শিরোনাম
রবিবার, ১৮ ডিসেম্বর, ২০১৬ ০০:০০ টা

মহানবী (সা.)-এর সর্বপ্রথম কাজ ছিল দাওয়াত

মাওলানা জহিরুল ইসলাম মিঞা

হজরত মুহাম্মদ (সা.)-এর ওপর আনীত শরিয়তকে কোরআনের ভাষায় দীন বলা হয়। এ মর্মে আল্লাহতায়ালা পবিত্র কোরআনুল কারিমে ইরশাদ করেন, ইসলামই আমার কাছে একমাত্র মনোনীত ধর্ম বা দীন। (সূরা আলে ইমরান আয়াত নং-১৯)।

মহান আল্লাহতায়ালা অন্যত্র ইরশাদ করেছেন— আজ আমি তোমাদের জন্য তোমাদের দীনকে পূর্ণাঙ্গ করে দিলাম। তোমাদের প্রতি আমার অবদান সম্পূর্ণ করে দিলাম এবং ইসলামকে তোমাদের জন্য দীন হিসেবে পছন্দ করলাম। (সূরায়ে আল মায়েদা আয়াত নং-৩)।

কোরআনুল কারিমের এ আয়াতে কারিমার দ্বারা প্রতীয়মান হলো দীন পূর্ণাঙ্গ জীবনবিধান। এ পথ-মতের বাইরে কেউ সিরাতাল মুস্তাকিম পথের দিশা পাবে না। আল্লাহতায়ালা অন্যত্র ইরশাদ করেন, ইসলাম ছাড়া অন্য কোনো ধর্ম তালাশ করলে কস্মিনকালেও তা গ্রহণ করা হবে না এবং আখিরাতে সে বা তারা হবে ক্ষতিগ্রস্ত। (সূরা আলে ইমরান আয়াত-৮৫)।

মহান আল্লাহপাক অন্যত্র ইরশাদ করেছেন, আপন পালনকর্তার পথের প্রতি আহ্বান করুন জ্ঞানের কথা বুঝিয়ে ও উপদেশ শুনিয়ে উত্তমরূপে এবং তাদের সঙ্গে বিতর্ক করুন পছন্দযুক্ত পন্থায়। (সূরা নাহল আয়াত-১২৫)।

মহান আল্লাহপাক অন্যত্র ইরশাদ করেছেন, আল্লাহর দিকে দাওয়াত দেয়, সৎকর্ম করে এবং বলে আমি একজন আজ্ঞাবহ, তার কথা অপেক্ষা উত্তম কথা আর কার? (সূরা হা-মিম সেজদা আয়াত-৩৩)

দুনিয়ার মানুষ শান্তি চায় মুক্তি চায় কল্যাণ চায় ব্যক্তি পারিবারিক ও সমাজজীবনের সর্বস্তরে। সর্বশেষ নবী খাতামুন নাবিইন রাহমাতাল্লিল আলামিন হজরত মুহাম্মদ (সা.) আল্লাহ প্রদত্ত এ দীন আমাদের কাছে আমানত রেখে গেছেন। কিয়ামত পর্যন্ত এ দীনের কোনো পরিবর্তন, পরিবর্ধন ও সংশোধনের অধিকার কারও নেই। প্রায় সাড়ে তেরশ বছর আগের এ দীন সাহাবায়ে কেরাম (রা.) আজমাইন তাবেইন তাবে তাবেইন আইমমা মুজতাহিদীন আইম্মায়ে ফোকাহা মুহাদ্দিসিন মুফাসসিরিন পীর মাশায়েখ ওলামায়ে হাক্কানিগণের দাওয়াতের মাধ্যমে আজ পর্যন্ত বিশ্বে ছড়িয়ে রয়েছে। দাওয়াত বিহনে দীন টিকে থাকতে পারে না। দাওয়াতের গুরুত্ব বুঝাতে গিয়ে রসুলে করিম (সা.) বলেন, তোমরা যদি দীনের একটি কথা জ্ঞাত হও তা অন্যের কাছে পৌঁছে দাও। দীনি দাওয়াতই ইসলাম বা আল্লাহর মনোনীত দীনের মূল চালিকা শক্তি। ইতিহাস তার জ্বলন্ত নজির। যুগে যুগে ইসলাম বিদ্বেষীরা দীনি দাওয়াতের ব্যত্যয় ঘটিয়েছে। আজও আমাদের বাংলাদেশে ইসলামের অপব্যাখ্যাকারী ভ্রান্ত মতবাদীরা ভণ্ড পীর ফকির ধর্মবিরোধীদের এজেন্ট হিসেবে কাজ করেছে। ইসলাম মানবতার ধর্ম, শান্তির ধর্ম উভয় জাহানের কল্যাণের রক্ষাকবজ। এ ধর্ম বা দীন প্রচারে হুজুরে পাক (সা.) আদর্শ বা বাতলানো পদ্ধতি ছেড়ে সন্ত্রাস, বোমাবাজি, মানুষ হত্যা ও নৈরাজ্য সৃষ্টি করে প্রকৃত দীনি দাওয়াতের ব্যত্যয় ঘটিয়ে জাহান্নামের পথিক হয়ে জান্নাতের প্রলোভন দেখিয়ে বিপদগামী করেছে। এ ব্যাপারে দেশ ও জাতিকে সচেতন হতে হবে। দেশের হাক্কানি ওলামায়ে কেরাম, পীর মাশায়েখদের ঐক্যবদ্ধভাবে দীনের সঠিক দাওয়াতের পথে এগিয়ে চলার আহ্বান জানাচ্ছি।

লেখক : সাধারণ সম্পাদক, জাতীয় খতিব কাউন্সিল

সর্বশেষ খবর