বৃহস্পতিবার, ২৭ এপ্রিল, ২০১৭ ০০:০০ টা

মানুষের গড় আয়ু বৃদ্ধি

স্বাধীনতার সুফল এই অর্জন

দেশের মানুষের গড় আয়ু এখন ৭১ দশমিক ৬ বছর। গত বছরের চেয়ে গড় আয়ু বেড়েছে শূন্য দশমিক ৭ বছর। বর্তমানে বিশ্ব পরিসরে মানুষের গড় আয়ু ৭১ বছর ৪ মাস। সে তুলনায় বাংলাদেশের মানুষের গড় আয়ু ২ মাস বেশি; যা দেশের মানুষের জন্য এক ইতিবাচক ঘটনা। বিশ্বব্যাংকের পরিসংখ্যান অনুযায়ী স্বাধীনতার সময় বাংলাদেশের মানুষের গড় আয়ু ছিল ৪৭ বছর। গত ৪৫ বছরে গড় আয়ু বৃদ্ধি পেয়েছে ২৪ বছর। এই সময় সারা বিশ্বে মানুষের গড় আয়ু বেড়েছে ১২ বছর। শিশুমৃত্যুর হার হ্রাস, বয়স্ক লোকদের দেরিতে মৃত্যু বাংলাদেশে গড় আয়ু বৃদ্ধিতে অবদান রেখেছে। স্বাধীনতার আগের ২০০ বছরে ব্রিটিশ ও পাকিস্তান আমলে বাংলাদেশের মানুষের মাথাপিছু আয় বাড়েনি। স্বাধীনতার পর এ ক্ষেত্রে ইতিবাচক উন্নতি ঘটে। স্বাধীনতার পর সীমিত সামর্থ্য সত্ত্বেও মানুষের মৌলিক অধিকার হিসেবে স্বাস্থ্য ও চিকিৎসা খাতে তাৎপর্যপূর্ণ অগ্রগতি অর্জনের চেষ্টা চলে। কমিউনিটি ক্লিনিক, ইউনিয়নভিত্তিক স্বাস্থ্য উপকেন্দ্র, উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, হাসপাতাল, বিশেষায়িত হাসপাতাল এবং একের পর এক মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল স্থাপন স্বাস্থ্য পরিচর্যায় যে বৈপ্লবিক পরিবর্তন এনেছে তাতে বিনা চিকিৎসায় মৃত্যুর হার কমে যায়। স্বাস্থ্য খাতের উন্নতির ক্ষেত্রে নারী স্বাস্থ্যের দিকে বিশেষ নজর দেওয়ায় বাংলাদেশে প্রসূতি মৃত্যুর হার উল্লেখযোগ্যভাবে কমেছে। যে কারণে দেশের নারীদের গড় আয়ু এখন পুরুষের চেয়ে বেশি। দেশের পুরুষের গড় আয়ু যেখানে ৭০ বছর ৩ মাস ১৮ দিন, সেখানে নারীর গড় আয়ু ৭২ বছর ১০ মাস ২৪ দিনে উন্নীত হয়েছে। স্বাধীনতার আগে যে জাতিকে প্রতিনিয়ত অনাহার-অর্ধাহার, দুর্ভিক্ষ ও মঙ্গার মোকাবিলা করতে হয়েছে, স্বাধীনতার পরও অন্তত দুই দশক অব্যাহত ছিল সেই ধকল। নব্বইয়ের পর এ ক্ষেত্রে ইতিবাচক পরিবর্তন অনুভূত হয়েছে। দেশের মানুষের গড় আয়ু ৭১ বছরে উন্নীত হওয়া নিঃসন্দেহে স্বাধীনতার সুফল। এটি একটি বিরাট অর্জন হলেও এতে আত্মপ্রসাদের সুযোগ নেই। উন্নত দেশগুলোর চেয়ে বাংলাদেশের গড় আয়ু এখনো বেশ কিছুটা পিছিয়ে। জাতীয় অগ্রগতির স্বার্থেই এ ক্ষেত্রে আরও জোর কদমে এগোতে হবে।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর