বৃহস্পতিবার, ২৯ ডিসেম্বর, ২০১৬ ০০:০০ টা
ইতিহাস

তুঘলক বংশের পতনে সুলতান ফিরোজের দায়িত্ব

তুঘলক বংশের পতনে সুলতান ফিরোজের দায়িত্ব

ফিরোজ শাহের মৃত্যুর পর দিল্লি সাম্রাজ্যের বিস্তৃতি হ্রাস পেয়ে একটি ক্ষুদ্র রাজ্যে পরিণত হয় এবং এর গুরুত্ব কমে যায়। মুহম্মদ বিন তুঘলকের রাজত্বকালেই সাম্রাজ্যের বিভিন্ন অংশে বিদ্রোহ দেখা দেয় এবং এতে শান্তি ও শৃঙ্খলা বিঘ্নিত হয়। ফিরোজ শাহ হূতরাজ্য পুনরুদ্ধারের জন্য কোনো চেষ্টাই করেননি। তার নীতির ফলে বিকেন্দ্রীকরণের প্রবণতা দেখা দেয় এবং প্রদেশের পর প্রদেশ কেন্দ্র হতে বিচ্ছিন্ন হতে শুরু করে। শাসনকর্তারা বিদ্রোহ ঘোষণা করে কেন্দ্রের কর্তৃত্ব অস্বীকার করেন। চতুর্দশ শতাব্দীতে মুসলিম সাম্রাজ্যের মৌল নীতি ছিল শক্তি। কিন্তু কর্তৃপক্ষের নমনীয় মনোভাবের জন্য লোকের মন থেকে ভয়ভীতি চলে যায়। প্রজারা সুলতানকে ভালোবাসত, কিন্তু ভয় করত না। অথচ মধ্যযুগীয় রাজনীতিতে জনগণের মধ্যে ভীতি মিশ্রিত আনুগত্য সৃষ্টির প্রয়োজন ছিল।

সুলতানের কতিপয় কার্য, যেমন— করের বিলোপ সাধন, অমানুষিক শাস্তিদান, রহিতকরণ, কৃষির সংস্কার সাধন, দরিদ্রদের সাহায্যের ব্যবস্থা, জনহিতকর কার্যের প্রতি উৎসাহদান প্রভৃতি ব্যবস্থা হিতকর হলেও তার কোনো কোনো সংস্কার সাম্রাজ্যের পক্ষে অনিষ্টকর হয়ে দাঁড়িয়েছিল এবং পরিমাণে সাম্রাজ্যের পতনকে অবশ্যম্ভাবী করে তুলেছিল। সুলতান জায়গীর প্রথার পুনঃপ্রবর্তন করে অত্যন্ত বিপজ্জনক এক পরিস্থিতির সৃষ্টি করেছিলেন।  এতে অভিজাতবর্গ তাদের নিজস্ব এলাকায় ক্ষমতাশালী হয়ে ওঠেন এবং স্থানীয় শাসন ব্যবস্থার ওপর কেন্দ্রীয় শাসন বিভাগের ক্ষমতা শিথিল হয়ে পড়ে।

জাফর খান।

সর্বশেষ খবর