বৃহস্পতিবার, ৮ জুন, ২০১৭ ০০:০০ টা

ব্যাংক আমানতে আবগারি শুল্ক

আত্মঘাতী প্রস্তাব প্রত্যাহার হোক

ব্যাংকের আমানতের ওপর আবগারি শুল্ক বৃদ্ধির প্রস্তাব সরকারকে ঘোরতর সমালোচনার মুখে ফেলেছে। সংসদ সদস্যরাও এই তুঘলকি প্রস্তাবের বিরুদ্ধে কথা বলছেন। সংসদে খাতাপত্রে ক্ষুদ্র একটি বিরোধী দল থাকলেও এটি আসলেই বিরোধী দল কিনা সে সম্পর্কে তাদের নিজেদের মধ্যেও সংশয় রয়েছে। বিরোধী দল থেকে দুজন মন্ত্রী থাকায় তারা যে সরকারেরই অংশ এটি স্বতঃসিদ্ধভাবে প্রমাণিত। এহেন হিজ মাস্টার্স ভয়েস মার্কা বিরোধী দলের পক্ষ থেকেও ব্যাংক আমানতের ওপর আবগারি ট্যাক্স আরোপের প্রস্তাবকে অগ্রহণযোগ্য বলে অভিহিত করা হয়েছে। সরকারি দলের সদস্যদের কেউ তাদের বাজেট আলোচনায় ব্যাংক আমানতের ওপর আবগারি শুল্ক আরোপের প্রস্তাবের পক্ষে বক্তব্য রেখে সাধারণ মানুষের ক্ষোভের লক্ষ্যস্থলে পরিণত হতে চাননি। সংসদের সরকার ও বিরোধী দলের সদস্যরা সমস্বরে বলেছেন, আগে ব্যাংকে গচ্ছিত টাকার সুদের ওপর শুল্ক কাটা হতো, এখন আসল টাকায়ও হাত দেওয়া হয়েছে। এমনটি হলে মানুষ ব্যাংকে টাকা রাখা থেকে বিরত থাকবে। টাকা পাচার হওয়ার সুযোগ সৃষ্টি হবে। এ ধরনের ঘটনা সরকারের ভোট ব্যাংকেও আঘাত হানবে। তাদের মতে, ব্যাংকে যাদের আমানত রয়েছে তাদের অনেকেই প্রান্তিক মানুষ। এ অর্থে হাত দিয়ে সরকার তাদের ভোট ব্যাংককে ক্ষতিগ্রস্ত করছে কিনা সে বিষয়েও ভাবতে হবে। সংসদ সদস্যরা রাজস্ব বাড়ানোর স্পর্শকাতর পথে না গিয়ে অনাদায়ী ট্যাক্স আদায়ে ট্যাক্সের আপিল ট্রাইব্যুনালকে আরও সক্রিয় করার পরামর্শ দিয়েছেন। সংসদের বাজেট আলোচনায় ব্যাংকের আমানতের ওপর আবগারি শুল্ক বাড়ানোর বিরুদ্ধে সংসদ সদস্যদের মতামতে প্রকারান্তরে দেশবাসীর মনের কথাই ফুটে উঠেছে। ১৫ শতাংশ ভ্যাট এবং ব্যাংক আমানতের ওপর আবগারি শুল্ক আরোপের প্রস্তাব বাজেট প্রণয়নে গণবিচ্ছিন্নদের আসর হওয়ার বিষয়টি স্পষ্ট করেছে। রাজস্ব আদায়ের সোজা পথ থাকা সত্ত্বেও বাজেট-প্রণেতা আঁতেলরা দেশবাসীকে খেপানোর বাঁকা পথে গেলেন কেন, তা একটি প্রশ্ন। আমরা আশা করব নিছক জনগণকে রেহাই দিতে নয়, নিজেদের পায়ের তলার মাটি ধরে রাখার স্বার্থেই এ বিষয়ে সঠিক সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। নিজের ভালো পাগলেও বোঝে, এ ক্ষেত্রে সরকার অক্ষমতার পরিচয় দেবে না— এমনটিই প্রত্যাশিত।

সর্বশেষ খবর