলে ধরবে বলে মনে করা হচ্ছে। আসিয়ানের বৈঠক আহ্বানের মাধ্যমে সু চি তার দেশের একটি জাতিগত সমস্যা সম্পর্কে দীর্ঘ নীরবতার অবসান ঘটাচ্ছেন যা একটি ইতিবাচক দিক। বৈঠক আহ্বানের পর মিয়ানমার সরকারের গঠিত তদন্ত কমিটি রাখাইন রাজ্যের রোহিঙ্গা অধ্যুষিত এলাকা সফর করেছে। আসিয়ান বৈঠকে এ সমস্যার সমাধানে মিয়ানমার ইতিবাচক আগ্রহ দেখালে তা প্রশংসনীয় উদ্যোগ বলে বিবেচিত হবে। কিন্তু তার বদলে উদোর পিণ্ডি বুধোর ঘাড়ে চাপিয়ে রোহিঙ্গা সমস্যাকে অগ্রাহ্য করার চেষ্টা করলে তা হবে নিন্দনীয়। রোহিঙ্গা সমস্যা প্রতিবেশী দেশ মিয়ানমারের অভ্যন্তরীণ বিষয় হলেও এ সমস্যা বাংলাদেশের জন্য ইতিমধ্যে মাথা ব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। আমরা আশা করব সমস্যাকে অস্বীকার করা নয়, বরং আসিয়ানের সহযোগিতা নিয়ে কীভাবে রোহিঙ্গাদের সুরক্ষার পাশাপাশি মিয়ানমারের জাতীয় এক্য অটুট রাখা যায় আহূত বৈঠকে সে উপায় উদ্ভাবনের চেষ্টা করা হবে। সুপ্রতিবেশী হিসেবে বাংলাদেশের চাওয়াও তাই।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর