বুধবার, ২১ ডিসেম্বর, ২০১৬ ০০:০০ টা

গার্মেন্ট শ্রমিকদের অসন্তোষ

ঘরভাড়া নিয়ন্ত্রণে পদক্ষেপ নিন

গার্মেন্ট শিল্পে অসন্তোষ দানা বেঁধে ওঠার আগেই সরকারি হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি সামাল দেওয়া সম্ভব হয়েছে। মজুরি বৃদ্ধিসহ ১৬ দফা দাবিতে গত সোমবার কর্মবিরতি শুরু করে আশুলিয়ার বিভিন্ন গার্মেন্ট কারখানার শ্রমিকরা। তারা কারখানার অভ্যন্তরে বিক্ষোভ প্রদর্শন শুরু করলে কর্তৃপক্ষ ৪০টি কারখানায় ছুটি ঘোষণা করতে বাধ্য হয়। গার্মেন্ট শ্রমিকদের বক্তব্য তাদের মজুরি বৃদ্ধি করা হয়েছিল তিন বছর আগে। গত তিন বছরে বাসাভাড়া ও জিনিসপত্রের দাম বাড়লেও শ্রমিকদের মজুরি বাড়েনি। প্রতি বছরের শুরুতে আশুলিয়ার বাড়ির মালিকরা ঘরভাড়া বৃদ্ধি করায় তাদের পক্ষে টিকে থাকা কঠিন হয়ে দাঁড়াচ্ছে। শ্রমিক অসন্তোষ নিরসনে সোমবারই বিজিএমইএর নেতারা ও শ্রমিক নেতাদের সঙ্গে বৈঠকে বসেন নৌ পরিবহনমন্ত্রী। বৈঠকে শ্রমিক অসন্তোষের মূল কারণ আশুলিয়ায় বাসাভাড়া বৃদ্ধির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের আশ্বাস দেওয়া হয়। বলা হয় আশুলিয়ায় যাতে বাসা ভাড়া বৃদ্ধি করা না হয়— সে ব্যাপারে স্থানীয় সংসদ সদস্য পদক্ষেপ নেবেন। বৈঠক শেষে শ্রমিক নেতারা কর্মবিরতি প্রত্যাহারের ঘোষণা দেন। গার্মেন্ট শিল্পের শান্তি-শৃঙ্খলা বজায় রাখার আশ্বাসও দেওয়া হয় তাদের পক্ষ থেকে। সোমবার মন্ত্রিসভার বৈঠকেও শ্রমিক অসন্তোষের বিষয়ে অনির্ধারিত আলোচনা হয়। কারা শ্রমিকদের আন্দোলনের উস্কানি দিচ্ছে তাদের চিহ্নিত করারও নির্দেশ দেন প্রধানমন্ত্রী। স্মর্তব্য, গার্মেন্ট শিল্পের শ্রমিকদের মজুরি বৃদ্ধি করা হয় তিন বছর আগে। বলা হয়েছিল পাঁচ বছর পর গার্মেন্ট শ্রমিকদের মজুরির বিষয়টি পুনর্বিবেচনা করা হবে। মজুরি বৃদ্ধি শ্রমিকদের জীবনমানের উন্নয়নে অবদান রাখলেও গত তিন বছরে আশুলিয়ায় ঘরভাড়া লাগামহীনভাবে বৃদ্ধি পাওয়ায় তারা এখন চোখে শর্ষে ফুল দেখছে। বলা যায় আশুলিয়ায় গার্মেন্ট শিল্প অসন্তোষের মূল কারণ হিসেবে ঘরভাড়া বৃদ্ধির বিষয়টিই ইন্ধন জুগিয়েছে। গার্মেন্ট শিল্পের শান্তিপূর্ণ পরিবেশ বজায় রাখার স্বার্থে শ্রমিকদের আবাসন সমস্যার দিকে সরকারের নজর দেওয়ার বিষয়টি যে জরুরি আশুলিয়ার ঘটনা তা প্রমাণ রেখেছে। আমরা আশা করব, শুধু আশুলিয়ায় নয় অন্য সব গার্মেন্ট এলাকার ঘরভাড়া নিয়ন্ত্রণেও পদক্ষেপ নেওয়া হবে।

সর্বশেষ খবর