রমজান মাসের শেষ ১০ দিন জুমার নামাজ চালু আছে এমন মসজিদে এতেকাফ করা বা অবস্থান করা সুন্নাতে মুয়াক্কাদা কিফায়া।  অর্থাৎ এমন সুন্নাত যা মসজিদের আওতাধীন এলাকাবাসীর পক্ষ থেকে যে কেউ আদায় করে দিলে সবার পক্ষ থেকে আদায় হয়ে যায়। আর কেউ আদায় না করলে সবাই গুনাহগার হয়। প্রিয় রসুল (সা.) সব সময় রমজান মাসের শেষ ১০ দিনে এতেকাফ করতেন। নবীজীর প্রিয়তমা জীবন সঙ্গিনী হজরত আয়েশা সিদ্দিকা (রা.) বলেন, রসুল (রা.) সব সময় রমজান মাসের শেষ ১০ দিনে এতেকাফ করতেন। তার ওফাতের পর তার স্ত্রীগণও এতেকাফ করেছেন। এ হাদিস দ্বারা প্রমাণিত হয়, পুরুষরা যেমন মসজিদে এতেকাফ করে থাকেন তেমনি মহিলারাও নিজ ঘরের যে কোনো একটি রুমে এতেকাফ করতে পারবেন। এতে করে এতেকাফের সওয়াব ও পুরস্কার পুরুষদের মতো মহিলারাও অর্জন করতে পারেন। এতেকাফের ফজিলত ও পুরস্কার সম্পর্কে হাদিসে এসেছে, প্রিয় নবী (রা.) বলেছেন, এতেকাফকারী সব ধরনের গুনাহ থেকে পবিত্র থাকেন। তার আমলনামায় সেসব নেকি লেখা হয় যা অন্যরা এতেকাফ না করার কারণে বাইরে গিয়ে করেছেন। অর্থাৎ এতেকাফ করার কারণে তিনি বাইরে গিয়ে যেসব নেক আমল করতে পারেননি আল্লাহপাক তাকে এতেকাফরত অবস্থায় সেসব নেক আমলের সওয়াব দিয়ে দেন। আর এতেকাফকারীর সবচেয়ে বড় সৌভাগ্য হচ্ছে শবে কদর। পবিত্র কোরআনে সূরা কদর নামে একটি পৃথক সূরা নাজিল হয়েছে শবেকদরের ফজিলত ও গুরুত্ব উল্লেখ করে। এতেকাফকারী যেহেতু রমজানের শেষ ১০ দিন আল্লাহর ঘরে অবস্থান করে তাই তার শবেকদরের সৌভাগ্য নসিব হয়। হজরত সালমান ফারসি (রা.) বলেন, একবার রসুল (সা.) আমাদের শাবান মাসের শেষ তারিখে ভাষণ দান করলেন এবং বললেন, হে মানবমণ্ডলী! তোমাদের প্রতি ছায়া বিস্তার করেছে এক মহান মাস, মোবারক মাস। এটি এমন মাস যাতে একটি রাত রয়েছে যা হাজার মাস অপেক্ষা শ্রেষ্ঠ। আল্লাহতায়ালা এর রোজাগুলোকে করেছেন (তোমাদের ওপর) ফরজ আর রাতে নামাজ পড়াকে তোমাদের জন্য করেছেন নফল।

এই মাসে যে ব্যক্তি আল্লাহর নৈকট্য লাভের উদ্দেশ্যে একটি নফল আমল করল সে ওই ব্যক্তির সমান হলো, যে অন্য মাসে একটি ফরজ আদায় করল। আর যে ব্যক্তি এই মাসে একটি ফরজ আদায় করল সে ওই ব্যক্তির সমান হলো, যে অন্য মাসে ৭০টি ফরজ আদায় করল।  মহান আল্লাহ যেন আমাদের শবেকদর নসিব করেন। আমিন।