সোমবার, ৩ এপ্রিল, ২০১৭ ০০:০০ টা

প্রশ্নপত্র ফাঁস চক্র

জড়িতদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিন

প্রশ্নপত্র ফাঁস চক্রের আরও দুই সদস্যকে গ্রেফতার করা হয়েছে গত শনিবার এইচএসসি পরীক্ষার আগের দিনে। তাদের কাছ থেকে গোয়েন্দা পুলিশের সদস্যরা মোবাইল হ্যান্ডসেট ও সিম আটক করেছেন। আটক দুই ব্যক্তি বিভিন্ন নামে ফেসবুকের ফেইক আইডি, ফেসবুক ম্যাসেঞ্জার গ্রুপ ও হোয়াটস অ্যাপের মাধ্যমে কলেজ শিক্ষকদের কাছ থেকে ভুয়া প্রশ্নপত্র সংগ্রহ করে প্রতারণার মাধ্যমে টাকা হাতিয়ে নিচ্ছিল। গ্রেফতার হওয়া গোলাম সরোয়ার সাজিদ ম্যাসেঞ্জারে হ্যালো ব্রাদার্স গ্রুপের অ্যাডমিন হিসেবে বিভিন্ন মাধ্যমে শতভাগ প্রশ্ন কমন জানিয়ে স্ট্যাটাস দিত। এ ছাড়া তারা একেক পরীক্ষার জন্য একেক ম্যাসেঞ্জার গ্রুপ খুলে ভুয়া প্রশ্ন শেয়ার করত। গ্রেফতারকৃতদের অন্য সহযোগীদের নামও গোয়েন্দা পুলিশের হাতে এসেছে। তাদের ধরতে অভিযান চলছে। প্রশ্নপত্র ফাঁস এক ভয়ঙ্কর দুর্নীতি, দেশের শিক্ষাব্যবস্থাকে যা কলঙ্কিত করে চলছে। দেশের ভবিষ্যৎ প্রজন্ম শিক্ষার্থীদের জন্য প্রশ্ন ফাঁসের ঘটনা বিড়ম্বনা সৃষ্টি করছে। গত কয়েক বছর ধরে প্রশ্ন ফাঁসের অভিযোগ উঠলেও এর সঙ্গে জড়িতদের আইনের আওতায় আনার ক্ষেত্রে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের সাফল্য চোখে পড়ার মতো নয়। তবে দেরিতে হলেও শিক্ষা মন্ত্রণালয় প্রশ্নপত্র ফাঁসের ফাঁকফোকড় বন্ধে উদ্যোগী হয়েছে। প্রশ্নপত্র ফাঁসের সঙ্গে পরীক্ষা কেন্দ্রে কর্মরত শিক্ষক এবং বাইরের সুসংবদ্ধ জালিয়াত চক্রের সদস্যরা জড়িত বলে অভিযোগ রয়েছে। কোচিং সেন্টারের সংশ্লিষ্টতা নিয়েও রয়েছে অভিযোগ। প্রশ্নপত্র ফাঁসের বাণিজ্যে সামাজিক প্রচার মাধ্যমকে ব্যবহার করছে জালিয়াত চক্র। এদের কেউ কেউ ফেসবুকে এমন ঘোষণাও দেয় শতভাগ প্রশ্ন কমন আসার পরই তারা টাকা নেবেন। দুর্ভাগ্যজনক হলেও সত্যি, একের পর এক ফেসবুকে পোস্ট দিয়ে প্রশ্ন ফাঁসের অপপ্রচার চালানো হলেও সংশ্লিষ্ট ফেসবুক অ্যাকাউন্ট, গ্রুপ, পেজ বন্ধ করা সম্ভব হচ্ছে না। প্রশ্ন ফাঁসের সঙ্গে জড়িত চক্রের কোনো কোনো সদস্য গ্রেফতার হলেও মূল হোতারা থেকে যাচ্ছে ধরাছোঁয়ার বাইরে। প্রশ্নপত্র ফাঁসে যারাই জড়িত থাকুক না কেন, তাদের আইনের আওতায় এনে কঠোর সাজার ব্যবস্থা করতে হবে। বিশেষ করে স্কুল-কলেজের কোনো শিক্ষক জড়িত বলে প্রমাণ পাওয়া গেলে তাদের এ পেশায় নিষিদ্ধ ঘোষণার পাশাপাশি অন্যান্য শাস্তির ব্যবস্থাও জরুরি।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর