বুধবার, ১৯ এপ্রিল, ২০১৭ ০০:০০ টা

সমস্যার নাম গাজীপুর

সরকারকে সহায়তার হাত বাড়াতে হবে

গাজীপুরকে বলা হয় বৃহৎ ঢাকারই অংশ। ৩২৯ দশমিক ৫৩ বর্গকিলোমিটার আয়তনের এ মহানগরীর জনসংখ্যা প্রায় ২৫ লাখ। প্রতিদিন শিল্প কলকারখানার কাজের জন্য অন্তত ছয় লাখ মানুষ গাজীপুরে আসেন। যাদের প্রকারান্তরে গাজীপুরের অধিবাসী বলেও ভাবা যায়। রাজধানী লাগোয়া এ জনপদকে সিটি করপোরেশন ঘোষণা করা হয়েছিল নাগরিক সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত করার প্রত্যাশা নিয়ে। ২০১৩ সালের শুরুতে যাত্রা শুরু করা এ সিটি করপোরেশন গত সোয়া চার বছরে নাগরিকদের মধ্যে আশার আলো জ্বালাতে পারেনি বললেই চলে। গাজীপুর সিটি করপোরেশন হিসেবে আত্মপ্রকাশের ছয় মাসের মধ্যে নির্বাচিত মেয়র ও কাউন্সিলররা দায়িত্ব পেলেও তাদের যাত্রা মোটেও সুখকর হয়নি। গাজীপুরের মেয়র অধ্যাপক এম এ মান্নানকে এ পর্যন্ত দুবার বরখাস্তের শিকার হতে হয়েছে। মেনে নিতে হয়েছে দুবার কারাবন্দী হওয়ার বিড়ম্বনা। নির্বাচিত মেয়রের অবর্তমানে গাজীপুর সিটি করপোরেশন পরিচালিত হচ্ছে ভারপ্রাপ্ত মেয়রের নেতৃত্বে। স্বভাবতই দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম এই মহানগরী পরিচালনায় নাগরিক ইচ্ছার প্রতিফলন কতটা ঘটছে তা সংশয়ের ঊর্ধ্বে নয়। গাজীপুরে বর্জ্য ব্যবস্থাপনা বলতে কোনো কিছুর অস্তিত্ব আছে বলে মনে করাও কঠিন হয়ে দাঁড়ায়। যেখানে-সেখানে জমে আছে আবর্জনা। স্থায়ী ডাম্পিং পয়েন্ট না থাকায় দৈনন্দিন বর্জ্যের ভাগাড় হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে সড়ক-মহাসড়কের পার্শ্ববর্তী এলাকা। যেখানেই ফাঁকা জায়গা মিলছে সেখানেই ফেলা হচ্ছে আবর্জনা। মহানগরীতে গড়ে উঠেছে অপরিকল্পিত স্থাপনা, বাসাবাড়ি, শিল্প-কলকারখানা। অপরিকল্পিত নগরায়ণের কারণে পরিকল্পিতভাবে ড্রেন নির্মাণ করা হয়নি কোথাও। কোনো কোনো এলাকায় ড্রেনই নেই। নামে সিটি করপোরেশন হলেও এখনো পর্যন্ত এ নগরীর বেশির ভাগ রাস্তাঘাটের অবস্থা জরাজীর্ণ। নান্দনিক শহর গড়ে তোলা তো দূরের কথা, সিটি করপোরেশন হিসেবে এ মহানগরীর অবকাঠামোগত খাতের উন্নয়নে কোনো ছোঁয়াই লাগেনি। বৃহত্তর ঢাকার অংশ গাজীপুর সিটি করপোরেশনের পরিকল্পিত উন্নয়নের জন্য জনপ্রতিনিধিদের দায়িত্ব পালনের সুযোগ দিতে হবে।  এ ব্যাপারে বাগড়া দেওয়া নয়, সহায়তার হাত বাড়াতে হবে সরকারকেও। যা তাদের কর্তব্য বলে বিবেচিত হওয়া উচিত।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর