মঙ্গলবার, ২৮ মার্চ, ২০১৭ ০০:০০ টা

প্রধানমন্ত্রীর আহ্বান

জঙ্গিরা সুপথে ফিরে আসুক

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদের পথ থেকে বিপথগামীদের ফিরে আসার আহ্বান জানিয়েছেন। বলেছেন যারা সুপথে আসবে তাদের সব ধরনের সহযোগিতা ও পুনর্বাসন করা হবে। জঙ্গিবাদ ও সন্ত্রাসবাদের দাপট যখন জননিরাপত্তার জন্য হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে তখন গণদুশমনদের বিরুদ্ধে শক্ত পদক্ষেপের পাশাপাশি সুপথে আসার সুযোগ সৃষ্টির বিষয়টি সময়োপযোগী বলে মনে করা যেতে পারে। জঙ্গিবাদ ও সন্ত্রাসবাদের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট হওয়ার ক্ষেত্রে ব্যক্তি বা সমাজের বিশেষ অংশের হতাশা কাজ করে। অনেকে আর্থিক কারণেও জড়িয়ে পড়ে সন্ত্রাসবাদ ও জঙ্গিবাদের অন্ধকার জগতের সঙ্গে। ধর্মের অপব্যাখ্যা বা বিকৃত মতাদর্শও এ ভুল পথে যেতে ইন্ধন জোগায়। জঙ্গিবাদ ও সন্ত্রাসবাদের পথে পা দেওয়ার পর অনেকের মোহভঙ্গ হলেও নানা প্রতিবন্ধকতায় তা থেকে ফিরে আসা দুরূহ হয়ে দাঁড়ায়। তাদের জন্য প্রধানমন্ত্রীর আহ্বান আশাজাগানিয়া সুযোগ হয়ে দেখা দিতে পারে। জঙ্গিবাদ ও সন্ত্রাসবাদ একটি বিশ্বজনীন সমস্যা এবং যান্ত্রিক সভ্যতা এর উত্থানের জন্য অনেকাংশে দায়ী। যান্ত্রিক সভ্যতায় বাবা-মায়েরা সন্তানের জন্য পর্যাপ্ত সময় দেওয়ার সুযোগ পান না। সর্বক্ষেত্রে অসুস্থ প্রতিযোগিতাও শিশু-কিশোর-যুবকদের মধ্যে হতাশা সৃষ্টি করে। ব্যক্তি ও সামাজিক জীবনের পাপ-পঙ্কিলতায় জড়িত হয়েও কারও কারও মধ্যে পাপবোধের জন্ম নেয় এবং তা ধর্মান্ধতা ও জঙ্গিবাদের পথে পা বাড়াতে মদদ জোগায়। এসব সমস্যা থেকে মুক্ত থাকতে হলে প্রত্যেক বাবা-মাকে যেমন নিজেদের সন্তানদের জন্য বেশি সময় দিতে হবে তেমনি তারা কী করছে কাদের সঙ্গে মিশছে, সেদিকে নজরদারি বাড়াতে হবে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের ফাঁদে পা দিয়ে কেউ যাতে ধর্মীয় অপপ্রচারের শিকার না হয় সেদিকেও রাখতে হবে তীক্ষ নজর। শিশু-কিশোর ও  যুবকদের মধ্যে দেশপ্রেমের চেতনা জাগিয়ে তুলতেও বাবা-মা ও শিক্ষকদের নিতে হবে উদ্যোগ। জঙ্গিবাদ ও সন্ত্রাসবাদের মোকাবিলায় শুধু আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর অভিযান কিংবা আইনগত ব্যবস্থাই যে যথেষ্ট নয়, তা একটি প্রতিষ্ঠিত সত্য। যেসব কারণে সন্ত্রাসবাদ ও জঙ্গিবাদের উত্থান ঘটে সেই ফাঁক-ফোকর বন্ধ করার পাশাপাশি যারা এই ভুল পথে পা বাড়িয়েছে তাদের সুপথে ফিরিয়ে আনতে শুধু সরকার নয়, পরিবার ও সমাজকেও যত্নবান হতে হবে।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর