রবিবার, ২৩ এপ্রিল, ২০১৭ ০০:০০ টা

শবে মিরাজে বিশ্বাস ইমানের অংশ

মোহাম্মদ ওমর ফারুক

শবে মিরাজে বিশ্বাস ইমানের অংশ

শবে মিরাজের রাত নানা কারণে  তাত্পর্যপূর্ণ। দোজাহানের সরদার পয়গম্বর মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এই পবিত্র রাতে মহান আল্লাহর সাক্ষাৎ লাভ করেন। নবুয়তের দ্বাদশ হিজরির রজব মাসের এক শুভ রাতে কাবা শরিফের হাতিম থেকে বোরাকযোগে ঊর্ধ্বাকাশে গমন এবং আল্লাহর দিদার ও সান্নিধ্য লাভ করেন।  এই পুণ্য রাতে মুমিনদের জন্য পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ ফরজ হয়। রসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের অসংখ্য মুজেজার মধ্যে পবিত্র মিরাজ অন্যতম। মিরাজ শব্দের অর্থ ঊর্ধ্বগমন। রসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের মক্কা শরিফ হতে বায়তুল মোকাদ্দাস এবং বায়তুল মোকাদ্দাস হতে ঊর্ধ্বাকাশে গমন, সপ্ত আকাশ ভ্রমণ, নবীদের সঙ্গে সাক্ষাৎ, বেহেশত-দোজখ দর্শন এবং সিদরাতুল মোনতাহা পর্যন্ত গমন, সিদরাতুল মোনতাহা থেকে রফরফের মাধ্যমে আরশে আজিমে গমন, সেখানে থেকে লা-মাকান ভ্রমণ এবং আল্লাহর দিদার ও সান্নিধ্য লাভ এবং সেখান থেকে পুনরায় মক্কায় আগমন এই বিস্ময়কর সফর বা ভ্রমণকেই এক কথায় মিরাজ বলা হয়। রসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের মিরাজ ছিল বাস্তব, শারীরিক ও আধ্যাত্মিক ঘটনা। মিরাজের কথা পবিত্র কোরআনের সূরা বনী ইসরাইলের প্রথম আয়াত ও সূরা নজমের প্রথম থেকে ১৭নং আয়াতে উল্লেখ করা হয়েছে। রসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের হাদিসেও মিরাজ সম্পর্কে আলোকপাত করা হয়েছে। রসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মক্কার কাবা গৃহ থেকে বায়তুল মোকাদ্দাস, সেখান থেকে সপ্ত আকাশ পাড়ি দিয়ে সিদরাতুল মোনতাহা, তার ওপরে ৩৬ হাজার বছরের পথ পাড়ি দিয়ে আরশে গমন করেন এবং সেখান থেকে ৭০ হাজার নূরের পর্দা অতিক্রম করে একেবারে দিদারে এলাহিতে পৌঁছেন। সেখানে আল্লাহর সঙ্গে কথা বলে পুনরায় মক্কায় উপস্থিত হয়েছিলেন। এটি সম্ভব হয়েছিল আল্লাহর কুদরতে। অতীতেও আল্লাহ অনেক অসম্ভবকে সম্ভব করেছেন। যেমন : বিশ্বাসীদের আদিপিতা হজরত ইব্রাহিম (আ.)কে আল্লাহতায়ালা নমরুদের অগ্নিকাণ্ড থেকে রক্ষা করেন এবং অগ্নিকাণ্ডের মধ্যে বেহেশতি পরিবেশ সৃষ্টি করে তাঁকে জীবিত রাখেন। মাছের পেটের ভিতর জীবিত রেখেছিলেন হজরত ইউনুস (আ.)কে। ফেরাউনের হাত থেকে বাঁচাতে হজরত মুসা (আ.)-এর জন্য নীল দরিয়ায় রাস্তা করে দিয়েছেন। হজরত ঈসা (আ.)কে আল্লাহতায়ালা আকাশে নিয়ে গেছেন এবং তাঁকে আবার এ পৃথিবীতে পাঠাবেন।  মিরাজের মাধ্যমে আল্লাহতায়ালা রসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে দেখা দিয়ে তাঁকে বিশেষ মর্যাদা দিয়েছেন। এর মাধ্যমে তিনি উম্মতে মোহাম্মদীদেরও বিশেষ মর্যাদা দিয়েছেন।  সেহেতু মিরাজের ওপর বিশ্বাস ইমানের অংশ এবং এটি ইসলামের অকাট্য আকিদাসমূহের একটি।

লেখক : ইসলামী গবেষক।

সর্বশেষ খবর