সোমবার, ৮ মে, ২০১৭ ০০:০০ টা

রসুল (সা.)-এর প্রিয় মাস শাবান

মোহাম্মদ ওমর ফারুক

রসুল (সা.)-এর প্রিয় মাস শাবান

ইসলামী শরিয়তে শাবান মাসকে বিশেষ মর্যাদাসম্পন্ন বলে ভাবা হয়। রসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, রজব আল্লাহর মাস, শাবান আমার মাস এবং রমজান আমার উম্মতের মাস। শাবান মাস গুনাহ থেকে রক্ষা করে, রমজান মাস মানুষকে পবিত্র করে। শাবান মাসকে বলা হয় রমজানের আগমন ঘোষণাকারী মাস। শাবান মাসের বিশেষ মর্যাদার অধিকারী হওয়ার কারণ এই মাসের ১৫ তারিখের রাত তাত্পর্যের দাবিদার। এই রাতে রিজিক ও সম্পদ বণ্টন করা হয়। হায়াত বাড়ানো কিংবা কমিয়ে দেওয়া হয়। মধ্য শাবানের রাতে বেশি বেশি করে নফল ইবাদত করা উচিত। নিজ গৃহে নফল ইবাদত করলে বেশি সওয়াব পাওয়া যায়। রসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নিজ গৃহে নফল ইবাদত করেছেন। ইবনে মাজাহ ও বায়হাকি শরিফের হাদিসে বর্ণিত আছে, ‘আল্লাহপাক এ রাতে প্রথম আসমানে চলে আসেন এবং মানুষকে ডেকে ডেকে বলতে থাকেন, তোমাদের মধ্যে এমন কোনো পাপী আছে কি? আমার কাছে ক্ষমা চাইবে, আমি তাকে ক্ষমা করে দিব। তোমাদের মধ্যে কেউ আছে কি আমার কাছে রিজিক চাইবে, আমি তাকে রিজিক দান করব। তোমাদের মধ্যে কেউ অসুস্থ আছে কি আমার কাছে রোগ থেকে মুক্তি চাইবে, আমি তাকে রোগ থেকে মুক্তি দিব। এভাবে আল্লাহতায়ালা সুবেহ সাদিক পর্যন্ত বান্দাকে ডাকতে থাকেন। তখন যে কেউ যে কোনো প্রার্থনা করবে তাই কবুল করা হবে।

হজরত আবদুল কাদের জিলানী (রহ.) তার গুনিয়াতুত তালেবানি কিতাবে বলেন, আয়েশা সিদ্দিকা (রা,) রসুল (সা.)-কে বলতে শুনেছেন যে, শবেবরাতসহ চারটি রজনীতে আল্লাহতায়ালা পৃথিবীর মানুষের জন্য তার রহমতের দরজাগুলো খুলে দেন। ১৪ শাবান সূর্যাস্ত থেকে ১৫ শাবান ফজর পর্যন্ত তার বান্দাদের জন্য রহমতের দরজা খোলা থাকে। এ রাতের ইবাদতের গুরুত্ব ও ফজিলত অপরিসীম। জিব্রাইল (আ.) একবার রসুল (সা.)-এর কাছে এসে বললেন, ইয়া রসুল (সা.)! আপনি উঠুন, নামাজ পড়ুন এবং আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করুন। কারণ এটি ১৫ শাবানের রাত। এ রাতে আল্লাহতায়ালা তার বান্দাদের জন্য একশটি রহমতের দরজা খুলে দেন। আপনি আপনার উম্মতের জন্য দোয়া করুন।

হাদিস শরিফে শাবানের এক তারিখ থেকে ২৭ তারিখ পর্যন্ত রোজা রাখার বিশেষ ফজিলতের কথা রয়েছে। এ ছাড়াও ‘আইয়ামে বিজ’ তথা প্রতি মাসের ১৩, ১৪ ও ১৫ তারিখে রোজা রাখার ব্যাপারে হাদিস শরিফে উৎসাহিত করা হয়েছে।  হজরত আলী (রা.) থেকে বর্ণিত, রসুলুল্লাহ (সা.) ইরশাদ করেন, ‘১৫ শাবানের রাত (১৪ তারিখ দিবাগত রাত) যখন আসে তখন তোমরা তা ইবাদত-বন্দেগিতে কাটাও এবং পরদিন রোজা রাখ।’ (সুনানে ইবনে মাজাহ হাদিস : ১৩৮৪)

     লেখক : ইসলামী গবেষক।

সর্বশেষ খবর