শিরোনাম
সোমবার, ২৪ এপ্রিল, ২০১৭ ০০:০০ টা

বেহাল চিকিৎসা খাত

সেবা খাতে রাজনীতি কাম্য নয়

চিকিৎসা মানুষের একটি মৌলিক অধিকার। মহান মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম লক্ষ্য ছিল দেশবাসীর মৌলিক অধিকার নিশ্চিত করা। এ লক্ষ্য পূরণে স্বাধীনতার পর শত সীমাবদ্ধতার মধ্যেও প্রতিটি সরকার চিকিৎসা খাতকে অগ্রাধিকার দিয়েছে। সরকারি অর্থে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়, একের পর এক মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, জেলা ও উপজেলা পর্যায়ের হাসপাতাল ও ক্লিনিক। বেসরকারি খাতে মেডিকেল কলেজ, হাসপাতাল ও ক্লিনিক স্থাপনের সুযোগ দেওয়া হয়েছে। নাগরিকদের চিকিৎসাসেবা নিশ্চিত করার ক্ষেত্রে সরকারের সদিচ্ছার অভাব না থাকলেও সরকারি হাসপাতালগুলোতে সেবার চেয়ে রাজনীতি নিয়ে চিকিৎসকদের এক বড় অংশ ব্যস্ত থাকায় অস্বস্তিকর অবস্থা সৃষ্টি করছে। চিকিৎসকদের একাংশ সরকারি হাসপাতালের দায়িত্বে অবহেলা করে বেসরকারি হাসপাতাল বা ক্লিনিকের কাজে বেশি মনোযোগী এমন অভিযোগও প্রবল। কর্তৃপক্ষের সঙ্গে সরকার সমর্থক চিকিৎসকদের দ্বন্দ্ব প্রতিটি সরকারি হাসপাতালের পরিবেশ বিষিয়ে তুলছে। সরকার সমর্থক এ পরিচয়ে কেউ কেউ ধরাকে সরাজ্ঞান করে যা ইচ্ছে তাই করার মানসিকতায় ভুগছে। শিক্ষানবিস চিকিৎসক ও নার্সদের আচরণও আর যাই হোক চিকিৎসাবান্ধব নয়। হাসপাতালের সাধারণ কর্মচারীদের আচরণও বেপরোয়া। চিকিৎসা খাতে সরকারি ব্যয় প্রতিটি বাজেটে বাড়ানো হলেও সেবার মান বাড়ছে না চিকিৎসকরা রাজনীতি নিয়ে বেশি ব্যস্ত থাকায়। চিকিৎসার সঙ্গে রাজনীতির দূরতম সম্পর্ক থাকার কথা নয়। কিন্তু সেবার বদলে রাজনীতির বদৌলতে পদোন্নতি ও ভালো জায়গায় পোস্টিংয়ের সুযোগ থাকায় হাসপাতাল থেকে রাজনীতির ব্যবচ্ছেদ ঘটানো অসম্ভব হয়ে পড়ছে। আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকলে স্বাচিপ এবং বিএনপি ক্ষমতায় থাকলে ড্যাব নামের চিকিৎসক সংগঠন নোংরা রাজনীতিকে অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করে নিজেদের ভাগ্য গড়ার অপতত্পরতায় লিপ্ত হয়। সরকারি হাসপাতালের চিকিৎসা সেবায় ন্যূনতম মান ফিরিয়ে আনতে হলে চিকিৎসকদের স্বাচিপ ও ড্যাবের আবর্ত থেকে বের করে আনার উদ্যোগ নিতে হবে। রাজনীতি বা অন্য কিছুর চেয়ে সেবাকে দিতে হবে প্রাধান্য। পদোন্নতি ও পোস্টিংয়ের ক্ষেত্রে চিকিৎসকদের রাজনৈতিক পরিচয়ের বদলে যোগ্যতা এবং সেবার মনোভাবকে প্রাধান্য দিতে হবে।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর