শনিবার, ১৭ ডিসেম্বর, ২০১৬ ০০:০০ টা

আসছে অতিথি পাখি

জীববৈচিত্র্য ও পরিবেশের জন্য ওরা আশীর্বাদ

পৌষ শুরু হতে না হতেই দেশের হাওরগুলো অতিথি পাখির আনাগোনায় মুখরিত হয়ে উঠেছে। দেশের সর্ববৃহৎ হাওর হাকালুকিসহ কাউওয়া দীঘি ও বাইক্কার বিলে এবার অতিথি পাখির সংখ্যা গত কয়েক বছরের চেয়ে বেশি বলে মনে হচ্ছে। মাঝ হেমন্তের পর প্রতিদিন সন্ধ্যার আগে ঝাঁক ঝাঁক অতিথি পাখির কলতানে মুখরিত হয়ে উঠছে হাওর-তীরবর্তী এলাকা। ছোট-বড় ২৩৮টি বিলের সমন্বয়ে গঠিত হাকালুকি হাওরে প্রতি বছর সেপ্টেম্বরেই অতিথি পাখি আসতে শুরু করে। এ বছর শীত আসতে কিছুটা দেরি হওয়ায় অতিথি পাখিও এসেছে দেরিতে। তবে শীত বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে পাখির আগমনও বৃদ্ধি পেয়েছে। দেশের অন্যান্য হাওর ও বিলেও অতিথি পাখির আনাগোনা শুরু হয়েছে অন্তত দুই মাস ধরে। প্রতিটি হাওরে পাখির কলতানে মোহনীয় পরিবেশ সৃষ্টি হচ্ছে। রাজধানীর জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের লেকও মুখরিত হয়ে উঠেছে অতিথি পাখির কলতানে। শীত মৌসুমে হাজার মাইল দূর থেকে বিশেষত রাশিয়ার সাইবেরিয়া ও সংলগ্ন এলাকা থেকে অতিথি পাখি আসে আমাদের দেশে। সাইবেরিয়াসহ সংলগ্ন এলাকার আবহাওয়ায় এ সময়ে শুরু হয় তুষার ঝড়ের দাপট। হিমশীতল সেই অসহিষ্ণু পরিবেশ থেকে রক্ষা পেতে অতিথি পাখিরা ছড়িয়ে পড়ে দুনিয়ার বিভিন্ন দেশের বিল-ঝিল-হাওরে। যাদের একটা অংশ প্রতি বছর অতিথি হয়ে আসে বাংলাদেশে এবং শীত মৌসুম শেষে স্বদেশের দিকে পাড়ি দেয়। প্রতি বছর বাংলাদেশের হাকালুকি হাওরেই গড়ে ৫০ থেকে ৬০ প্রজাতির লক্ষাধিক পাখির আগমন ঘটে। সারা দেশে অতিথি পাখির আগমন ঘটে কয়েক লাখ। অতিথি পাখি বাংলাদেশের জীববৈচিত্র্য সমৃদ্ধ করছে। পরিবেশ সংরক্ষণেও এদের অবদান অনন্য। দেশে বিল-ঝিল-নদ-নদীসহ জলাশয়ের সংখ্যা হ্রাস পাওয়ায় অতিথি পাখির আগমন যেমন কমে যাচ্ছে তেমন দেশি পাখির জন্যও টিকে থাকা সমস্যা হয়ে দাঁড়াচ্ছে। পাখি শিকার আইনত দণ্ডনীয় হলেও একশ্রেণির লোভী মানুষ সে অপরাধে প্রতিদিনই নিজেদের যুক্ত করছে। বায়ু ও পরিবেশ দূষণের কারণেও তাদের আগমন হ্রাস পাচ্ছে। এ বিষয়ে সতর্ক না হলে বিশেষত অতিথি পাখির নিরাপত্তায় জনসচেতনতা গড়ে না উঠলে তা দেশের জীববৈচিত্র্য ও পরিবেশের  জন্য বিসংবাদ হয়ে দাঁড়াবে; যা কাম্য হওয়া উচিত নয়।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর